আটিয়া বন অধ্যাদেশ বাতিল ও রেঞ্জরের প্রত্যাহারের দাবিতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার পাহাড়ী অঞ্চলের জনগণ প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের গায়রাবেতিল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাঁশতৈল ইউনিয়নের জনগণ স্বেচ্ছায় এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বিএসসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম, সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, গায়রাবেতিল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোশারফ হোসেন, মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুনিল সারথী বর্মণ ও আতিকুর রহমান মিল্টন, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সেলিম সিকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক আজাহারুল ইসলাম, দলিল লেখক ফজলুল করিম এবং বাঁশতৈল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেনসহ প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ১৯২০ সালে টাঙ্গাইলসহ আশেপাশের কয়েকটি এলাকার জমি সেটেলমেন্ট রেকর্ডভুক্ত হওয়ার পর সরকার ১৯২৭-১৯২৮ সালে গেজেটমূলে মির্জাপুরসহ আশেপাশের কয়েকটি অঞ্চলের জায়গা বন বিভাগের কাছে ন্যস্ত করে। যা পরবর্তীতে ১৯৮২ সালে সরকার আটিয়া অধ্যাদেশ জারি করে বসত-বাড়িসহ সাধারণ মানুষের ১৯৬২ সনের রেকর্ডভুক্ত জমি ও অধ্যাদেশের আওতায় আনে। এই অধ্যাদেশের আওতায় বর্তমানে প্রায় ৪৫ হাজার একর জমি রয়েছে বলে জানা গেছে। পাহাড়ী এলাকার জনগণ যুগ যুগ ধরে ওই জমিতে ঘর বাড়ি বানিয়ে বসবাস করে আসছে। ওই জমিতে বসবাসরত লোকজন নতুন করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করলে বন বিভাগের লোকজন ভাঙচুর চালায়।
এর আগে গত ২৭ জানুয়ারি বন বিভাগের জায়গায় বেল্লাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির নির্মাণাধীন দু’তলা ভবন উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে গায়রাবেতিল গ্রামে এলাকাবাসী ও বন বিভাগের কর্মচারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা হয়। হামলার পর এলাকাবাসী বাঁশতৈল রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়ার প্রত্যাহারের দাবীতে মির্জাপুরের গোড়াই-সখিপুর সড়ক অবরোধ করে। পরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এমপি একাব্বর হোসেন ফরিদ আহমেদকে প্রত্যাহারের আশ্বাস দিলে এলাকাবাসী অবরোধ তুলে নেন।
রেঞ্জ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করার পাশাপাশি তাঁদের বসত ভিটায় নির্বিঘ্নে বসবাসের জন্য শুক্রবার বিকেলে এলাকাবাসী আটিয়া বন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি এই প্রতিবাদ সমাবেশ করে বলে জানা গেছে।
সমাবেশে অংশ নেয়া পাঁচগাঁও গ্রামের বাসিন্দা শেখ ফজলুল করিম বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে বসত করে আসা তাঁদের পৈত্রিক ভিটা সরকার কালো আইনের মাধ্যমে উচ্ছেদের চেষ্টা করছে। এই কালো আইন অনতিবিলম্বে বাতিল করা উচিত।’
বংশীনগর গ্রামের মতিয়ার রহমান জানান, ওই এলাকার ৪৭৪ দাগে তাঁর রেকর্ডকৃত জায়গায় বন বিভাগের লোকজন এসে ঘরের মালামাল লুট করে নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাঁশতৈল রেঞ্জ কর্মকর্থা মো. ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া জানান, সমাবেশের কথা তিনি শুনেছেন। তবে যারা সরকারি জায়গা দখল করে ঘর বাড়ি নির্মানের চেষ্টা করছে তাঁদের নামে বন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন