দীর্ঘ বিরতির পর ফের রাজপথে নামছে বিএনপি। গত বছর তিন মাসের টানা কর্মসূচির পর কার্যত রাজপথের আন্দোলন কর্মসূচি থেকে দূরে ছিল দলটি। তবে এবারের কর্মসূচির আকার ‘ছোটখাট’ রাখা হবে। মঙ্গলবার রাতে গুলশানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সিনিয়র নেতাদের বৈঠক থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
জানা গেছে, জয় অপহরণ মামলায় প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার, সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার দেখানোসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয় ইস্যু হিসেবে দেখানো হতে পারে। বিএনপির শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সরকারি দলের আচরণে কোনও ধরনের পরিবর্তন না হওয়ায় নির্বাচনে থাকা-না থাকা নিয়েও মঙ্গলবার রাতের বৈঠকে আলোচনা হবে।
জানা গেছে, রাজধানীসহ সারাদেশে আপাতত বিক্ষোভ মিছিলের মতো কর্মসূচি নিয়েই এগোতে চায় বিএনপি। তবে মঙ্গলবার রাতের বৈঠকের পর জোটের নেতাদের সঙ্গে বসতে পারেন খালেদা জিয়া। বুধবার রাতে ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার বা আগামী সপ্তাহে কর্মসূচির দিন ঘোষণা হতে পারে।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আলোচনার বিষেয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারবো না। তবে যা কিছু ঘটছে, তাতে কর্মসূচি তো আসতেই পারে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান খান বলেন, শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে কোনও কারণ ছাড়াই। তার মতো বয়োবৃদ্ধকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাতে তো ষাট বয়সী মানুষেরাও আতঙ্কে আছেন। সরকারই পরিস্থিতি সেদিকে নিয়ে যাচ্ছে। কর্মসূচি আসতে পারে। এটা আজকের বৈঠকে আলোচনা হবে।
জানা গেছে, গাজীপুরের মেয়র এম এ মান্নানকে গ্রেফতারের বিষয়েও বিএনপি ক্ষুব্ধ। আইনি লড়াইয়ে নিজের জনপ্রতিনিধিত্ব করার ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার দিনেই তাকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮০০ কোটি টাকা চুরির ঘটনাসহ সমসাময়িক রাজনৈতিক পরিস্থিতিও ইস্যু আকারে কর্মসূচিতে থাকবে।
মঙ্গলবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শফিক রেহমানকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে সরকার যে নির্যাতন করছে, তাতে পুরো জাতি আতঙ্কিত। সরকারের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলায় শফিক রেহমানকে গ্রেফতার ও নির্যাতন করা হচ্ছে।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের পর কঠোর কর্সূচির কথা জানিয়েছিলেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। ওই দিন তিনি বলেন, সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতেই সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শফিক রেহমান ও গাজীপুরের মেয়র মান্নানকে অবিলম্বে মুক্তি না দিলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
জানতে চাইলে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এসব ঘটনা তো স্বাভাবিক না। সরকার চাপে আছে। এ কারণে কি করছে বুঝতে পারছে না। আজকে ম্যাডামের সঙ্গে সবাই কথা বলবেন। দেখা যাক কী হয়।