পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জে একটি হিন্দু মঠের পুরোহিতকে গলা কেটে হত্যার ঘটনাটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপর পরিকল্পিত কোনো হামলা কিনা সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার গিয়াসউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্তে সিআইডি, স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও বিশেষ বাহিনী র্যাব সহায়তা করছে। তিনি একটি কমিটিও গঠন করেছেন।
তিনি আরো জানান, সুপরিকল্পিতভাবে একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়কে নিশানা করে এই হামলা চালানো হয়েছে কি না আমরা সেটা তদন্ত করে দেখছি।
হামলার ঘটনাটি ঘটে সকাল সাড়ে ছটার দিকে যখন শ্রী শ্রী সন্তগৌড়ীয় মঠের ছোট মন্দিরে প্রতিদিনকার মতো নিত্যপূজার প্রস্তুতি চলছিলো।
মঠের পাশেই একটি টিনের ঘরে থাকতেন পুরোহিত যজ্ঞেশ্বর রায়। মঠের একজন সন্ন্যাসী রাধা মাধব রায় বলছিলেন, অনেক শব্দ শুনে তিনি বাইরে আসেন। তখন তিনি দেখতে পান দুজন একটি দা হাতে দৌড়ে চলে যাচ্ছেন।
তারা পালানোর সময় কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। ভয়ে তিনি আবার মন্দিরে ঢুকে যান।
পরে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে আবার বাইরে এসে অধ্যক্ষ যজ্ঞেশ্বর রায়ের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। তার ধড় থেকে মাথা আলাদা করে ফেলা হয়েছিল।
পুলিশ পরে জানায়, এই হামলার ঘটনায় তিনজন অংশ নিয়েছে। তৃতীয়জন একটি মোটরসাইকেল নিয়ে বাইরে অপেক্ষা করছিল।
এর আগে বাংলাদেশে গত অক্টোবরে ঈশ্বরদীতে একটি গির্জার পাদ্রীকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা হয়। নভেম্বরের শেষে রংপুরেও কয়েকজন পাদ্রীকে হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি দেয়া হয়।
খ্রীষ্টান পাদ্রীদের ওপর হামলা ও হুমকির মাত্র কয়েক মাসের মাথায় এবারে একটি হিন্দু মঠের অধ্যক্ষকে হত্যার ঘটনা ঘটল।
দেবীগঞ্জের এই মঠে হিন্দু ধর্ম নিয়ে শিক্ষামূলক সভার আয়োজন করা হয়। গৃহত্যাগী হিন্দু ভিক্ষু বা সাধুসন্ন্যাসীরা অনেক সময় সেখানে অংশগ্রহণ করেন।
দেবীগঞ্জের স্থানীয় সাংবাদিক সাইফুল আলম বাবু বলছেন এই ঘটনার পর এখন এলাকার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে এক ধরনের ভয় ও উদ্বেগ কাজ করছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা