[ads1]মার্কিন সংস্থা ক্রোলের করা একটা বিশ্বব্যাপী সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাণিজ্যিক দুনিয়ায় জালিয়াতির ক্ষেত্রে ভারতের স্থান এখনও সারা দুনিয়ার মধ্যে শীর্ষে।
দুর্নীতি বা ঘুষ, ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি থেফ্ট, আর্থিক তছরুপ ইত্যাদি মোট যে এগারো ধরনের জালিয়াতি নিয়ে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল তার মধ্যে সাতটিতেই ভারত প্রথম স্থানে এসেছে।
[ads2]ক্রোলের কমিশন করা এই বার্ষিক গ্লোবাল ফ্রড সার্ভে রিপোর্টটি তৈরি করেছে ইকোনমিক ইন্টিলিজেন্স ইউনিট। এ জন্য তারা সারা দুনিয়ার সাড়ে সাতশোরও বেশি সিনিয়র বাণিজ্যিক কর্মকর্তার মতামত নিয়েছে।
২০১৫/১৬ সালের সেই রিপোর্টেই দেখা যাচ্ছে, কর্পোরেট ফ্রড বা বাণিজ্যিক জালিয়াতির বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ভারতের স্থান শীর্ষে। ভারতে সেই জালিয়াতির প্রায় ২৫ শতাংশই হল সরাসরি ঘুষ।
ভারতে ক্রোলের প্রতিনিধি রশ্মি খুরানা বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, “যে ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি, তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ স্বীকার করেছেন তাদের সংস্থা জালিয়াতির শিকার হয়েছে। চার ধরনের জালিয়াতিতে – ঘুষ, অর্থ পাচার, মেধাস্বত্ত্ব চুরি করা আর কমপ্লায়েন্স – ভারতের স্কোর সবার চেয়ে খারাপ হয়েছে। ভারতে বিভিন্ন কোম্পানিকে জালিয়াতি ধরতে ও তার তদন্তে সাহায্য করতে আমাদের যে অভিজ্ঞতা হয় সেসব এই রিপোর্টের সঙ্গে মিলে যায়।”
দুর্নীতি-বিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ভারতীয় শাখাও মনে করছে কর্পোরেট ফ্রড এমন একটা বিষয় – যা ঘটছে জেনেও ভারত এতদিন চুপচাপ হাত গুটিয়ে থেকেছে। এর ফলে ভারত সরকার ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র মতো যেসব বিনিয়োগ টানার উদ্যোগ নিয়েছে তা মার খাচ্ছে।
দুর্নীতি-বিরোধী এজেন্ডার ওপর ভর করে ক্ষমতায় এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদি
[ads2]টিআই ইন্ডিয়ার নির্বাহী অধিকর্তা রমানাথ ঝা বিবিসিকে বলেন, “নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় এসেছিলেন প্রধানত দুর্নীতি-বিরোধী এজেন্ডায় ভর করে। কিন্তু তার সরকার এখনও দুর্নীতি রুখতে তেমন কিছুই করেনি। কালো টাকা রুখতে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হলেও কর্পোরেট ফ্রড নিয়ে প্রায় কিছুই করা হয়নি, এই অপরাধে গত দুবছরে একজনও গ্রেফতার হয়নি। তেমন কড়া আইনও নেই, সে জন্য কোম্পানিগুলো পুলিশ বা আদালতেও যেতে চায় না। তারা ভয় পায় কোর্টে বছরের পর বছর ধরে মামলা চলবে।”
রিপোর্টটি যারা কমিশন করেছে, সেই ক্রোল অবশ্য এর পরেও মনে করছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে হাঁকডাকটাও দরকার। ক্রোল ইন্ডিয়ার রশ্মি খুরানার কথায়, কর্পোরেট ফ্রড নিয়ে হাত গুটিয়ে থাকলে তার চড়া দাম দিতে হবে ভারতকেই।
মিস খুরানা মনতব্য করেন, বাজার আর অর্থনীতি যখন চড়চড় করে উঠছে তখন বিভিন্ন দুর্নীতিকে ব্যবসা করার খরচ বলে ধামাচাপা দেওয়াটা হয়তো সহজ, “কিন্তু আমাদের রিপোর্ট বলছে এই খরচটা কিন্তু মোট রাজস্বের ১ শতাংশও পর্যন্ত হতে পারে।”
বিশ্বের বাণিজ্যিক দুনিয়ায় ভারত বিরাট সব মাইলফলক ছোঁয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চাইছে। কিন্তু ক্রোলের এই রিপোর্ট চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, তার আগে নিজের ঘরটাই ভাল করে গোছানো দরকার ভারতের![ads1]
সূত্রঃ বিবিসি