টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে অপহরণের পর দুই স্কুল ছাত্রকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত মূলহোতা ধামরাই উপজেলার চৌহাট এলাকার মিল্টন মিয়া (২০) ১৬৪ ধারায় স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
সোমবার বিকেলে টাঙ্গাইলের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (মির্জাপুর) আদালতের বিচারক সানজিদা সরোয়ারের কাছে এ স্বীকারক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। মিল্টন নিহত ইমরানের আপন চাচাতো ভাই বলে জানা গেছে। ইমরান তাকে চেনে ফেলায় ওই দুই শিশু ছাত্রকে খুন হতে হয়েছে বলে টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ গোলাম মাহফিজ রেহমান ও কোর্ট ইন্সপেক্টর আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ঢাকার ধামরাই উপজেলার চর চৌহাট গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে শাকিল (১০) ও একই গ্রামের আবু বক্করের ছেলে ইমরান (১১) গত বুধবার টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান দেখতে এসে নিখোঁজ হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার পরিবারের কাছে মোবাইল ফোনে প্রথমে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরে তা এক লাখ টাকায় রফা হয়। বিকাশে টাকা প্রেরণ করার কথা বলে সময় বেঁধে দেয়া হয় রাত ১২টা পর্যন্ত। অপহরণকারীদের চাহিদামত টাকাও সংগ্রহ করে পরিবারদ্বয়। কিন্তু অপহরণকারীদের দেয়া বিকাশ নাম্বার বন্ধ থাকায় টাকা পাঠাতে পারেনি অপহৃতদ্বয়ের পরিবার। মুক্তিপন না পেয়ে শুক্রবার রাতের কোন একসময় ওই দুই শিশুকে জবাই করে অপহরণকারীরা। তাদের লাশ ফেলে রাখা হয় মির্জাপুর উপজেলার হাড়িয়া গ্রামের এক লেবু বাগানে। খুন হওয়া দুই শিশু ধামরাই উপজেলার বালিয়া ব্র্যাক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিল।
পরে শনিবার বিকেলে নিহত স্কুল ছাত্র শাকিলের মা মোছা. জোৎস্না বেগম বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ১৬। ধারা ৩০২/২৪।
রোববার সন্ধ্যায় খুনের ঘটনার মূল হোতা মিলটন মিয়া, মিল্টনের বাবা তারা মিয়া ও রাসেলকে ধামরাই উপজেলার চৌহাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার তাদের আদালতে হাজির করা হয়। এদের মধ্যে মিল্টন স্বীকারোক্তি দেয়। সে একজন মাদকাসক্ত। নেশার টাকা যোগার করতে ওই দুই শিশু ছাত্রকে অপরহরণ করে এবং চিনে ফেলায় তাদের খুন করা হয় বলে স্বীকারোক্তি দেন।
টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ গোলাম মাহফিজ রেহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, খুনের সঙ্গে মিল্টন নিজেকে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবাববন্দি দিয়েছে। পরে আদালতের বিচারক তাকে টাঙ্গাইল জেল হাজতে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। মিল্টনের বাবা তারা মিয়া ও রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
Next Post