মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (আমেরিকার) দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট স্টেট সেক্রেটারি (সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী) ডোনাল্ড লু বাংলাদেশ সফরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। শনিবার রাতে ঢাকায় পৌঁছালে বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমেরিকা উইংয়ের মহাপরিচালক নাইম উদ্দিন আহমেদ।
বিমানবন্দর থেকে ডোনাল্ড লু সরাসরি যান ইস্কাটনে আওয়ামী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে এম আবদুল মোমেনের সরকারি বাসায়। ইস্কাটনে আবদুল মোমেন ও ডোনাল্ড লু বৈঠকে মিলিত হন এবং নৈশভোজ সারেন। এসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূত পিটার হাস উপস্থিত ছিলেন। রাতের এই বৈঠক নিয়ে কোন পক্ষই গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেন নি। সাংবাদিকরা বাইরে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষমাণ থাকলেও কোন কথা না বলেই চলে যান আমেরিকার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আবুদল মোমেনও কোন কথা বলতে রাজি হননি রাতে।
রবিবার সকাল থেকেই সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আবারো বৈঠক করেন ডোনাল্ড লু। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং করেন তিনি। ব্রিফিংয়ে বলেন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার আমাদের কেন্দ্র বিন্দু। এটা নিয়ে আমরা পরামর্শ দেই।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ডোনাল্ড লু। জানান, বৈঠকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) নিয়ে ভালো হয়েছে। সন্ত্রাস প্রতিরোধে তারা ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় ডোনাল্ড লু বাংলায় বলেন, মনোমুগ্ধকর অতিথিপরায়ণ মানুষের দেশে বন্ধুত্ব শক্তিশালী করতে এসেছি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ডোনাল্ড লু।
ব্রিফিংয়ে ডোনাল্ড লু বলেন, জিএসপি সুবিধা চালু হলে প্রথমে বাংলাদেশ এই সুবিধা পাবে।
ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, আমরা ভালো সাজেশন পেলে অবশ্যই সেটা নেবো। আমরাও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আওয়ামী লীগ বুলেটে নয়, ব্যালটে বিশ্বাসী।
তিনি বলেন, আগামী ৫০ বছরে আমাদের (যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ) সম্পর্ক অনেক উন্নতি হয়েছে। আগামী এপ্রিলে আমাকে ওয়াশিংটন সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এর আগে, শনিবার (১৪ই জানুয়ারি) রাতে ঢাকা পৌঁছেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এ সময় দুই দেশের দ্বি-পাক্ষীয় বিষয়ে তারা আলোচনা করেন।
আমেরিকার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লু ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-নাগরিক সমাজের নেতাদের সঙ্গে দুই দেশের দ্বি-পাক্ষীক সম্পর্ক জোরদার ও অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি শ্রম ও মানবাধিকার বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনা সম্পর্কে জানবেন।
ডোনাল্ড লু ১২ জানুয়ারি থেকে ভারত সফর করেছেন। ভারত থেকে ১৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফরে আসেন তিনি।