ঢাকা: এশিয়ার দুই ক্রিকেট পরাশক্তি ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ফাইনাল দিয়ে পর্দা নামলো আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাংলাদেশের। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাঁকজমক বিসিবি সেলিব্রেশন কনসার্ট দিয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। টানা ২২ দিনের জমজমাট লড়াইয়ে বাংলাদেশের কোটি কোটি ক্রিকেট প্রেমিদের মধ্যে আনন্দ উৎসব। উৎসবের শেষ হাসিতে মেতে উঠে এশিয়ার লায়নরা। পাঁচবারের চেষ্টায় মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকার টি-টোয়েন্টির বিদায়ী ম্যাচে শিরোপা ঘরে তুলে লঙ্কানবাহিনী।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১০০ দিন আগে ২০১৩ সালের ৬ ডিসেম্বর এক বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে ক্ষণগণনা শুরু হয়েছিল। দেশের তিনটি ভেন্যু ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে সেদিন রাত ১২টা ১মিনিট থেকে শুরু হয়েছিল এ ক্ষণগণনা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আইসিসির পক্ষ থেকে কোনো অনুষ্ঠান না থাকলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) প্রায় ২০ কোটি টাকার খচর করে ১৩ ফেব্রুয়ারি সেলিব্রেসন কনসার্টের মধ্যদিয়ে পুরো ক্রিকেট দুনিয়াকে বিশ্বকাপের আলো ছড়িয়ে দেয়। প্রথম আয়োজনে বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমিদের উৎসাহ দেখে মুগ্ধ হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলও (আইসিসি)।
১৬ ফেব্রুয়ারি মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্বাগতিক বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার টি-টোয়েন্টির জমজমাট প্রথম রাউন্ডে লড়াই দিয়েই বিশ্বকাপ শুরু হলেও বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্ব মাঠে গড়ায় ২১ ফেব্রুয়ারি। ঘরের মাঠে স্বাগতিকদের স্বপ্নের বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডের উদ্বোধনী ম্যাচেই নবাগত আফগানিস্তানকে হারিয়ে টাইগারদের বিশ্বকাপা যাত্রা। কিন্তু এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রামে নেপালকে হারালেও তৃতীয় ম্যাচেই হংকংয়ের কাছে পরাজয় দিয়েই বিশ্বকাপের বাকি ম্যাচগুলোতেই চরমভাবে ব্যর্থ হয় বিশ্বকাপের একক আয়োজক দেশ বাংলাদেশ।
এরপর টি-টোয়েন্টির টানটান উত্তেজনার সুপার টেনে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের সঙ্গে হার দিয়ে শুরু করে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হার দিয়ে চূড়ান্ত পর্ব থেকে শূন্য হাতেই বিদায় নেন টাইগাররা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে স্বাগতিকরা ছিটকে পড়লেও শেষ দিন পর্যন্ত বাংলাদেশের দর্শকরা মাঠে উপস্থিত থেকে উৎসহ যুগিয়েছে অন্য দলদের।
বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড ও চূড়ান্ত পর্বে মোট ১৬ দেশ অংশ নেয়। স্বাগতিক বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা নেদারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের সুপার টেনে অংশ নেয়। এছাড়া প্রথম রাউন্ড থেকে বাদ পড়ে নেপাল, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত, আয়ারল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে।
নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ মোট ১০টি দেশ অংশ নেয়। বিশ্বকাপের ‘এ’ গ্রুপের হয়ে মাঠে নামেন অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ড। ‘বি’ গ্রুপে স্বাগতিক বাংলাদেশ, ভারত, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও শ্রীলঙ্কা।
নারীদে
র বিশ্বকাপেও হতাশ করেছে স্বাগতিকরা। প্রমীলাদের বিশ্বকাপের ফাইনাল ও সেমিফাইনাল ছাড়া বাকি ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হয় সিলেট স্টেডিয়ামে।
রোববার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডকে হারিয়ে টানা তৃতীয় বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুলে অস্ট্রেলিয়া। ৬ উইকেট ও ২৯ বল বাকি থাকতেই বড় ব্যবধানে জয় পায় মেগ লেনিং বাহিনী।