রক্তের ঘ্রাণ ছাড়া আওয়ামী লীগদের রাতের ঘুম হয় না: রিজভী

0

102099_78ঢাকা: ইউনিয়র পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ও সমর্থকেরা গ্রেপ্তার আতংকে আছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি। বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এ অভিযোগ করেন।

রিজভী আহমেদ বলেন, হত্যা এবং লাশের সংস্কৃতি আওয়ামী সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। রক্তের ঘ্রাণ ছাড়া আওয়ামী লীগদের যেন রাতের ঘুম হয় না। নির্বাচনী বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার শুরু করছে পুলিশ। গ্রেপ্তার আতঙ্কের মধ্যেও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা কাজ করে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি জেলায় বিএনপি প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা, গুলিবর্ষণ ও ভাংচুর চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা।

তিনি বলেন, পুলিশ, বিজিবি, নির্বাচনী কর্মকর্তা ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মিলে প্রথম দু দফা ভোট ডাকাতির পর আগামী ২৩ এপ্রিল ৬২০টি ইউনিয়ন পরিষদের তৃতীয় ধাপের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আরও বেশী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিএনপি প্রার্থী, এজেন্ট ও সমর্থকরা যেন নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে না যায় সেজন্য বাড়ি বাড়ি হুমকি দিচ্ছে আওয়ামী সন্ত্রাসী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন। নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে গেলে হত্যা ও লাশ ফেলে দেয়ার হুমকি দেয়া হচ্ছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী সন্ত্রসীদের ভয়ঙ্কর তান্ডবে গ্রামীণ জনপদ বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ভোটাররা দুর্বিষহ আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। সশস্ত্র আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশ মিলে যে রক্তাক্ত পরিস্থিতি তেরী করেছেন তাতে মনে হয় নির্বাচনী এলাকাগুলোতে ‘৭১ এর পরিস্থি’তি বিরাজ করছে। নির্বাচনে মানুষ ভোট দেয়া দুরে থাক তারা প্রাণ নিয়ে এলাকায় থাকতে পারবে কিনা সে আতঙ্কে নিদ্রাহীন প্রহর গুণছে।

নির্বাচন কমিশনের বিষয়ে আর কিছু না বলাই ভাল এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, অপরাধীদের কোনো বিবেক ও মানবতাবোধ থাকেনা। অপরাধীরা আইনের তোয়াক্কা করে না। ডাকাতির মাল সর্দারের কাছে পৌঁছে ভাগ বাটোয়ারা করে। নির্বাচন কমিশনের উচ্চ পদস্থ পদাধিকারীরা কমিশনকে দস্যুবৃত্তির আস্তানায় পরিণত করেছে। এরা মানষের ভোটাধিকারকে লুট করেছে। তারা জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকারী দলের চেয়ারম্যান প্রার্থীদেরকে বিজয়ী করে দস্যুদলের সর্দার ভোটারবিহীন সরকারকে তা উপহার দিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ভোট ডাকাতি ও জালভোটর মহোৎসবের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষনা করে দস্যু দলের ন্যায় নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করায় রকিব উদ্দিনের কমিশনকে পুরো জাতি ধিক্কার ও ঘৃনা জানাচ্ছে। মানুষের ভোটাধিকার হরণ এবং নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণহানীর জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার রকিব উদ্দিন ও তাঁর কমিশনারবৃন্দ ইতিহাসে অপরাধী হিসেবেই বিবেচিত হবেন।

প্রাণহানী ঠেকাতে কমিশন কোন ব্যবস্থা তো গ্রহণ করেইনি বরং উল্টো সরকারী রক্তাক্ত আক্রমণকেই আশকারা দিয়েছে। গত দুই দফা ইউপি নির্বাচনের পর এখন পর্যন্ত ৫০ এর অধিক ব্যক্তি নির্বাচনী সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন। এই হত্যাকান্ড ও তান্ডবের জন্য জনগণ তাদের কোনদিন ক্ষমা করবে না। সেদিন আর বেশী দুরে নয় যেদিন তাদের জনতার আদালতে বিচার হবেই বলে জানান রিজভী।

সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রহলাদপুর ইউনিয়ন, নাটোর সদরের হালসা ইউনিয়ন পরিষদ, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা, রাজবাড়ীর পাংশা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে, লক্ষীপুরে, সিরজাগঞ্জ জেলাসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী তান্ডব চালানোর চিত্র তুলে ধরেন বিএনপির এই নেতা।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য ফেরদৈস ইসলাম খোকন, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আব্দুল মালেক।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More