হারিয়ে যাওয়া মালয়েশিয়ার বিমানটির সম্ভাব্য ধ্বংসাবশেষের দ্বিতীয় দিনের অনুসন্ধানে কোনো ফল মেলেনি। ধ্বংসাবশেষের কোনো চিহ্ন খুঁজে পায়নি অনুসন্ধানী বিমান। বৃহস্পতিবারের অনুসন্ধান ব্যর্থ হওয়ার পর গতকাল শুক্রবার আবহাওয়া বেশ ভালো হয়ে উঠলেও দিনব্যাপী অনুসন্ধানে কোনো ফল মেলেনি।
তল্লাশিতে নিয়োজিত কর্মীরা জানান, সম্ভবত ধ্বংসাবশেষের টুকরা দুটি ডুবে গেছে। শুক্রবার অস্ট্রেলীয় সেনাবাহিনীর বিমান, একটি বাণিজ্যিক জেট বিমানসহ পাঁচটি অনুসন্ধানী বিমান ও দুটি বাণিজ্যিক জাহাজযোগ দিয়েছিল। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে শুক্রবারের অনুসন্ধান কাজে ইতি টানার বিষয়টি অস্ট্রেলিয়ান মেরিন সেফটি অথরিটি (এএমএসএ) নিশ্চিত করেছে।
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার নৌবাহিনীর জাহাজ ‘এইচএমএস সাকসেস’ অনুসন্ধান কাজের জন্য গন্তব্যস্থলের দিকে এগিয়ে চলেছে বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান মেরিন সেফটি অথরিটি। জাহাজটি শনিবার ধ্বংসাবশেষের স্থানটিতে পেঁৗছাতে পারে বলে এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া আরও অনেক বিষয়ে চীন, জাপান, যুক্তরাজ্য সহযোগিতা করছে বলেও সংবাদমাধ্যমকে অবহিত করেন মালয়েশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী হিশামুদ্দিন হোসেন। ফ্রান্সের প্রতিনিধি দলও বিশেষজ্ঞ সহায়তা দিচ্ছে এ অনুসন্ধানে। অনুসন্ধান টিমে এয়ার ফ্রান্স (ফ্লাইট) ৪৪৭-এর একজন সদস্য রয়েছেন।
দুঃসাহসী ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজমালয়েশিয়ার নিখোঁজ বিমানের খোঁজে বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল ও অ্যান্টার্কটিকার জনশূন্য দ্বীপের মধ্যবর্তী ভারত মহাসাগরের উদ্দেশে অস্ট্রেলিয়া থেকে তল্লাশি বিমান রওনা দেয়। উল্লেখ্য, ধ্বংসাবশেষ যেখানে ভাসছে সেই এলাকাটি পৃথিবীর অন্যতম দুর্গম অঞ্চল।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এ অনুসন্ধান অভিযান সম্পর্কে এক মন্তব্যে বলেছেন, ‘যারা নিজের নাগরিকদের নিরাপদ রাখার দায়িত্বে রয়েছেন শুধু তাদের জন্যই নয়, এ অভিযান আরও বহু লোকের জন্যই অনেক দুঃসাহসী কাজ।
‘বৃহস্পতিবার টনি অ্যাবট জানিয়েছিলেন, স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল থেকে দূর গভীর সমুদ্রে দুটি বস্তু ভেসে বেড়াচ্ছে, যা মালয়েশিয়ার হারানো বিমানের ধ্বংসাবশেষ হতে পারে। এ ঘোষণার পরই বৃহস্পতিবার থেকে দক্ষিণ ভারত সাগরে অনুসন্ধান তৎপরতা শুরু হয়। তবে তিনি এ ধ্বংসাবশেষ মালয়েশিয়ার বিমানের নাও হতে পারে বলে যাত্রীদের অপেক্ষায় থাকা স্বজনদের সতর্ক করে দিয়েছেন।
বিচলিত চীনের প্রেসিডেন্টচীনের প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং মালয়েশীয় এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএইচ ৩৭০-এর রহস্যময় অন্তর্ধানের ঘটনায় বিচলিত হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন টনি অ্যাবট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই নেতার মধ্যে টেলিফোনে আলোচনার পর তিনি এ কথা বলেন।
অ্যাবট বলেন, ‘আপনারা বুঝতেই পারছেন মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রী নাজিব ও চীনের অনেক নাগরিকের মতো তিনিও (জিনপিং) এই ঘটনায় বিচলিত।’
সাতটি জাহাজ পাঠাচ্ছে চীনচীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানায়, ভারত মহাসাগরের দক্ষিণাঞ্চলে ধ্বংসাবশেষের অনুসন্ধানে চীন শুক্রবার কমপক্ষে আরও সাতটি জাহাজ পাঠাচ্ছে।
ভারত মহাসাগরের ওই এলাকায় অনুসন্ধান অভিযান চালাতে চীনের উদ্ধার জাহাজ হাইঝুন ০১ ও ৩১ এবং নানহাইজিউ ১০১ ও ১১৫ বন্দর ছেড়ে গেছে। অপর তিনটি নৌ জাহাজ এরই মধ্যে পথে রয়েছে। ৮ মার্চ থেকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ৩৭০ বিমানটি নিখোঁজ রয়েছে। কুয়ালালামপুর থেকে বেজিং যাওয়ার পথে বিমানটি হারিয়ে যায়। হারানোর কারণ এখনও জানা যায়নি।