এক বছর পর লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত

0

uttolonঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার জগমোহনপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে দুর্বৃত্তদের দেয়া পেট্রল বোমায় নিহত ওয়াসিমের লাশ এক বছর পর ময়না তদন্তের জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী হাকিমের উপস্থিতিতে পুলিশ লাশ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ গজারিয়া গ্রামের নজর আলী খানের পুত্র আব্দুর রহমান খান ওরফে ওয়াসিম (৩৮) ঢাকার কাপ্তান বাজারে পাখি বিক্রির ব্যবসা করতেন। ব্যবসার কাজে গিয়েছিলেন কক্সবাজার, গত বছর ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ফিরছিলেন। দুর্বৃত্তদের দেয়া পেট্রল বোমায় দগ্ধ হয়ে সাত হতভাগ্য যাত্রীর সঙ্গে তিনি প্রাণ হারান।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই সময় ময়নাতদন্ত ছারাই লাশ দাফন করা হয়েছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লাশের ময়নাদন্ত করার জন্য আদালতে আবেদন করেন। গত বছর ২ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিম কবর থেকে লাশ উত্তোলনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
কবর থেকে লাশ উত্তোলনের সময় উপস্থিত ছিলেন গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সগির হোসেন, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাজিব আহম্মেদ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন, মামলার তদন্ত কর্মর্কতা মো. ইব্রাহীম ও নাগেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনায়েত করিম মিলু।
গ্রামবাসী জানায়, ওয়াসিম জীবিকার তাগিদে ১০ বছর আগে গ্রাম ছেরে ঢাকায় পাড়ি জমায়। ঢাকার কাপ্তান বাজারের ফুটপাতে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা ভাল হওয়ায় সেখানে পাখি বিক্রির একটি দোকান খোলেন। আয় ভাল হওয়ায় পরিবারের সদস্যদের ঢাকায় নিজের কাছে নিয়ে যান। তিন সন্তানকে ঢাকার স্কুলে ভর্তি করে দেন। ওয়াসিম পরিবারের একমাত্র উর্পাজনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। সে মারা যাওয়ার পর পরিবারটি অর্থ সংকটে পরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াসিমের স্ত্রী সন্তানদের নামে দশ লাখ টাকার একটি আমানত হিসাব খুলে দেন। সেখান থেকে প্রতি মাসে দশ হাজার সাত শত টাকা পায় ওয়াসিমের পরিবার। এ টাকা দিয়েই ওয়াসিমের স্ত্রী কোহিনুর বেগম পরিবারের সদস্যদের নিয়ে জীবনধারন করছেন।
ওয়াসিমের স্ত্রী কোহিনুর বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া টাকায় আমাদের সংসার চলছে। ওই টাকায় চলতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। টাকার অভাবে এক সন্তানের পড়া লেখা বন্ধ হয়ে গেছে। আমাকে যারা বিধবা ও আমার সন্তানদের পিতৃহারা করেছে তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানার উপ পরিদর্শক মো. ইব্রাহীম বলেন, তদন্তর প্রয়োজনে লাশের ময়নাতদন্ত করতে হয়। ওই সময় ময়নাতদন্ত না হওয়ায় এখন করা হচ্ছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More