কোন রাশির মেয়েরা কেমন হয়! সৃষ্টির শুরু থেকেই নারীর প্রতি পুরুষের কোন এক অজানা কারণে আকর্ষণ রয়েছে। এই আকর্ষণ থেকেই পুরুষ চায় সবসময় নারীর সাথে ঘনিষ্ঠ হতে। কিন্তু যদি দু’জনের স্বভাব-চরিত্র না মেলে তখনই বাঁধে বিপত্তি। তাই আগেই জেনে নেয়া উচিত কোন রাশির জাতিকা কিংবা মেয়ে
মেষ রাশির নারী (২১ মার্চ – ২০ এপ্রিল) :
জীবনের সব ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিতে পছন্দ করে মেষ রাশির নারী। সহজাত নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতা থাকে তাদের। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার প্রবণতা দেখা যায় তাদের মাঝে। প্রতিটা দিন কর্মচঞ্চল করে রাখার ব্যাপারে তাদের জুড়ি নেই। কখনও কখনও নিজের ক্ষমতার বেশি কাজের ভার নিয়ে ফেলে তারা। অনেক সময়ে একটা কাজ শেষ না করেই আরেকটা শুরু করে দেয়। জীবনের ব্যাপারে আশাবাদী হয়ে থাকেন মেষ রাশির জাতিকা। একটা ভালো কাজ করার সুযোগ পেলে তারা সেটা করে ফেলবে, এতে তার নিজের কতখানি লাভ হলো সেটা নিয়ে চিন্তা করবে না। নিজের মতামত জানানোর ব্যাপারে একেবারেই ঠোঁট কাটা তারা। কখনও কখনও মেষ নারী এতই সফল হয়ে থাকে যে অন্যরাও তার মতো হতে চায় (যদিও পেরে ওঠে না)।
প্রেমের ক্ষেত্রে মেষ নারী কেমন হয়? মেষ রাশির প্রতীক চালিত হয় আগুনের উপাদানে। এ থেকেই বোঝা যায়, মেষ নারীর প্রেমও হয় তেমনই উষ্ণ। প্রেমের ক্ষেত্রে মেষ নারী নিজেই উদ্যগ নিয়ে থাকতে পারে কিন্তু তার সঙ্গীকেও হতে হয় শক্তিশালী ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সঙ্গী পুরুষের ব্যক্তিত্ব দুর্বল হলে খুব দ্রুত আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন মেষ নারী। মেষ নারীর সাথে তর্ক হলে তেমন বিচলিত হবেন না। এই তর্কের মাধ্যমেও সম্পর্ক পোক্ত হয়ে উঠতে পারে।
বৃষ (২১ এপ্রিল – ২১ মে) :
প্রথম দেখায় বৃষ নারীকে মনে হবে খুব শান্তশিষ্ট, মিষ্টি প্রকৃতির। সাধারণত তিনি আপনার সাথে এমন মিষ্টি আচরণই করবেন, কিন্তু রেগে গেলে তবেই তার আসল রূপ দেখতে পাবেন। বৃষ নারীর চরিত্রের “সুগার কোটিং”-এর নিচে রয়েছে আগুনে মেজাজ। এর আওতায় না পড়ার চেষ্টা করুন। তবে ভালোবাসার ছোট্ট ছোট্ট উপহার পেতে পছন্দ করেন বৃষ নারী। তাকে উৎসর্গ করতে পারেন নিজের তৈরি একটি কবিতা অথবা অন্যরকম কিছু ফুল, সাথে অবশ্যই আন্তরিক অনুভুতি। রাগ গলে পানি হয়ে যাবে। বৃষ নারীর অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হলো, তারা হয়ে থাকে খুবই একগুঁয়ে। কোনো কিছু পাওয়ার জন্য কোমর বেঁধে লাগেন তারা। মানসিক শক্তির দিক দিয়েও তারা যথেষ্টই কঠোর। তবে যতই কঠোর হোক না কেন, তারা যথেষ্ট মমতাময়ী হয়ে থাকেন।
বৃষ নারী হয়ে থাকেন বিচক্ষণ এবং ধৈর্যশীল। এ কারণে তার সফলতা আসে প্রচুর। বৃষের উপাদান হলো মৃত্তিকা, আর তাই তার মাঝে মাতৃসুলভ বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে শান্তিতে থাকতেই পছন্দ করেন বৃষ নারী। জীবনে নিরাপত্তার অনুভুতি পেতেও তিনি পছন্দ করেন। সাধারণত বৃষ নারী একই ভুল বার বার করেন না। ভালোবাসার ক্ষেত্রে ধীরস্থির এবং মিষ্টি ভাব নিয়ে অগ্রসর হোন বৃষ নারীর দিকে। একটু সময় নিয়ে সম্পর্ক গড়ে তুলতে তারা পছন্দ করেন। প্রেমের ক্ষেত্রে তাকে তাড়া না দেওয়াই ভালো। কিছু সীমানা মেনে চলেন তারা। এবং সঙ্গীরও উচিত এই সীমানাকে শ্রদ্ধা করে চলা।
মিথুন (২২ মে – ২১ জুন) :
একজন মিথুন নারীকে বুঝে ওঠা বেশ কঠিন। আকাশের মেঘ ধরে রাখা যেমন কঠিন, মিথুনের মন বোঝাও তেমনি কঠিন। কারণ একজন নয়, তার মাঝে দেখতে পাবেন বহু নারীর ছায়া। কেউ কেউ মিথুন নারীর চরিত্রে বিরক্ত হতে পারেন, কিন্তু তারা নিজেদের ব্যক্তিত্বে স্বতন্ত্র। ক্ষণে ক্ষণে তার মাঝে পরিবর্তন আসতে পারে। পৃথিবীর সব কিছু নিয়ে তার মাঝে কৌতূহলের শেষ নেই। অনেক ক্ষেত্রেই সৃজনশীলতা দেখা যায় তার মাঝে।
আশাবাদী মনোভাব থাকার কারণে যে কোনো পরিস্থিতিতে তিনি মানিয়ে নিতে পারেন। মিথুন রাশির প্রতীকে রয়েছে একটি নয়, বরং দুইটি সত্ত্বা। মিথুন রাশির জাতিকার ব্যক্তিত্বে একটি নয়, বরং দুই বা তারও বেশি স্বাতন্ত্র্য দেখা যায়। এর ফলে তার ব্যক্তিত্ব অস্থিতিশীল মনে হতে পারে। প্রেমের ক্ষেত্রে একটু খুঁতখুঁতে হতে পারেন মিথুন নারী। তবে তিনি নিজের পছন্দের সেই ভাগ্যবান ব্যক্তিকে খুঁজে পেলে তখন আর কোনও রকমের সংকোচ করেন না নিজের অনুভূতি প্রকাশে। আর এই সম্পর্ক সাধারণত হয়ে থাকে দীর্ঘস্থায়ী।
কর্কট (২২ জুন – ২২ জুলাই) :
কর্কট নারীর চরিত্রে চাঁদের প্রভাব প্রবল। চাঁদের কলা বাড়া-কমার মতই ওঠানামা করে কর্কট নারীর মেজাজ। সাধারণত তিনি যথেষ্ট সহজ সরল এবং শান্তিপ্রিয়। তবে তার অনুভুতি হতে পারে অনেক অনেক জটিল। সবগুলো রাশির মাঝে কর্কট নারীর বৈশিষ্ট্য নির্ণয় করা সবচাইতে কঠিন। এরা হয়ে থাকে খুব খুব স্পর্শকাতর। বিশেষ করে কর্কট নারীকে সমালোচনা করার ব্যাপারে খুব সাবধান থাকুন।
এই সমালোচনা তারা সারা জীবন মনে রাখবে। বুদ্ধির পাশাপাশি কর্কট নারীর অনুমানশক্তিও হয় খুব প্রখর। কোনও ব্যক্তির ব্যাপারে খুব কম জেনেও সে আসলে ভালো না খারাপ তা ধারনা করে নিতে পারে কর্কট নারী এবং এই ধারনা সাধারণত ঠিক হয়ে থাকে। অন্যদের ব্যাপারে সহানুভূতি দেখাতেও কর্কট নারী সিদ্ধহস্ত। প্রেমের ব্যাপারে কর্কট নারীকে একটু সময় দিতে হবে। হুট করে তারা প্রেমে জড়িয়ে পড়তে নারাজ। সঙ্গীকে তারা বিশ্বাস করতেও সময় নেন। এছাড়া খুব সহজেই কষ্ট পান তারা। এসব কারণে সম্পর্কের প্রাথমিক পর্যায় একটু ঝড়ো হলেও পরবর্তী পর্যায়ে সম্পর্ক অনেক মিষ্টি হয়ে ওঠে।
সিংহ (২৩ জুলাই – ২৩ আগস্ট) :
এই রাশির নারীর মাঝে সিংহের বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়। তারা আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে থাকেন সাধারণত। তাকে না ঘাঁটানোই ভালো। নাখোশ হয়ে গেলে উপহার এবং মিষ্টি মিষ্টি কথা দিয়ে তাকে ঠাণ্ডা করে নিতে হবে আগে। তারা যেমন বুদ্ধিমতী হয়ে থাকেন, তেমনি শক্তিশালী চরিত্র এবং সৃজনশীলতা দেখা যায় তাদের মাঝে। প্রেমের ক্ষেত্রে এই রাশির নারী কোনও রকমের ছাড় দিতে রাজী হন না। তাকে খুশি করতে পারলে আপনার সম্পর্ক হয়ে উঠতে পারে প্রেমের গল্পের মতই রোমান্টিক এবং একই সাথে ড্রামাটিক। সঙ্গীর জীবনে তিনি হয়ে থাকতে চান সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং একই সাথে সঙ্গীকে তার প্রাপ্য গুরুত্ব দিতেও তিনি পিছ পা হন না।