প্রাথমিকের পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফল তৈরিতে দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সে কারণে ফলাফলে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়। এর সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত, তিন বিভাগের তিনজন পরিচালক ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের (আইএমডি) একজন অতিরিক্ত পরিচালকসহ পাঁচজনের নাম উঠে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলে নানা ধরনের ত্রুটি শনাক্ত হয়। পরীক্ষা না দিয়েও অনেকে বৃত্তিপ্রাপ্তের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। ফলে কম নম্বর পেয়েও অনেকে বৃত্তি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ও বেশি নম্বর পেয়েও তালিকা থেকে বাদ পড়ে। প্রায় ৫ হাজারের মতো শিক্ষার্থীর ফলাফলে ত্রুটি দেখা যায়। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
সূত্র জানায়, সোমবার (১৩ মার্চ) দুই কমিটি মন্ত্রণালয়ে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে বৃত্তির ফলাফল তৈরির কাজে জড়িত চারজনের দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তার মধ্যে বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজন ও ফলাফল তৈরি কার্যক্রমের প্রধান ডিপিই মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত, পরিচালক (প্রশাসন বিভাগ) এস. এম. আনছারুজ্জামানসহ দুজন পরিচালক ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের (আইএমডি) সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট অনুজ কুমার রায়সহ পাঁচজনের নাম উঠে এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
জানা গেছে, অভিযোগ প্রমাণিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও বিভাগীয় মামলা করার সুপারিশ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের অঘটন না ঘটে সে জন্য সতর্কতামূলক কয়েকটি সুপারিশও করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন আমাদের কাছে জমা দিয়েছে। যারা বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলে ত্রুটির হওয়ার পেছনে দায়ীদের চিহ্নিত করেছে। যাদের অপরাধ প্রমাণিত করে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাসহ বিভাগীয় মামলার সিদ্ধান্ত দিয়েছি।
কী ধরনের ভুলের জন্য ফলাফলে এমন পরিবর্তন হয়েছে জানতে চাইলে সচিব বলেন, প্রতিবেদনের বিস্তারিত দেখিনি। আমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়েছি। এটার জন্য যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন তাদের দায়িত্ব পালনে অবহেলা ছিল। তারা সঠিকভাবে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো দেখেননি। এ জন্য যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সে জন্য কয়েকটি সুপারিশও করা হয়েছে।