তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে সুশাসনের প্রত্যাশা পূরণের পথ ধরে দারিদ্র্য বিমোচনের সংকল্প তথা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়িত করার কাজ ২০০৯ সাল থেকে পুরোদমে শুরু হয়েছে। ৭ বছরের ব্যবধানে এ কর্মসূচির সুফলও আসতে শুরু করেছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সেই কর্মসূচির পরিপূরক একটি সুদূর প্রসারী কর্মসূচিতে বিপুল অর্থ ব্যয়ের ঘোষণা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
অর্থ-বিত্ত এবং সামরিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও মানবতার কল্যাণে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনায় বাঙালির উদ্ভাবনী মেধাকেই অনুসরণ করতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সময়ের সাথে সঙ্গতি রেখে নতুন প্রজন্মকে তথ্য-প্রযুক্তির সাথে আরো জোরালোভাবে সম্পৃক্ত করার অভিপ্রায়ে প্রেসিডেন্ট ওবামা তার পরিকল্পনার বিস্তারিত ঘোষণা দিয়েছেন এ বছরের জানুয়ারির শেষ দিন।
উল্লেখ্য, ডিজিটাল বাংলাদেশ পরিকল্পনা ঘোষণার পর বাংলাদেশের বিরোধী মতবাদের কোন কোন মহল এবং মার্কিন মুল্লুকসহ অনেক উন্নত দেশের নীতি-নির্ধারকরাও একে নিয়ে ব্যাঙ্গাত্মক মন্তব্য করেছে। সময়ের ব্যবধানে এখন বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্বপ্নের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’কে খোদ যুক্তরাষ্ট্রও অনুসরণ করছে। অথচ এই যুক্তরাষ্ট্রই তথ্য-প্রযুক্তির উৎস স্থল এবং ক্যালিফোর্নিয়ার সিলিকন ভ্যালিকে তথ্য-প্রযুক্তির রাজধানী হিসেবে গণ্য করা হয়।
‘বাঙালি আজ যা ভাবে, অবশিষ্ট বিশ্ব তা ভাবে বছর খানেক পর’-এমন একটি বহুল আলোচিত প্রবাদের স্পষ্ট প্রমাণ মিলছে ওবামা প্রশাসনের সর্বশেষ এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে-যা মার্কিন প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে কর্মরত বাংলাদেশিদেরকেও অভিভূত করেছে।
হোয়াইট হাউজের বিশেষ এই উদ্যোগে কিন্ডারগার্টেন থেকে দ্বাদশ গ্রেডের ছাত্র-ছাত্রীদের কম্পিউটার শিক্ষা নিশ্চিতকল্পে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন ৪৯ অঙ্গরাজ্যের জন্যে। ওয়াশিংটন ডিসির জন্যে দেয়া হয়েছে ১০০ মিলিয়ন ডলার। এ প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউজের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পাশাপাশি স্কুল-কলেজের রেজাল্টেও সন্তোষজনক অগ্রগতি সাধিত হওয়ায় শিক্ষা শেষেই যাতে সকলের উপযুক্ত চাকরিতে কোন সমস্যা না হয় সে জন্যে কম্পিউটার সায়েন্সের ওপর জোর দিচ্ছে ওবামা প্রশাসন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অর্থনৈতিক সম্ভাবনার সদ্ব্যবহার এবং সামাজিক অগ্রগতির সাথে সঙ্গতি রেখে চলার স্বার্থেই সকলকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে পারদর্শী করা দরকার। ওবামা বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত ৭ বছরের প্রচেষ্টার ফসল পাচ্ছি আমরা। তাই স্কুলের তরুণ-তরুণীদের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সাথে পরিচিত রাখতে হবে, যাতে তারা কলেজ/ভার্সিটিতে গিয়ে হোচট না খায়।’
হোয়াইট হাউজ উল্লেখ করেছেন, শিক্ষক, অভিভাবক, অঙ্গরাজ্য এবং ওয়াশিংটন ডিসির প্রশাসন থেকেও দীর্ঘদিন যাবত আবেদন-নিবেদন আসছে সকল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর জন্যে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্যে। প্রাইভেট সেক্টরে ইতিমধ্যেই কম্পিউটার শিক্ষায় বিশেষ মনোযোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই পাবলিক স্কুলে তার সম্প্রসারণ ঘটানোর বিকল্প নেই।