টিকিট নিয়ে ব্যবসা জমজমাট

0

sports-T20worldcupschedule-bangladesh_10-27-2013_124066_lটি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য টিকিট বিক্রি শেষ হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু বাংলাদেশ সুপার-১০ প্রায় নিশ্চিত করে ফেলায় টিকিটের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে দর্শকরা। শুধু বাংলাদেশই নয়, ভারত-পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচের টিকিটের জন্যও ক্রিকেটপাগল দর্শকদের দিগ্বিদিক ছোটাছুটি।

সেই সুযোগে প্রতারণার জমজমাট চক্র খুলে বসেছে ব্ল্যাকাররা। অভিযোগ রয়েছে, ব্ল্যাকারদের সঙ্গে সাধারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যোগ দিয়েছেন। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকাতে এই টিকিট প্রতারণার চিত্র এখন ওপেন সিক্রেট। ২৫০ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে তিন হাজার টাকায় ১০০০ টাকার টিকিট ১৫/২০ হাজার টাকায়। দর্শকদের চাহিদার সঙ্গে সঙ্গে মূল্য বাড়ছে টিকিটেরও। বিশেষ করে আজ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের টিকিট নিয়ে চলছে জমজমাট বাণিজ্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সম্পৃৃক্ততা পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলেছে। চট্টগ্রামে বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচ চলাকালে একটি বেসরকরি টিভি চ্যানেলে ক্যামেরায় পুলিশ সদস্যদের টিকিট নিয়ে দর্শকদের সঙ্গে প্রতারণার চিত্র ধরা পড়লে এরই মধ্যে বিশ্বকাপের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রামের পুলিশ সদস্য এসআই ডালিম সহ ৫ জনকে শোকজ করেছে কর্তৃপক্ষ।

ঘটনার বর্ণনাতে জানা যায়, এই পুলিশের সদস্যরা টিকিট হাতে অপেক্ষমাণ সাধারণ দশর্কদের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে নিয়ে নিচ্ছিল। আর সেই টিকিট তারা পরে বিক্রি করছিল অন্য দর্শকদের কাছে চড়া মূল্যে। এই ঘটনাটি শুধু সেদিনেরই নয়, এমন কিছু ঘটনার অভিযোগ করে আসছিল বেশ কিছু দিন থেকেই।

তার এমন আরেকটি ঘটনা মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামেও ঘটেছে। দুজন সাধারণ দর্শক টিকিট নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় একজন আনসার ও পুলিশ সদস্য আটক করে সেই দুজনকে। তাদের কাছ থেকে সেই টিকিট রেখে নিয়ে অন্যত্র বিক্রিও করে দেয় বলে অভিযোগ করে মিরপুরের কলেজছাত্র রুবেল ও রুম্মান।

এভাবেই বাংলাদেশ জুড়ে চলছে টিকিট নিয়ে প্রতারণা। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা পরিচালকেরই মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে গতকাল চট্টগ্রামের আরেক দর্শক অভিযোগ করে বলেন, ‘আজকের ভারত পাকিস্তান ম্যাচের ১০০০ টাকার দুটি টিকিট তিনি সংগ্রহ করেছেন ২০ হাজার টাকা দিয়ে। গতকালই তারা সেই টিকিট নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিয়েছেন খেলা দেখার জন্য।

কিভাবে এই টিকিট প্রতরাণার শিকার হচ্ছেন দর্শকরা? এমন প্রশ্নের জবাবে এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আইসিসি যখন টিকিটের জন্য ভাউচার ছাড়ে তখন ব্ল্যাকাররা দল বেঁধে দিন রাত ব্যাংকের সামনে বসে থেকে একজন চারটি করে টিকিট সংগ্রহ করে। তারপর তারা সেই টিকিট ব্যাংক থেকে তুলে নিয়ে শুরু করে বিক্রির কাজ। সরাসরি স্টেডিয়াম এলাকাতে অথবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টিকিট বিক্রি করছে।

দুই দর্শক জানান, তারা যখন টিকিটের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছিলেন তখন রুবেল নামের একজন তাদেরকে ডেকে নিয়ে মোবাইল নাম্বার দেয়। আর সেই মোবাইলে ফোন করে তারা পরে টিকিটের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক চড়া দামে টিকিট সংগ্রহ করে। উক্ত মোবাইল নাম্বারে ফোন করে টিকিট চাইলে জানানো হয় টিকিট যা আছে তা কিনতে হলে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করতে হবে। পরে সেই মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া গেল আর সেই ব্ল্যাকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

টিকিট নিয়ে জমাজমাট ব্যবসার চিত্র বাংলাদেশে নতুন নয়। তবে এই প্রতারণার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জড়িয়ে পড়াটাকে ভয়াবহ ঘটনাই হিসেবেই দেখছেন সাধারণ দর্শকরা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More