নতুন যুগের সূচনা ঘটল মিয়ানমারে। গত নভেম্বরে ঐতিহাসিক নির্বাচনের পর সোমবার নতুন পার্লামেন্ট বসেছে। গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচি পার্লামেন্টে তার দল এনএলডির নেতৃত্ব দেন। নবনির্বাচিত কয়েকশ’ এমপি সোমবার পার্লামেন্টের নতুন অধিবেশনে শপথ নিয়েছেন।
পার্লামেন্ট ভবনে উপস্থিত হয়ে এনএলডির এমপি নেইন থিত বলেন, মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও শান্তির জন্য আমরা কাজ করব। তবে এনএলডির অধিকাংশ আইনপ্রণেতা পার্লামেন্টে অনভিজ্ঞ। বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিনের জান্তা সরকারের শাসনে ভঙ্গুর হয়ে পড়া অর্থনীতি মোকাবিলা করতে হবে অনভিজ্ঞ নতুন সরকারকে। এটি সুচি ও তার দলের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী প্রথমেই পার্লামেন্টের চেয়ারম্যান এবং পরে উচ্চ ও নিম্নকক্ষের স্পিকার নির্বাচন করবেন এমপিরা। মিয়ানমারের নতুন সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই সেনাবাহিনীর জন্য এক-চতুর্থাংশ আসন সংরক্ষিত রয়েছে; বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ও তাদের হাতে থাকবে। এরই মধ্যে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হবে এনএলডি সরকারের। মার্চে বর্তমান প্রেসিডেন্ট থেইন সেইনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পার্লামেন্টকে নতুন একজন প্রেসিডেন্ট ঠিক করতে হবে। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে এনএলডি প্রেসিডেন্ট পদে তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছেন দলটির শীর্ষ নেতা উইন তেইন।
১৫ বছর গৃহবন্দি থাকা সুচির স্বামী ও সন্তান ব্রিটিশ নাগরিক হওয়ায় বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। তাকে প্রেসিডেন্ট করতে হলে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে, যা সেনাবাহিনীর সংরক্ষিত আসন এবং প্রভাবের কারণে অনেকটাই কঠিন। তবে এনএলডির যে-ই প্রেসিডেন্ট পদে আসুক না কেন, মূল ক্ষমতা ও নেতৃত্ব সুচির হাতেই থাকবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা।
১৯৬২ সালে সর্বশেষ মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সংসদ ছিল। এরপর পাচ দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশটিতে সামরিক ও তাদের প্রভাবযুক্ত সরকারের শাসন চালু ছিল।
Prev Post
Next Post