[ads1]স্পেনের সঙ্গে গত ইউরোর সেমিফাইনালে টাইব্রেকারে শেষ শটটি নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই দলের পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর আর শট নেওয়া হয়নি। অসহায় দর্শক হয়েই দেখতে হয়েছিল দলের পরাজয়।কিন্তু এবার আর ভুল করেননি রোনালদো, টাইব্রেকারে পর্তুগালের প্রথম শটটিই নিয়েছেন। ভুল হলো না পর্তুগালেরও, ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে পোল্যান্ডকে টাইব্রেকারে হারিয়েছে ৫-৩ গোলে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় শেষ হয়েছে ১-১ গোলের ড্রতে।ম্যাচের আগে আলোচনায় শুধু দুটি নামই উঠে আসছিল, রোনালদো ও লেভানডফস্কি। ওঠারই কথা, এই দুটি দল তো আলোকিত এই দুই তারকার আলোতেই। টাইব্রেকারে দলের প্রথম দুটি শটও নিলেন দুজন। প্রথমে রোনালদো। পর্তুগিজ অধিনায়ক শট নিতে আসার আগেই অবশ্য টুইটারে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ম্যাচ ছাপিয়েও চলে আসছিল লিওনেল মেসির প্রসঙ্গ। ইঙ্গিতটা পরিষ্কার, কদিন আগে কোপা আমেরিকার ফাইনালে আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম পেনাল্টি মিস করেছিলেন মেসি। রোনালদোকে ঘিরেও তেমন শঙ্কা ঘিরে ধরছিল কি? তার ওপর টুর্নামেন্টে গ্রুপপর্বে অস্ট্রিয়ার সঙ্গে ম্যাচেও তো পেনাল্টি মিস করেছিলেন রোনালদো।তবে এবার আর কোনো ভুল হলো না। রোনালদো পর্তুগালকে এগিয়ে দেওয়ার পর পোল্যান্ডের হয়ে গোল করেছিলেন লেভানডফস্কিও। চেয়ে এগিয়ে ছিলেন লেভানডফস্কিই। ইউরোর বাছাইপর্বে সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি, কিন্তু মূল টুর্নামেন্টে হঠাৎ করেই যেন ছন্দ হারিয়ে ফেললেন। গ্রুপপর্বে তিন ম্যাচের পর শেষ ষোলোও চলে গেল, লেভার পায়ে গোল নেই। হায়-হায় রব উঠতে শুরু করেছিল কিছুটা, এর মধ্যেই নিজেকে ফিরে পেলেন পোল্যান্ড অধিনায়ক। আজ ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে দিলেন পোল্যান্ডকে।[ads1]
[ads1]শুরুতে বলতে, তখনো হয়তো দর্শকেরা ঠিকমতো নিজের আসনে জেঁকে বসতেও পারেননি। মাত্র ১ মিনিট ৪০ সেকেন্ড। এবারের ইউরোর দ্রুততম গোল। বাঁ প্রান্ত থেকে গ্রসিস্কির ক্রস এসেছিল পর্তুগাল বক্সের মাঝে। দুই ডিফেন্ডারের পায়ের ফাঁক গলে দুর্দান্ত শটে বল জালে জড়িয়ে দেন লেভা।গোলটা প্রথমার্ধেই শোধ দিয়ে দেয় পর্তুগাল, রেনাতো সানচেজের কল্যাণে। শেষ ষোলোতে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বদলি নেমে দুর্দান্ত খেলা এই ১৮ বছর বয়সীকে আজ শুরু থেকেই নামিয়ে দিয়েছিলেন পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। আজও প্রথমার্ধে অসাধারণ খেলেছেন আগামী মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দিতে যাওয়া এই তরুণ মিডফিল্ডার। ৩৩ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে চোখে লেগে থাকার মতো গোল করে বুঝিয়েও দিয়েছেন, কেন তাঁর জন্য প্রায় ৩৫ মিলিয়ন খরচ করতেও পিছপা হয়নি জার্মান চ্যাম্পিয়নরা।মিডফিল্ডের একটু ওপরে বল পেয়ে নিজেই টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন পোল্যান্ড বক্সের কাছে। সেখান থেকে পাস দিলেন নানিকে। বক্সে থাকা উইঙ্গার আবার ব্যাক ফ্লিক করে বল ফেরত পাঠালেন বক্সের বাইরে দাঁড়ানো সানচেজকে। বল পায়ে আসতে না আসতেই তরুণ মিডফিল্ডারের বাঁ পায়ের দুর্দান্ত শট জড়িয়ে গেল জালে, ইউরোর ইতিহাসে নকআউট পর্বে সবচেয়ে কম বয়সী গোলদাতা হয়ে গেলেন সানচেজ। অবশ্য গোল হওয়ার পথে পোল্যান্ডের ক্রিহোবিয়াখের পায়ে লেগে গিয়েছিল বল।কী আশ্চর্য! পর্তুগালের ম্যাচ, অথচ তাতে রোনালদোর কথাই নেই! এই ম্যাচে অবশ্য খুব বেশি আলো ছড়াতে পারেননি পর্তুগিজ অধিনায়ক। এমনিতেই পর্তুগাল মিডফিল্ডের অকার্যকারিতার কারণে অনেকটা একা হয়ে ছিলেন রোনালদো; তার ওপর যতগুলো সুযোগ পেয়েছেন, সবই কাজে লাগাতে ব্যর্থ। শুধু ২৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া তাঁর দুর্বল শটটাই গেল গোলপোস্টের দিকে। এ ছাড়া আজ রোনালদোকে গোলমুখে ঠিক ‘রোনালদোসুলভ’ মনে হলো না। স্বাভাবিক দিনে যেসব সুযোগে অবলীলায় গোল করতে পারতেন, আজ সেগুলোতেই মিস! বিশেষ করে ৬০ মিনিটে নানির ক্রসে পোস্টের ৫-৬ গজ দূর থেকে গোল করতে পারলে, কিংবা ৮৫ মিনিটে গোলকিপারকে একা পেয়েও মুতিনহোর লব পাসটিতে পা লাগাতে পারলে হয়তো নির্ধারিত সময়ে জয় পেয়ে যেত পর্তুগাল।তবে নির্ধারিত সময়ে না হলেও, টাইব্রেকারে তো এসেছে। রোনালদোর তাতেই খুশি হওয়ার কথা। এ নিয়ে সর্বশেষ সাতটি ইউরোর পাঁচটিতেই যে সেমিফাইনালে উঠেছে পর্তুগাল। কিন্তু এই ‘ধারাবাহিকতা’র পরও কখনোই শিরোপা-মঞ্চে ওঠা হয়নি। এবার আক্ষেপটা ঘোচাতে পারবেন রোনালদো?বয়স হয়ে গেছে ৩১ এখন না পারলে, আর কখন? এটিই যে হতে পারে পর্তুগিজ যুবরাজের শেষ ইউরো![ads2]
Next Post