কুড়িয়ে পাওয়া লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মারিয়া আক্তার। আজ বুধবার দুপুরে ছবি: সংগৃহীত
টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে কুড়িয়ে পাওয়া এক লাখ টাকা ফেরত দিয়েছে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী। আজ বুধবার দুপুরে ওই টাকা প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ওই ছাত্রীর নাম মারিয়া আক্তার। সে উপজেলার কালিয়া ইসলামিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। মারিয়া আড়াইপাড়া গ্রামের সৌদিপ্রবাসী ফরহাদ হোসেনের মেয়ে। টাকার প্রকৃত মালিকের নাম আশরাফুল ইসলাম। তিনি একই গ্রামের গফুর আলীর ছেলে।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবুল খায়ের বলেন, মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত অ্যাসেম্বলি ক্লাসে নৈতিক শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করা হয়। মেয়েটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। টাকা ফেরত পেয়ে আশরাফুল খুশি হয়ে মেয়েটিকে ৩ হাজার টাকা পুরস্কার দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আশরাফুল আলম সম্প্রতি কুয়েত থেকে দেশে ফিরেছেন। আজ সকালে এক লাখ (১ হাজার টাকার নোটের একটি বান্ডিল) টাকা জ্যাকেটের ভেতরের পকেটে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন তিনি। নিজের অজান্তে টাকার বান্ডিলটি সড়কে পড়ে যায়। মারিয়া আক্তার সকালে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে সড়কে পড়ে থাকা টাকার বান্ডিলটি কুড়িয়ে পায়। সকাল ১০টার আগে মাদ্রাসায় পৌঁছে সে ওই টাকার বান্ডিল চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী শফিকুলের হাতে তুলে দিয়ে কুড়িয়ে পাওয়ার বিষয়টি জানায়।
মারিয়া আক্তার বলে, ‘টাকাভর্তি ব্যাগ পেয়ে আমি প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। নিজে নিজে কিছুক্ষণ টাকার মালিককে খুঁজেছিলাম। ভয়ে সেখানকার কাউকে ঘটনাটি জানাইনি। পরে টাকাগুলো নিয়ে সোজা মাদ্রাসায় চলে আসি। মাদ্রাসায় শিক্ষকদের না পেয়ে টাকার বান্ডিলটি অফিস পিয়ন শফিকুলের হাতে তুলে দিই।’
আশরাফুল আলম বলেন, উপজেলার কচুয়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেখেন জ্যাকেটের পকেটে টাকার বান্ডিলটি নেই। তাৎক্ষণিকভাবে টাকা খুঁজতে ওই সড়ক দিয়ে বাড়ি আসতে থাকেন। মাদ্রাসাটির কাছে পৌঁছানোর পর তিনি জানতে পারেন ওই টাকা পাওয়া গেছে। পরে টাকার বর্ণনা মিলে গেলে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ওই ছাত্রীর হাত দিয়েই টাকা ফেরত দেন। তিনি আরও বলেন, ‘টাকা ফেরত পাব এমন আশা আমি ছেড়েই দিয়েছিলাম। মেয়েটি অনেক ভালো। সত্যিই পৃথিবীতে এখনো ভালো মানুষ আছে।’
মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ও সখীপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত লতিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ দুপুরের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মেয়েটির সততার বিষয়ে প্রশংসা করে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। মারিয়া আমাদের মাদ্রাসার গর্ব।’