আলোচিত রহিমা বেগম ‘অপহরণ’ ছিল সাজানো নাটক : পিবিআই

0

খুলনার বহুল আলোচিত রহিমা বেগম অপহরণ মামলা প্রমাণিত না হওয়ায় রহিমা এবং তার দুই মেয়ে মরিয়ম মান্নান ও আদুরি আকতারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান।

সেইসাথে অপহরণ মামলায় গ্রেফতার পাঁচজনকেও অব্যাহতির সুপারিশ করে পিবিআই সোমবারই মহানগর হাকিম আদালতে মামলার প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিক বলেন, তদন্তে রহিমা বেগমকে অপহরণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং জমিসংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মরিয়ম মান্নানের নেতৃত্বে অপহরণের নাটক সাজানোর প্রমাণ পাওয়া গেছে। রহিমা বেগম অপহরণ হননি, তিনি স্বেচ্ছায় ২৮ দিন আত্মগোপনে ছিলেন। এই ২৮ দিন তিনি বিভিন্ন স্থান পরিবর্তন করেন।

আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে ২৭ অক্টোবর দিবাগত রাতে তিনি মহেশ্বরপাশার বাসা থেকে ঢাকায় যান। সেখানে কিছুদিন অবস্থান করার পর একটি ব্যাগে কিছু কাপড় ও ওষুধ দিয়ে মরিয়ম মান্নান তাকে বান্দরবান পাঠিয়ে দেন। সেখানে কয়েকদিন অবস্থান করার পর তিনি চলে যান ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারীর সৈয়দ গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের বাড়িতে। সংবাদ পেয়ে ওই বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, রহিমা বেগমকে উদ্ধারের পর তিনি কোনো কথাই বলছিলেন না। অনেক চেষ্টার পর কথা বলানো সম্ভব হলে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবেশীদের সাথে বিরোধের কথা বলেন। ক’জনের নাম উল্লেখ করে তারা অপহরণ করেছে বলে বিবৃতি দেন। পরে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিতে আদালতে পাঠানো হলে তিনি একই রকমের মিথ্যা বক্তব্য দেন। তদন্ত শেষে এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতামতে জানা যায়, শুধু জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশীদের ফাঁসাতে মরিয়ম মান্নানের নেতৃত্বে এই অপহরণ নাটক সাজানো হয়।

পুলিশ সুপার বলেন, এই নাটকের মাস্টারমাইন্ড মরিয়ম মান্নান। এ নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন তিনি। ময়মনসিংহের ফুলপুর থেকে ৩০-৩২ বছর বয়সী একটি নারীর অর্ধগলিত লাশকে তিনি নিজের মা বলে চালিয়ে দেয়ার নাটক করেছিলেন। নাটকটির পেছনের কারণ ছিল, যদি তাকে (নারীর লাশ) তার মা বলে চালিয়ে দেয়া যেত, তাহলে প্রতিবেশীদের চিরতরে ফাঁসানো যেত।

পুলিশ সুপার জানান, সকালে মামলার বাদি আদুরি আক্তারকে প্রতিবেদনের বিষয়ে পড়ে শোনানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে যে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, সেটাও জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাতে খুলনা নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ি থেকে রহিমা বেগম রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন। তাকে অপহরণের অভিযোগ তুলে পরদিন মেয়ে আদুরি আক্তার দৌলতপুর থানায় মামলা করেন।

২৪ সেপ্টেম্বর খুলনার দৌলতপুর থানা পুলিশ ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের আবদুল কুদ্দুসের বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করে।

উৎসঃ   নয়াদিগন্ত
Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More