মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর অনিবন্ধিত সব সিম বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে মঙ্গলবার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
হাই কোর্টের আইনজীবী জে আর খান রবিনের করা ওই রিটে শুনানি করেন ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মির্জা আল মাহমুদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার।
বিটিআরসি, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিবসহ গ্রামীণ ফোন, বাংলালিঙ্ক, টেলিটক, রবি, এয়ারটেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবিলম্বে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে কোনো সিম কার্ডের বিষয়ে যে কারো অভিযোগের ভিত্তিতে ওই সিম কার্ডের মালিককে বিস্তারিত জানানোর জন্য নির্দেশ দেয় আদালত।
ডিলার বা অন্য যে কারো মাধ্যমে অনিবন্ধিত সিম কার্ড ইস্যু/বিক্রির ক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে কেন বিটিআরসি, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, স্বরাষ্ট্র সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিবকে নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে আদালত।
অনিবন্ধিত সিম কার্ড বিক্রির ক্ষেত্রে গ্রামীণ ফোন, বাংলালিঙ্ক, টেলিটক, রবি, এয়ারটেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে কেন দায়ী করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে।
পাশাপাশি অনিবন্ধিত সিম কার্ডধারী ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে ব্যবস্থা শুরু করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছে আদালত।
চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
‘রেজিস্ট্রেশনবিহীন ৭০ লাখ মোবাইল সিমের সন্ধান’ শিরোনামে দৈনিক জককণ্ঠে গত ৬ মার্চ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে এই রিট আবেদনটি করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিটিআরসি জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের প্রায় ১১ কোটি গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে ৭০ লাখের বেশি সিম ব্যবহার হচ্ছে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই। নীতিমালা অনুযায়ী কোনো মোবাইল অপারেটর রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সিম বিক্রি করতে পারবে না।
“বিটিআরসির নীতিমালাকে কোন প্রকার তোয়াক্কা না করে অলিগলি থেকে শুরু করে সর্বত্র (ফ্লেক্সিলোডের দোকানে) বিক্রি হচ্ছে রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিম। ফলে একদিকে সরকার বিরাট অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে মোবাইল অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে।”
প্রতিবেদনে বলা হয়, অনিবন্ধিত এ সব সিমের বড় অংশ রয়েছে অপরাধীদের হাতে।
গ্রাহকের নাম ঠিকানা পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই করার পর সিম চালু করার নির্দেশ দিয়ে সম্প্রতি বিটিআরসি বলেছে, “যাচাই-বাছাই করার পর গ্রাহকের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরই সিম চালু করা যাবে।”