পারলেন না মাশরাফি। হেরে গেলেন হাতুরিসিংহেও।
অনেক আশার, অনেক পরীক্ষণ-নিরক্ষণের ম্যাচটায় যে নিতান্ত আত্মসমর্পণই করলো বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের ছুঁড়ে দেয়া ১৮৮ রানের বিশাল টার্গেটটাকে পাহাড়সম করে নিয়ে ম্যাচ হারলো ৩১ রানে।
নতুন করে আবারো ভাবতে হবে কোচকে। ঢেলে সাজাতে হবে সব পরিকল্পনাই। সবকিছুই যে একদম ব্যর্থই ছিল বুধবার ৩য় টি-টোয়েন্টিতে।
শেখ নাসের স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে ব্যাট নিতে ভুল করেননি জিম্বাবুয়ের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। আর ইনিংসের শুরু থেকেই দুই ওপেনার চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন বাংলাদেশের দুই অভিষিক্ত বোলার রনি ও শহিদের ওপর। আর প্রথম ৮ ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৮০ রান তুলে বড় স্কোর গড়ার ইঙ্গিত দেন ব্যাটসম্যানরা। মাঝের কিছু ওভারে সাকিব ও মোসাদ্দেকের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রানের গতিটা কিছুটা শ্লথ হয় জিম্বাবুয়ের। কিন্তু শেষদিকে ওয়ালার, উইলিয়ামস আর মুরদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ১৮৭ রানের বড় স্কোর দাঁড় করায় জিম্বাবুয়ে।
জিম্ববাবুয়ের পক্ষে ৪৯ রান করেন ওয়ালার, এছাড়া সিবান্দা ৪৪ ও উইলিয়ামস ৩২ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন সাকিব। এছাড়া অভিষিক্ত রনি ২টি ও শহীদ ১টি করে উইকেট নেন।
১৮৮ রানের বিশাল টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ইমরুল কায়েসের উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু সৌম্যের সাথে জুটি বেঁধে দলকে প্রায় একা হাতেই টেনে নেওয়া শুরু করেন সাব্বির। জিম্বাবুয়ে বোলারদের তুলোধুনা করে বাংলাদেশের রানের গতিকে বাড়াতে থাকেন একাই। দলীয় ৬৯ রানে সৌম্য আউট হলেও থামেননি সাব্বির। মোসাদ্দেককে সাথে নিয়ে স্কোরকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন সাব্বির। কিন্তু ব্যক্তিগত অর্ধশতক তোলার পর সিকান্দার রাজার বলে ক্যাচ দিয়ে আউট হন সাব্বির।
আর এর পরেই শুরু হয় ব্যাটিং ধ্বস। নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা সাকিব, মাহমুদুল্লাহ দুজনেই ব্যর্থ হন আজকেও, অভিষিক্ত মোসাদ্দেকও ১৫ রান নিয়ে আউট হলে ম্যাচ থেকে বাংলাদেশ ছিটকে পড়ে ১৬ তম ওভারেই।
শেষদিকে নুরুল হাসান সোহান ও মুক্তার আলি নিজেদের ব্যাটিং ঝলক দেখালেও ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিলো। ফলে নুরুলের ৩০ ও মুক্তার আলীর ১৯ রানেও লাভ হয়নি বাংলাদেশের। নির্ধারিত ওভার শেষে ইনিংস থেমে যায় ১৫৬ রানেই।
ফলে পরাজয় বরণ করতে হয় ৩১ রানের বড় ব্যবধানে। দলের পক্ষে সাব্বির সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন। জিম্ববাউয়ের পক্ষে ক্রেমার ৩টি ও রাজা ২টি উইকেট নেন।
এই পরাজয়ের ফলে আসন্ন এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে গড়া কোচের পরিকল্পনা কিছুটা হলেও বাধাগ্রস্থ হলো। নতুন করে হয়তবা ভুলগুলো নিয়ে ভাবতে বসবেন কোচ।
আর যত দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে, বাংলাদেশ ক্রিকেট ও ক্রিকেট সমর্থকদের জন্য ততই দ্রুত মঙ্গল হবে বলে আশা টাইগার ভক্ত-সমর্থকদের।
স্কোর :
জিম্বাবুয়ে : ২০ ওভারে ১৮৭/৬ (ওয়ালার ৪৯, সিবান্দা ৪৪, উইলিয়ামস ৩২; সাকিব ৩/৩২)
বাংলাদেশ : ২০ ওভারে ১৫৬/৬ (সাব্বির ৫০, সোহান ৩০*; ক্রেমার ৩/১৮)
ফলাফল : জিম্বাবুয়ে ৩১ রানে জয়ী
ম্যান অফ দি ম্যাচ : ম্যালকম ওয়ালার
সিরিজ : ৪ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে