[ads1]ঢাকাঃ হয়েছিলেন জাতির বিবেক। বিষয়টা খুব স্বাভাবিক ছিল না। মহাজোট সরকারের মেয়াদের কথাই বলা হচ্ছে। ১৯৯৬ সালের সংসদীয় নির্বাচনে প্রায় কুড়ি বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারের যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীও হয়েছিলেন। এ কোন কাদের? সবাই বলছিল, কেন আমাদের ওবায়দুল কাদের ! রাজনৈতিক ধারাভাষ্যকারেরা বলছিলেন, এই ব্যক্তিকে তো আমরা চিনি- সে তো এত মেপে মেপে কথা বলতো না। ব্যক্তিত্বও এত প্রখর ছিল না! যুব মন্ত্রী থাকাকালে যুবতী দের সাথে কত না চটুল আড্ডায় এই কাদের কে দেখা গেছে! পান চিবাতেও তিনি ছিলেন পারদর্শী। সেই কাদের নিজ দলের আত্মসমালোচনায় থেকে ধীরে ধীরে মহাজোট সরকারের শেষ অর্ধের মন্ত্রী আর এখন হাসিনা সরকারের অন্যতম মন্ত্রী তো বটেই- দলের মুখপাত্র হিসাবে প্রথম তিনজনের একজন ! কি করে বদলে গেলেন তিনি? এমন প্রশ্ন থাকলেও এক নাটকীয় উপখ্যানে তিনি ভারতীয় হিন্দী ছবি নায়াকে’র নায়ক তিনি। সহজ সমীকরণে ওপার বাংলার আরেক সুপার হিট রাজনৈতিক সিনেমার যেন সেই ফাটকেষ্ট ! তবে যোগাযোগ মন্ত্রীর যোগাযোগ দেশের গণমাধ্যমের সাথে থাকাতেই তিনি বের হচ্ছেন কখন, কোন সড়কে একাকী হেটে ফিল্মিক আচরণে থাকবেন কিংবা কার কার দুর্নীতি ধরবেন তা নিয়ে অতি সচেতন রাজনৈতিক মহলে অতি কট্টর আক্রমণে থেকে অনেকে ‘টাউট’ আর খুব সাধারণ চিন্তায় ‘কথিত ফাটাকেষ্ট’ হিসাবেই তাঁকে দেখছে। কিন্তু এসব কিছুকে ছাপিয়ে অবুঝ জন সাধারনের নিকট ‘জাতির বিবেক’ হওয়া চরিত্র ওবায়দুল কাদের নাকি জাসদ করতেন- এমন প্রচারণায় রয়েছে অনেকে। স্বভাবতই আলোচনার নতুন ইনিংসের গোড়াপত্তন হয়েছে। এই ইনিংসের শেষ কোথায় তা নিয়ে রাজনৈতিক ময়দানে আলোচনা আছে। হ্যাঁ, ফাটাকেষ্ট বিপাকেই আছেন।[ads2]
খুব গুছিয়ে কথা বলার আদলটাই মহাজোট সরকারের কাছে তাঁর ভুমিকাকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে যায়। পুরষ্কার পেতে তাই আর বেগ পেতে হয় নাই। এই জন্য কাদের এক্সপ্রেস চলছে, থামবে কখন তা বলাও মুশকিল। কিন্তু তিনি তো সেই কাদের, যখন ১/১১ সরকারের মেয়াদে বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার নিকট সরল বক্তব্যে তাঁর দলের নেত্রী সহ তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে টুকটাক চালিয়ে গিয়েছিলেন!
এদিকে ওবায়দুল কাদেরও একসময় আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনীতি করতেন- এমন বক্তব্য সামাজিক ভাবে এসে পড়েছে তিনি ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হল ছাত্রসংসদ নির্বাচনে জিএস পদে জাসদের প্রার্থী হয়েছিলেন।ওই নির্বাচনে ড, মুশতাকের নেতৃত্বে পুরো প্যানেল জয়লাভ করলেও তিনি একমাত্র তিনি হেরে গিয়েছিলেন – এমন তথ্য জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন এক সময়ে তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধা,কবি ও সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ।
তিনি লিখেছেন, ‘ডাকসু নির্বাচনে তিনবার ভিপি পদে দাঁড়িয়ে বিপুল ভোটে হেরেছেন ছাত্রলীগ সভাপতি ওবায়দুল কাদের। কোনোবারই হাজারের উপরে ভোট পাননি। ১৯৭৯সালে ৯০৪ভোট, ১৯৮০সালে ৭৫৬ভোট ও ১৯৮১ সালে ৬০৮ ভোট পেয়েছিলেন। প্রশ্ন-তেমন জনপ্রিয়তা না থাকা সত্বেও কেন তিনি তিনবার দাঁড়ালেন? সেটা কি নতুন নেতৃত্বের পথ রুদ্ধ করা? নিজের সভাপতির পথ ঠিক রাখা? ছাত্রলীগের বিকাশের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা? নাকি তিনি ছাড়া ওই পদে যোগ্য লোক না থাকা? ছাত্রলীগের অধপতনের কাল তৈরি করা?
সাংবাদিক জাফর ওয়াজেদ একসময়ে ডাক সাইটের ছাত্রনেতা ছিলেন। সাংবাদিকতায়ও তিনি অসামান্য কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। তিনি দৈনিক সংবাদ ও মুক্তকণ্ঠের চিফ রিপোর্টার ছিলেন। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ও সাংবাদিক ইউনিয়নের একাধিকবার নেতৃত্ব দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি দৈনিক জনকণ্ঠের সহকারী সম্পাদক।
অন্যদিকে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের ক্রাইসিস ম্যান খ্যাত সৈয়দ আশরাফের জাসদ ইস্যুতে বক্তব্য হাসিনা সরকারের ঐক্যে আঘাত এনেছে- এমন খবরের শিরোনাম হবার পরেই কৌশলী অবস্থান নেন ওবায়দুল কাদের। রাজনৈতিক ঐতিহাসিকতায় তিনি জটিল বক্তব্য না রাখলেও বোঝাতে চেয়েছেন, এমন বক্তব্য রাখা সমীচীন হবে না। বোঝাতে চেয়েছেন, রাজনৈতিক কারণ কিংবা আমাদের চেয়েও বিচক্ষন রাজনীতিক শেখ হাসিনা ভাল করেই জানেন করনীয় কি ?
প্রশ্নটা এখন অন্য জায়গায় ঘুরছে বলে মত রাখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। কানাডা প্রবাসী তামান্না সাগর জননেতা বলেছেন, “কাদেরের মিশন দুটো। কারণ তিনি ১/১১ সরকারের প্রেতাত্মা বহনকারী প্রতিনিধিত্ব। হাসিনা সরকারের রাজনৈতিক বিদায় খুব সহজ বলে অনুমিত না হলেও যদি কখনো অগণতান্ত্রিক উপায়ে আবারো তৃতীয় হাতে দেশ চলে যায়- সেখানেও কাদেরের নিজের একটা শক্তিশালী অবস্থান থাকবে বলে মনে হয়। এছাড়া তাঁর আরেকটি লক্ষ্যও রয়েছে। সেটি হল, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়া। আপনারা যদি লক্ষ্য করেন দেখবেন, তিনি কিন্তু নিজের মধ্যকার আমুল চারিত্রিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে আজকের অবস্থান সৃষ্টি করেছেন। প্রতিবেশী দেশের সাথেও তাঁর রয়েছে সখ্যতা। ঠিক সে কারণেই ফিল্মিক কায়দায় তিনি দেশের মানুষকে বোকা বানিয়েছেন! হয়েছেন ফাটাকেষ্ট। এই কাদের শুনলাম জাসদও করতেন! কোথায় নেই তিনি! জাসদ, আওয়ামী লীগ কিংবা তৃতীয় শক্তি ? দারুণ একটা চরিত্র! তবে কাদেরের সবচেয়ে বড় গুণ তাঁর সততা। সেটি নিয়ে কোনো ধরণের নেতিবাচক খবর নেই কারো কাছে।”[ads1]