দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির আজ বৈঠক ডেকেছে বিএনপি। নতুন বছরে প্রথম বৈঠক হবে এটি। দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৮টায় এ বৈঠক হওয়ার কথা। বিএনপির কাউন্সিল, পুনর্গঠন, পৌরসভা নির্বাচন পর্যালোচনা, জিয়াউর রহমানের মাজার সরানোর ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সাম্প্রতিক বক্তব্যসহ সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে এ বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। এ ছাড়া আগামী মার্চ মাসে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি জোটবদ্ধ নাকি আলাদাভাবে অংশ নেবে সে নিয়েও সিদ্ধান্ত হবে। বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমার পরও বাংলাদেশে না কমায় তা নিয়ে কর্মসূচির সিদ্ধান্তও আসতে পারে আজকে স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে।
বিএনপির গুলশান কার্যালয় সূত্র জানায়, আগামী মার্চে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বিএনপি। বিএনপির তৃণমূলের বহু নেতাকর্মী এ প্রক্রিয়ায় জড়িত হওয়ার কারণে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রাথমিক প্রার্থী মনোনয়নের পর চূড়ান্তভাবে প্রার্থী তালিকা নির্ধারণ করবে বিএনপি। এ নিয়ে আজকের বৈঠকে আলোচনা হবে।
জানা গেছে, পৌরসভা নির্বাচনের মতোই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির সাংগঠনিক মনিটরিং টিম থাকবে। তারা তৃণমূলের সুপারিশের ভিত্তিতে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করবেন।
সূত্রমতে, বিএনপি তাদের কাউন্সিলের তারিখও চূড়ান্ত করতে চায়। আজ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের বৈঠকে কাউন্সিলের তারিখ চূড়ান্ত করা হতে পারে।
বিএনপির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য কমলেও বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়ছে না। এ নিয়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিশদলীয় জোট কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সারা দেশে মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি আসতে পারে। এ ছাড়া বিশদলীয় জোটের সর্বশেষ পরিস্থিতি এবং সরকারের বিভিন্ন অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেসব রাজনৈতিক দল সক্রিয় আছে তাদের সাথে যোগাযোগ করবে বিএনপি। এ দলগুলোর সাথে সক্রিয়ভাবে আলোচনা করবে দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরাম।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের কাউন্সিল, পুনর্গঠন, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার সাম্প্রতিক বক্তব্য এবং সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করতে চাচ্ছি, যদিও পৌরসভা নির্বাচনের অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। আওয়ামী লীগ সে নির্বাচনে ভোট কারচুপি করেছে, আমাদের প্রার্থীদের হয়রানি এবং এজেন্টেদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করা দেয়াসহ নানাভাবে হয়রানি করেছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও এর পুনরাবৃত্তি হবে জেনেও আমরা নির্বাচনে অংশ নেব। কারণ এর মাধ্যমে আমরা সরকারের অনৈতিক এবং ফ্যাসিস্ট আচরণ দেশবাসী এবং বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে চাই।
মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতার বদলে বিশ্বাসী। গণতন্ত্রে আমাদের আস্থা আছে। আমরা এ জন্যই আন্দোলন সংগ্রাম করছি। সুতরাং নির্বাচনী বিষয় ছাড়াও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আজকের বৈঠকে আলোচনা হবে। স্থানীয় নির্বাচন ভিন্ন আঙিকে হচ্ছে। তৃণমূলের নেতারা যে মনোনয়ন দেবেন কেন্দ্রীয়ভাবে তাদের সমর্থন জানানো হবে।
জানতে চাইলে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, সব গণতান্ত্রিক নির্বাচনেই বিএনপির যাওয়া উচিত। কেননা এর মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের কুচরিত্র এবং ভোট চুরি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরিচয় ফুটে উঠবে। এতে করে দেশবাসী আওয়ামী লীগকে চিনতে পারে।
Prev Post