নীলফামারী : তিস্তা নদীতে মঙ্গলবার সকালে পানির প্রবাহ হঠাৎ করে বেড়ে ৩ হাজার ৬ কিউসেকে দাঁড়ায়। অথচ এর আগের দিন সোমবার ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ ছিল মাত্র ৮৩০ কিউসেক।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান জানান, মঙ্গলবার সকালে ডালিয়া পয়েন্টে ৩ হাজার ৬ কিউসেক পানির প্রবাহ পাওয়া যায়। ভারতের গজলডোবা ব্যারাজের গেট পেরিয়ে নদীতে পানি এসে পৌঁছায়।
তিনি জানান, এ নদীতে গড়ে ৫-৬ হাজার কিউসেক পানির প্রবাহ থাকা প্রয়োজন হলেও এ মৌসুমে পানি কমতে কমতে ৪০০ কিউসেকে গিয়ে দাঁড়ায়।
গত ১৩ এপ্রিল ব্যারাজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ বেড়ে দেড় হাজার কিউসেকে দাঁড়ায়। এতে সেচখালের আওতায় থাকা চাষিদের বোরো মৌসুমের শেষ দিকে কিছুটা উপকার হয়েছিল।
মাহবুবর রহমান জানান, গত বছরের মার্চে তিস্তা নদীতে পানির প্রবাহ তিনবার পরিমাপ করে ২৯১৫, ২৪৮৭ ও ২৯৫২ কিউসেক পাওয়া যায়। আর এ বছরের মার্চে তিনবার পরিমাপ করে পাওয়া যায় ৫৭৪, ৫৫৩ ও ৫৫০ কিউসেক।
তিস্তা ব্যারাজ নিকটবর্তী পূর্ব ছাতনাই গ্রামের হারুন-অর রশিদ জানান, সোমবার সন্ধ্যায় তিস্তা নদীতে হঠাৎ দেখতে পান উজান থেকে শোঁ শোঁ শব্দে পানি আসছে।
তিস্তাপারের ভাসানীর চরের মাঝি মফিজার রহমান (৪২) বলেন, ভারত হয়তো তাদের গজলডোবা ব্যারাজের গেট খুলে দিয়েছে, তাই পানির প্রবাহ বেড়ে গেছে। তিস্তা সেচখালের ধারের নাউতরা গ্রামের কৃষক বেলাল হোসেন ( ৪৩) জানান, হঠাৎ তিস্তা সেচখাল পানিতে ভরে গেছে।
লংমার্চের কারণে ভারত তিস্তায় কিছুটা পানি ছেড়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘এটা লংমার্চের প্রাথমিক সাফল্য। আমরা সাময়িক নয়, পুরোপুরি সফলতা চাই।’
ভারতের কাছ থেকে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে বিএনপির লংমার্চ চলাকালে মঙ্গলবার বিকেলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ মডেল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত পথসভায় মির্জা ফখরুল এ দাবি করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছেন, তাদের আন্দোলনের কারণে ভারত তিস্তা নদীতে পানিপ্রবাহ বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন এ পানির পরিমাণ দেড় হাজার কিউসেক, যা গতকাল পর্যন্ত ছিল ৪০০ কিউসেক।
নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান বলেন, এ মৌসুমে তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের ৬০ হাজার ৫০০ হেক্টর বোরো জমিতে সেচ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু সেচ দেওয়া যায় ৪০ হাজার ৫০০ হেক্টরে।