বগুড়ায় জেলা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের মধ্যে বিক্ষোভ চলাকালে সংগঠনের এক নেতাকে আটক করেছিল র্যাব। তবে মুহূর্তের মধ্যে র্যাবের হাত থেকে ওই নেতাকে ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমায়ার মুজিব মঞ্চের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলে বগুড়া র্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার তৌহিদুল মুবিনও উপস্থিত ছিলেন।
র্যাবের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম আব্দুর রউফ। তিনি সরকারি আজিজুল হক কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। ছাত্রলীগ নেতা তাকবির ইসলাম খান হত্যা মামলার প্রধান আসামি হওয়ায় সংগঠন থেকে রউফকে বহিষ্কার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগ নেতা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য সূত্র জানায়, গত ৭ নভেম্বর সজীব সাহাকে সভাপতি ও মাহিদুল ইসলাম জয়কে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রলীগের ৩০ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটিতে কাঙ্খিত পদ না পেয়ে ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার হামলা-মামলার ঘটনাও ঘটেছে।
এদিকে ছাত্রলীগের কমিটিকে কেন্দ্র করে জেলা আওয়ামী লীগেও বিভাজন দেখা দেয়। ছাত্রলীগের কমিটিকে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মজিবর রহমান মজনু ও সাধারণ সম্পাদক রাগিবুল আহসান রিপু পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন। অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের একপক্ষ বিশেষ করে যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন ছাত্রলীগের বিদ্রোহী গ্রুপকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিচ্ছে। এতে ছাত্রলীগের বিরোধ আরও শক্ত হয়।
বিরোধ চলাকালে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা ছাত্রলীগ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এমনকি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ও তালাবদ্ধ করেন তারা। এছাড়া ছাত্রলীগের কমিটিকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের প্রকাশ্য মহড়া চলতে থাকে।
এরই মধ্যে সোমবার রাতে জেলা কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনার জেরে মঙ্গলবার বিকেলে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সজীব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম জয়ের আনুসারীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। আজিজুল হক কলেজ শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রউফও বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। বিক্ষোভ মিছিল শেষে তাকে সাতমাথা এলাকা থেকে র্যাবের একটি দল আটক করেন।
বউফকে আটকের বিষয়টি টের পেয়ে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে র্যাবের হাত থেকে তাকে ছিনিয়ে নেন। এ সময় স্লোগান দিতে দিতে তারা দলীয় কার্যালয় এলাকায় অবস্থান নেন।
ছাত্রলীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-১২ এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার তৌহিদুল মুবিন খান বলেছেন, আমরা অন্য একজনকে ভেবে তাকে আটক করেছিলাম। নাম-পরিচয় জানার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রলীগ নেতারা তাকে ছিনিয়ে নিয়েছে কিনা জানতে চাইলে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, না, এখানে ছিনিয়ে নেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। ছেড়ে দেওয়ার পর ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা এসে তাকে নিয়ে গেছে।