মুক্তির পরেই জেলগেট থেকে সোজা ছুটে গেলেন ছাত্রদল সভাপতি
রবিউল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট :দীর্ঘ সাতমাস পর কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েই সরাসরি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে ছুটে যান ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান। সেখানে ছাত্রদল সভাপতিকে বরন করে নিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
কারাগার কতৃপক্ষের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বাইরে বের হন ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান। রাজিবের মুক্তিকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যা থেকেই কারাগারের সামনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ফুল নিয়ে অবস্থান নেন। পরে কারা ফটকে ফুল দিয়ে তাকে স্বাগত জানান নেতাকর্মীরা।
কারাফটকের সামনে নেতাকে বরন করে নিতে অপেক্ষমান শতাধিক নেতা-কর্মীকে সাথে নিয়ে সরাসরি ছুটে যান গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনে কার্যালয়ে। রাত সোয়া ১২টায় রাজীবের মুক্তির খবরে অপেক্ষায় থাকা খালেদা জিয়া সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন ।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন ছাত্রনেতার ভাষ্য অনুযায়ী, ‘সেখানে সৃষ্টি হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের। দীর্ঘ কারাবাসের পর মুক্তি পাওয়া ছাত্রদল সভাপতি কান্না থামাতে পারেনি। এসময় মাতৃস্নেহে রাজীবকে কাছে টেনে নিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেন খালেদা জিয়া।’
এসময় আগামীর সমস্ত আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ছাত্রদল সভাপতি ।
ছাত্রদলের সভাপতিকে বরন করে নিতে গুলশানের কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের সাথে বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহীদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, এক নম্বর সহ-সভাপতি এজমল হোসেন পাইলট ও এক নম্বর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৯ জুলাই বরিশালের মেহেদীগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে বাবার কবর জিয়ারত ঢাকায় ফেরার পথে ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানসহ ছয়জনকে আটক করে পুলিশ।
আটকের দেড়ঘণ্টা পরে তার প্রাইভেটকার থেকে ৪৫ পিস ইয়াবা ও মদ উদ্ধার করা হয় বলে পটুয়াখালীর এএসপি মো. ফয়েজ আহমেদ মাদক মামলায় রাজীবকে গ্রেফতার দেখান। এরপর তাকে সব মিলিয়ে ৪৭টি মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
তবে রাজীবকে গ্রেফতারের পর থেকেই তার মুক্তির জন্য সোচ্চার ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
তাকে গ্রেফতারের দুদিন পর এক বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানকে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেই গ্রেফতার করা হয়েছে। আর মাদক উদ্ধারের বিষয়টি একটি ঘৃণ্য প্রচারণা ছাড়া আর কিছু নয়।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এ বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, বিরোধী রাজনীতিকে দুর্বল করার অপপ্রয়াসে ছাত্রনেতা রাজিবকে গ্রেপ্তার করার কয়েক ঘণ্টা পর তাকে বহনকারী গাড়িতে মাদক পাওয়ার কথা প্রচারকে রাজনৈতিক কর্মীদের চরিত্রহনণের একটি ঘৃণ্য প্রচারণামূলক নাটক ছাড়া আর কিছু নয়।
তিনি বলেন, গ্রেফতারের দীর্ঘ সময় পর পুলিশ কার্যালয়ে বসে যে বানোয়াট তথ্য প্রচার করা হয়েছে তা উদ্দেশ্যমূলক, মানহানিকর এবং রাজীব আহসানের মত সৎ ও আদর্শবান একজন রাজনৈতিক কর্মী সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির ষড়যন্ত্রমূলক অপচেষ্টা মাত্র।
এরপর গত ৫ জানুয়ারি বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত জনসভায় বক্তৃতার শুরুতেই ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসানকে অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে অভিযোগ করে তার মুক্তির দাবি জানিয়ে ছিলেন খালেদা জিয়া।
আগের সংবাদ