বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছেন, বুধবার (৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভ ৩৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে যা থাকে সেটিই হচ্ছে নেট রিজার্ভের পরিমাণ। ফলে বর্তমানে নেট রিজার্ভের পরিমাণ ২৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।
বুধবার আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক শেষে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর এসব কথা বলেন। এ সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, ‘আইএমএফ বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ গ্রসে নয়, নেটে দেখাতে বলেছে। এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। যদিও আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ গ্রসে দেখাই। আইএমএফ আমাদের নেট রিজার্ভ দেখাতে বলছে। জবাবে আমরা বলেছি, আমাদের হিসাবের মধ্যেই গ্রস ও নেট রিজার্ভ রয়েছে। চাইলে আমরা আলাদা করে দেখাতে পারি। এ নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আমরা সবসময় এ বিষয়ে স্বচ্ছতা রেখেই লেনদেন করি।’
তিনি বলেন, ‘আজ (বুধবার) বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস রিজার্ভ ৩৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আমাদের কয়েকটি ফান্ডে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ আছে। সেখানে থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে নেট রিজার্ভ চলে আসবে ২৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। আমাদের যখন রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ছিল তখনও আমরা এভাবেই হিসাব করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ইভিএফ যেটা, সেটা ১২০ দিনের জন্য ঋণ দিই। আমরা চাইলে সেটা তুলে নিয়ে আসতে পারি। শ্রীলঙ্কাকে দেয়া ২০ কোটি ডলার আমরা আনার জন্য কাজ করছি। শ্রীলঙ্কার গর্ভনরের সাথে আমি বৈঠক করছি। তিনি বলেছেন, তারা আমাদের লোনটা পরিশোধ করবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘সারের ক্ষেত্রে ভর্তুকির ব্যাপারে আইএমএফ‘র সাথে আমাদের কথা হয়েছে। আমরা বলেছি, কৃষিখাত হলো আমাদের প্রধান খাত। এই খাত আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। সুতরাং এই খাতে আমরা ভর্তুকি দিয়ে যাব। পরবর্তী সময়ে এ ব্যাপারে তারা আর কোনো কথা বলেনি।’
জ্বালানি খাত নিয়ে আইএমএফের বক্তব্য প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, ‘জ্বালানি খাতে ইতোমধ্যে আমরা দাম বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মূল্যের সাথে সমন্বয় করেছি। তারা বলেছে, এটা যেন আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সবসময় সমন্বয় রাখা হয়। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে বাড়াতে হবে, কমলে কমাতে হবে। তাদের সুপারিশ আমরা মেনে নিয়েছি। তবে এই মুহূর্তে দাম বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই।’
আর্থিক খাতের সংস্কার প্রসঙ্গে আইএমএফের বক্তব্য কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমাদের খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে রয়েছে। আইএমএফের শর্তও খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে রাখতে হবে। ফলে এখানে নতুন করে কোনো শর্ত আসেনি। তবে বিভিন্ন ব্যাংকের যে মূলধন ঘাটতি রয়েছে, অর্থাৎ ভেসেল-৩ যে লেভেলে রয়েছে, সব ব্যাংককে সেই স্থানে নিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের যে ৬১টি ব্যাংক রয়েছে তার মধ্যে অলমোস্ট সবারই ভেসেল-৩ বাস্তবায়ন করা আছে। তবে ৮/১০টি ব্যাংকের ঘাটতি রয়েছে। সেটা আমাদের পূরণ করতে বলেছে। এটা মোট ব্যাংকের সাড়ে ১২ শতাংশ।’