[ads1]গুড লেন্থের বলটি দেখতেই পাননি জ্যাক বল। পাওয়ারও কথা নয়। বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানরাই যাকে সামলাতে হিমশিম খায়-সেই মোহাম্মদ আমিরের এমন ম্যাজিক ডেলিভারীতে ডেবুট্যান্ট জ্যাক বলের কিই বা করার আছে। তাকে ফাঁকি দিয়ে স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিল বলটি। মূহুর্তেই দুই হাত পাখির ডানার মত মেলে দিয়ে দৌড় শুরু করলেন মোহাম্মদ আমির।
এই একটা বল যেন অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিয়েছে। যেখানে কলঙ্কের দাগ লেগেছে, ছয় বছরের নির্বাসন শেষে সেই লর্ডসেই যে আমিরের টেস্ট প্রত্যাবর্তন হবে সেটি এক বছর আগেও কেউ ভাবেনি। মাঠে নামার আগে তাকে নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনা যে টেস্টের নামই হয়ে গিয়েছিল ‘আমিরের টেস্ট’। ক্রিকেট বিশ্বে সাম্প্রতিক সময়ে এত আলোড়ন হয়নি আর কোন টেস্ট ম্যাচ নিয়ে। আর সকল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যিনি, সেই মোহাম্মদ আমির যেন ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। দুই ইনিংস মিলে নিয়েছে ৩ উইকেট। তবে ম্যাচের চতুর্থ দিনে পাকিস্তানের জয়সূচক ডেলিভারীটিও এলো তার হাত থেকে। বিশ বছর পর পাকিস্তান কোন টেস্ট ম্যাচ জিতলো ঐতিহাসিক লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।
পুরো ম্যাচে আমির ছিলেন পার্শ্ব নায়ক হয়ে। নায়ক তো আসলে ইয়াসির শাহ। যার স্পিন বিষেই নীল হয়েছে ইংল্যান্ড। দুই ইনিংসে ১০ উইকেট শিকার করে ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি ইয়াসির নাম লিখিয়েছেন রেডর্ক বইয়ের কয়েটি অধ্যায়ে। তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিংও এটি।[ads1]
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে রাহাত আলী যে ধ্বংসযজ্ঞের সূচনা করেছিলেন, মোহাম্মদ আমিরকে নিয়ে তার শেষটা করলেন ইয়াসির। আগের ইনিংসের ৬ উইকেটের এবার যোগ করলেন আরো চার উইকেট। এর এর কল্যাণেই ২৮১ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে গুটিয়ে গেছে ২০৭ রানে। ৭৫ রানের জয় পেয়েছে পাকিস্তান।
মিসবাহর রেকর্ড করা সেঞ্চুরি, ইয়াসিরের ম্যাচে ১০ উইকেট আর আমিরের প্রত্যাবর্তন মিলে এই ম্যাচে পাকিস্তানের প্রাপ্তির খাতায় যোগ হয়েছে বেশ কয়েকটি পালক। যার মাধ্যমে ১৯৯৬ সালের পর এই মাঠে প্রথম টেস্ট জিতলো পাকিস্তান।
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে জেমস ভিন্স, গ্যারি ব্যালান্স আর জনি বারিস্টোর তিনটি চল্লিশোর্ধ ইনিংস পাকিস্তানের উৎসবে বিলম্বই করেছে শুধু, জয়ের সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি। ইনিংসের শুরু থেকেই ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের উপর প্রভাব বিস্তার করেছে পাকিস্তানের বোলারা। টপ অর্ডারে তিন সেরা ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছেন পেসার রাহাত আলী।৪৭ রানে প্রথম ৩ উইকেট হারানোর পর কখনোই মনে হয়নি ইংল্যান্ড ম্যাচ জিততে পারে। শেষ পর্যন্ত ২০৫ রানে শেষ হয় তাদের ইনিংস।[ads1]
স্কোর: পাকিস্তান ৩৩৯ ও ২১৫, ইংল্যান্ড ২৭২ ও ২০৭
ফল: পাকিস্তান ৭৫ রানে জয়ী
ম্যান অব দ্যা ম্যাচ: রাহাত আলী