মো. তন্ময় মোস্তাফিজ মন্টি। পেশায় একজন ঠিকাদার। থাকেন মিরপুরের কাজীপাড়ায়। দিনের কর্মব্যস্ততা শেষে পবিত্র শবেবরাতের নামাজ আদায় করছিলেন। এরই মধ্যে রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণের সংবাদ পান। ছুটে আসেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। খুঁজতে থাকেন রক্তদানের বুথ। স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় রেজিস্ট্রেশন করে উদ্বিগ্ন মনে দাঁড়িয়ে যান রক্তদাতাদের অপেক্ষমান লাইনে।
অপরদিকে ঢামেকের জরুরী বিভাগের সামনে ছাত্রলীগের একদল স্বেচ্ছাসেবক প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান নেন। যেখানে লেখা ছিল—‘রক্ত লাগলে যোগাযোগ করুন’।
ঠিকাদার মো. তন্ময় মোস্তাফিজ মন্টি যুগান্তরকে বলেন, শবেবরাতের নামাজ আদায় করছিলাম। কিন্তু বিস্ফোরণের ভয়াবহতা আর মানুষের আর্তনাদের খবর দেখে আর ঠিক থাকতে পারছিলাম না। এজন্য রক্ত দিতে এসেছি। কিন্তু সিরিয়াল অনেক বড়। বুথ থেকে আগামীকাল বুধবার রক্ত দিতে বলেছে। কিন্তু আমার একটা কাজ থাকায় এবং পরদিন রোজা রাখব এজন্য স্বেচ্ছাসেবকদের রক্ত গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছি। এরপর তারা আমাকে রক্তদানের সুযোগ দিয়েছে। আমার রক্তের গ্রুপ এ(+) পজিটিভ। একটা মানুষও যদি আমার রক্তে বেঁচে যায়—এটাই হবে পরম পাওয়া।
ঢামেক হাসপাতালে অসুস্থ্য বাবাকে নিয়ে ভর্তি সুমাইয়া ইসলামও রক্ত দিতে খুঁজছিলেন স্বেচ্ছাসেবকদের। জরুরী বিভাগের সামনে তার সঙ্গে কথা হয় যুগান্তরের। তিনি বলেন, আমার বাবা অসুস্থ্য। কিন্তু এখানে মানুষের হাহাকার দেখে স্থির থাকতে পারছিলাম না। আমার সাধ্যের মধ্যে যতোটুকোন সম্ভব করতে চাই। এজন্য রক্ত দিব।
রক্তদানের বুথে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাইদুল ইসলাম। তিনি যুগান্তরকে জানান, তারা নিরবিচ্ছিন্নভাবে রক্ত নিচ্ছেন। রাত হওয়ায় যাদের বাসায় ফিরতে হবে তাদের নাম, মোবাইল নম্বর ও রক্তের গ্রুপ রেখে দিচ্ছেন। প্রয়োজনে পরবর্তীতে তাদেরকে ডাকবেন।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান যুগান্তরকে বলেন, আমরা সাংগঠনিকভাবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের রক্তদানের আহ্বান জানিয়েছিলাম। আমাদের সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে রক্তদানের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত সংগ্রহে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে অনেক সাধারণ মানুষও রক্ত দিতে এসেছেন।
jugantor