কী হয়েছিল নওমুসলিম তরুণী (অর্পা শাহা) ফাতেমা রহমানের সঙ্গে?

0

ধর্ম পরিবর্তন করে নির্যাতনের শিকারি হোন ফাতেমা রহমান (আগের নাম অর্পা শাহা)। ইসলাম গ্রহণ করে নির্যাতনের শিকার হওয়ায় প্রাপ্ত বয়স্কা এই নওমুসলিম তরুণীকে গতকাল সেফহোমে পাঠিয়েছেন আদালত।

ময়মনসিংহ কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ আওয়ার ইসলামকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ময়মনসিংহের বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন, এলাকাবাসী ও ফাতেমার সহপাঠীদের তথ্য বলছে, গত ৫ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ সদরের গৌতম চন্দ্র সাহার কন্যা অর্পাসাহা জেলা জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেটের সম্মুখে উপস্থিত হয়ে হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেন। এফিডেভিটে তিনি নিজেকে প্রাপ্ত বয়স্কা ও কোন চাপ ছাড়াই নিজের ইচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। কিন্তু ধর্ম পরিবর্তনের পর ফাতেমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। এরপর গত ১০ ডিসেম্বর কোতয়ালী থানায় উপস্থিত হয়ে বাবা গৌতম চন্দ্র সাহা ও চাচা উত্তম চন্দ্র সাহার বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে স্থানীয় এক মুসলিম পরিবারে আশ্রয় নেয়।

এদিকে ফাতেমার বাবাও তাকে ফিরে পেতে থানায় আবেদন করে। এর প্রেক্ষিতে তাকে পরিবারের কাছে তুলে দেয় পুলিশ। ভবিষ্যতে নির্যাতন না করার এবং স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনে সুযোগ দেয়া হবে মর্মে পুলিশের কাছে লিখিত দেয় ফাতেমার বাবা গৌতম চন্দ্র। তবে বাসায় নিয়ে নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়। নির্যাতনের ঘটনা কৌশলে সহপাঠীদের জানায় ফাতেমা। এরপর গত ১৩ ডিসেম্বর তাকে উদ্ধারের জন্য আদালতে আবেদন করে সহপাঠী আশফিকা (মোকদ্দমা নং ১২৭/২০২২)। এর প্রেক্ষিতে সার্চ ওয়ারেন্ট জারি করে আদালত। তবে পুলিশ ব্যবস্থা না নিয়ে আবেদনটি ফেরত পাঠায়।

এরপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকলে রোববার (২৫ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে জাতীয় জরুরী সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল দিয়ে ঘটনা অবহিত করে সহপাঠীরা। খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম রাতেই ফাতেমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এবং গতকাল সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) ফাতেমার জবানবন্দি শুনে সেফ হাউজে রাখার সিদ্ধান্ত দেন আদালত।

ফাতেমার আইনজীবি খন্দকার বদরুল আলম আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আদালতে উপস্থাপন করেছে। যেহেতু সে প্রাপ্ত বয়স্কা তাই নিজ জিম্মায় থাকার অনুমতির জন্য আবেদন করেছি। আদালত নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে সেফ হাউজে রাখার আদেশ দিয়েছেন। আগামী মাসের শোনানিতে আমরা জোরদারভাবে আবেদন করবো তাকে যেন নিজ জিম্মায় থাকার অনুমতি দেয়া হয়।’

কোতওয়ালী থানার ওসি শাহ কামাল আওয়ার ইসলামকে বলেন, গত রোববার রাতে ৯৯৯ কল দিয়ে নির্যাতনের কথা জানায় সহপাঠীরা। খবর পেয়ে মোবাইল টিমের মাধ্যমে ফাতেমাকে উদ্ধার করে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত তাকে সেফ হাউজে রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। ইতোমধ্যেই তাকে ফরিদপুরের সেফহোমে পাঠানো হয়েছে।

উৎসঃ   আওয়ার ইসলাম
Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More