মগবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আহত শিশুটির চিকিৎসা চলছে।
সোমবার দুপুরে প্রোপার্টিজ হাউজিংয়ের ওই ভবনের ষষ্ঠ তলার বারান্দা দিয়ে ওই নবজাতককে ফেলে দেওয়া হয়। পুলিশ বলছে, ষষ্ঠ তলার একটি ফ্ল্যাটের এক গৃহকর্মী তার সদ্যজাত সন্তানকে বারান্দা দিয়ে ফেলে দেন। ওই গৃহকর্মীর বয়স ১৭ বছর। তাকে আটক করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহত নবজাতককে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা।
কেন নিজের সন্তানকে ফেলে দিলেন ওই মা? সোমবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই মা বলেন, তার করার কিছুই ছিল না। ৯ মাস গর্ভে ধারণ করার পর বাধ্য হয়েই তিনি নিজের সন্তানকে ফেলে দিয়েছেন।
তিনি জানান, তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লপাড়ায়। ৯ মাস আগে কুমিল্লায় বোনের বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখানে বোনের স্বামী জোর করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে। এতে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন।
চোখের পানি মুছে তিনি বলেন, কয়েকবার ফোন দিয়ে ঘটনাটি বোনের স্বামীকে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি সব অস্বীকার করেন। এরপর গর্ভে সন্তান নিয়ে অনেকটা লুকিয়ে গৃহকর্মীর কাজ করে আসছিলেন। গর্ভে সন্তান আছে জানলে হয়তো কোথাও কাজ পাবেন না- এমন ভয়ে কাউকে কিছু বলেননি। সোমবার সকালে সন্তান জন্ম নেওয়ার পর কী করবেন বুঝতে পারছিলেন না। এক পর্যায়ে বারান্দা দিয়ে সদ্যজাত সন্তানকে ফেলে দেন তিনি।
রমনা থানার এসআই আমিনুল ইসলাম বিকেলে বলেন, ২৬ বেইলি রোডের প্রপাটি টাওয়ারে ষষ্ঠ তলার আজমল শেখের বাসায় কাজ করে বিউটি। প্রথমে সন্দেহ বাড়ির গৃহকর্তার দিকে থাকলেও পরে ওই মেয়ের বক্তব্যে প্রকৃত কারণ বেরিয়ে আসে। নীরবকে গ্রেফতারে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আাইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিউটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) ভর্তি করা হয়েছে।
আদ দ্বীন হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নবজাতকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ কারণে তাকে পঞ্চম তলার আইসিইউতে রাখা হয়েছে। নিচে পরে তার মাথা, হাত-পাসহ শরীরে গুরুতর জখম রয়েছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত তাকে অক্সিজেন দিয়ে রাখা হয়েছিল। তবে অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। চিকিৎসকরা প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন শিশুটিকে বাঁচাতে।