ঢাকার খিলগাঁওয়ে চলন্ত বাসে লক্ষ্মীপুরের যুবক ওয়ালি উল্লাহকে অচেতন করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে ৪৫ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অসিত পালকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রেক্ষিতে সংগঠন-বিরোধী, শৃঙ্খলা পরিপন্থী, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে অসিত পালকে (পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাবি শাখা) বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হলো।’
এছাড়াও উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগের সকল সাংগঠনিক ইউনিটকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাডেমিক পরিবেশ সমুন্নত রাখা, গঠনতান্ত্রিক আদর্শিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি বজায় রাখা ও স্মার্ট ক্যাম্পাসের উপযোগী স্মার্ট ছাত্র রাজনীতি বিনির্মাণে সচেষ্ট থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কখনো অন্যায় কে প্রশ্রয় দেয়নি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সবসময় কেন্দ্রের সাথে সমন্বয় করেই রাজনীতি করে। তার নামে অভিযোগ ওঠার পর কেন্দ্র আমাদের সাথে যোগাযোগ করে তথ্য নিয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়েছে। শাখা ছাত্রলীগ কখনো অন্যায়ের সাথে আপোস করে না। এই বহিষ্কার তার একটি দৃষ্টান্ত।’
জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ শুরু থেকেই মাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এ ধরণের অপরাধ করে ছাত্রলীগের ছায়াতলে কেউ থাকতে পারবে না।’
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, ‘অন্যায়কে কখনোই বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রশ্রয় দেয় না, কখনো দিবে না। ছাত্রলীগের আদর্শ, নৈতিকতার পরিপন্থী কোন কাজের সুযোগ দেয়া হবে না। ভবিষ্যতে যদি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মত ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের পরিচয়কে পুঁজি করে সামান্যতম অপচেষ্টা চালায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
গত বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম বরকত হলের ‘এ’ ব্লকের ২১৪ নম্বর কক্ষে ওয়ালি উল্লাহকে নেশাদ্রব্য খাইয়ে মারধর করে ৪৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে রাত ২ টার দিকে হল প্রভোস্ট, প্রক্টরিয়াল বডি, ছাত্রলীগ নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগীর বর্ণনা অনুযায়ী রুমটি শনাক্ত করা হয়। অপহরণ ও নির্যাতনে অভিযুক্ত অসিত পালের কক্ষে মদ, গাঁজা ও ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম, সিরিঞ্জসহ নানা মাদকদ্রব্য গ্রহণের আলামত পাওয়া যায়। এই ঘটনায় শহীদ সালাম বরকত হল প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
বিডি প্রতিদিন