অসহায় ও দুস্থদের মাঝে বিতরণের জন্য প্রতিবছর বাংলাদেশে দুম্বার মাংস পাঠায় সৌদি আরব সরকার। এবার ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন থেকে গৌরীপুর উপজেলায় ১৭ কার্টন মাংস পাঠানো হয়। কিন্তু সেই মাংস দুস্থদের মাঝে বিতরণ না করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ‘গোপনে ভাগাভাগি’ করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পবিত্র ঈদুল আজহার সময় ওই দুম্বাগুলো সৌদি আরবে কোরবানি দেওয়া হয়। বাংলাদেশে পাঠানো সেই মাংস প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দেশের গরিব-অসহায়দের মাঝে বিতরণ করে সরকার। উপজেলা পর্যায়ে এ দুম্বার মাংস বিতরণের ব্যবস্থা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গৌরীপুরের ইউএনও ফৌজিয়া নাজনীন এবার সেই মাংস স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাঝে রাতে ভাগ করে দিয়েছেন। তিনি নিজেও এক কার্টন নিয়েছেন।
ইউএনও ছাড়া সেই মাংসের কার্টন পেয়েছেন ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনের সরকারদলীয় এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ, উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মোফাজ্জল হোসেন খান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. সোহেল রানা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সালমা আক্তার রুবি, পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ও ১০টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। তারা সবাই একটি করে মোট ১৬টি কার্টন ভাগ করে নিয়েছেন। আরেকটি কার্টনের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, মো. নাজিমুদ্দিন ও মো, নুরুল আমীন জানান, প্রতিবছর দুম্বার মাংস বিতরণের বিষয়ে তাদের জানানো হয়। কিন্তু এ বছর তাদের কিছুই জানানো হয়নি। এ বছর অসহায়দের মাঝে দুম্বার মাংস বিতরণ না করে রাতে ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়েছে বলে জনশ্রুতি আছে।
এক কার্টন মাংস পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন সহনাটি ইউপি চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন কাদের রুবেল। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘দুম্বার মাংস পরিমাণে কম হওয়ায় কারও মাঝে বিতরণ করতে পারছি না। তাই ফ্রিজে রেখে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও ফৌজিয়া নাজনীন আমাদের সময়কে বলেন, গৌরীপুর উপজেলায় ২০ কার্টন দুম্বার মাংস বরাদ্দ থাকলেও তিনি বুঝে পান ১৭ কার্টন। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম থাকায় ১৩ মার্চ রাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এক কার্টন করে দুম্বার মাংস বুঝিয়ে দেন।