বর্তমানে টিনএজার থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ পর্নোগ্রাফির আসক্তিতে ভুগছেন এবং আসক্ত মানুষের হার দিন দিন বাড়ছেই। এর প্রধান কারণ- সচেতনতার অভাব, যে অভাবকে পুঁজি করে ক্রমশ সহজলভ্য হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে পর্নোবাণিজ্য। পর্নো মাদকের মতো।
মানসিক সুস্থতা বজায় থাকলে পর্নোকে অমানবিক, অস্বাভাবিক ও বর্জনীয় মনে হয়। কিন্তু মাদকের মতই- আসক্তিতে পড়ে গেলে একে খুব স্বাভাবিক মনে হতে থাকে। আসক্তির ফল মারাত্মক। খারাপ প্রভাব পড়ে শরীর ও মন দুটোর ওপরই।
পাঠকদের জানিয়ে দেয়া হচ্ছে পর্নোগ্রাফি দেখার ক্ষতিকর দিকগুলো:
প্রথমত, পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত পুরুষরা ক্রমেই নারীর প্রতি স্বাভাবিক আকর্ষণবোধ হারিয়ে ফেলেন। স্বাভাবিক যৌনজীবনের প্রতিও উৎসাহ কমে যায়।
বিকৃতির দিকে আকৃষ্ট হওয়ার কারণে একসময় নানারকম শারীরিক-মানসিক সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন। শারীরিক সমস্যা- রক্তচাপের তারতম্য দেখা দেয় এবং শরীরে উত্তেজক এনজাইম ক্ষতিকর মাত্রায় উন্নীত হয়।
পর্নোগ্রাফির দর্শকরা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন। মনের অজান্তে তারা বিকৃত যৌন চিন্তা করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। যৌনতারও একপ্রকার সহজাত সৌন্দর্য রয়েছে। পর্নো আসক্তদের কাছ থেকে সেই স্বাভাবিক সৌন্দর্য ধীরে ধীরে পুরোপুরি বিদায় নেয়।
এতে আসক্ত পুরুষদের মধ্যে অনৈতিক ও বিকৃত সম্পর্ক ক্রমেই ভালো লাগতে থাকে। যে কারণে তারা বাস্তব জীবনে তাদের ফ্যান্টাসিকে চরিতার্থ করতে চেষ্টা করেন। এ থেকে ধর্ষণে আকৃষ্ট হওয়ার মতো ঘটনা তো হরদমই ঘটে।
উপরন্তু অনেকেই পর্নোর বিকৃত কার্যক্রম স্ত্রী অথবা প্রেমিকার সঙ্গেও করার চেষ্টা করেন। যা সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনারও জন্ম দেয়।
এতে নারীদের প্রতি ভালো লাগার সহজাতবোধ বিকৃত হয়ে পড়ে শুরুতেই। নারীদের সহজ দৃষ্টিতে দেখার ক্ষমতা চলে গিয়ে শিক্ষায়তনে বা কর্মক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি করেন পর্নো আসক্তরা।
এর দর্শকরা বাস্তব জীবনেও সবসময় পর্নোগ্রাফির মতো নারীসঙ্গী আশা করতে থাকেন। এর ফল হয় ভয়াবহ। না পাওয়া থেকে অনেকেই তীব্র ফ্যাটিগে চলে যান, ভয়াবহ অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন, কর্মক্ষমতা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।
পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি চূড়ান্তে পৌঁছুলে দূরারোগ্য ব্যাধি, স্থায়ী পুরুষত্বহীনতা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে।