৬ হ্যাকারকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তারা প্রবাসীদের ইমো আইডি হ্যাক করে কৌশলে অন্তত ৫০ লাখ টাকা হাতিয়েছে বলে ডিবি জানিয়েছে।
রোববার ঢাকা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে গোয়েন্দা-ওয়ারী বিভাগের ওয়ারী জোনাল টিম। গ্রেফতাররা হলেন- আব্দুল মমিন, রবিউল ইসলাম ওরফে রবি, শহিদুল ইসলাম ওরফে শহিদ, সাব্বির, চাঁন মোল্লা এবং আরিফুল ইসলাম।
তাদের হেফাজত থেকে ১২টি মোবাইল ফোন, ১৯টি সিম ও হ্যাকিং কাজে ব্যবহৃত একাধিক ইমো আইডি জব্দ করা হয়।
সোমবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, গত ৯ অক্টোবর কাতার প্রবাসী আবুল কাশেমের ইমো অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে বাংলাদেশে অবস্থিত তার ভাই নুরুল ইসলামের কাছ থেকে তিন দফায় ৬৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। পরে বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি ডিবি পুলিশের সহায়তা নেন। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, গত ৯ অক্টোবর রাতে নুরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছে তার কাতার প্রবাসী বড় ভাই কাশেমের ইমো আইডি থেকে একটি বার্তা আসে। ওই বার্তায় লেখা রয়েছে- আমার টাকার প্রয়োজন, আমি বিকাশ নাম্বার পাঠাইলে টাকা দিও। পরদিন ১০ অক্টোবর দুপুরে নুরুল ইসলামের ইমো আইডিতে আরও একটি মেসেজ আসে। সেখানে বলা হয়- আজকে বিকাশের রেট কত? ২৫ হাজার টাকা পাঠানো যাবে। এরপর আরও কয়েকটি মেসেজ ও ভয়েস মেসেজ আসে। পরে নুরুল ইসলাম ইমোতে পাঠানো বিকাশ নম্বরে তিন ধাপে মোট ৬৫ হাজার টাকা পাঠান।
পরবর্তীতে নুরুল ইসলাম তার বড়় ভাইয়ের ইমো আইডি বন্ধ পেলে কাশেমের স্ত্রীর ফোন থেকে ফোন করে তাকে ৬৫ হাজার টাকা পাঠানোর কথা জানান। এ সময় কাশেম তার ভাইকে ইমো আইডি হ্যাক হওয়ার কথা জানান।
ডিবি প্রধান বলেন, এরা মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত বাংলাদেশিদের ইমো আইডি টার্গেট করে হ্যাংকিংয়ের ফাঁদ পাতে। পরবর্তীতে দেশে অবস্থানরত আত্মীয়-স্বজনের ইমো নাম্বারে অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার কথা বলে মোটা অংকের টাকা চায়। এভাবে তারা ৫০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। আর কিভাবে হ্যাকিং করতে হয়, কিভাবে মানুষকে মিষ্টি কথায় ভোলাতে হয় সে বিষয়ে তারা ট্রেনিং নিয়েছে। যারা ট্রেনিং দেন তাদেরও গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার ও অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন এবং নিজের পিন, ওটিপি নাম্বার কাউকে না দেওয়ার পরামর্শ দেন ডিবি প্রধান। কেউ এমন প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়লে ডিবি পুলিশকে অবহিত করার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা-ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আশরাফ এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. তরিকুর রহমানের তত্ত্বাবধানে ওয়ারী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আহসান খানের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
jugantor