২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পযর্ন্ত দেশের বিভিন্ন জায়গা অনেকে অপহৃত হয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ মুক্তি পেয়েছেন। আবার কারও কারও লাশ পাওয়া গেছে। আবার কারও কারও এখন পযর্ন্ত কোনো হদিসই পাওয়া যায়নি। এদের মধ্যে প্রায় সবাইকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বরাবর।
গুম, নিখোঁজ আর লাশ হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা কেউ কেউ প্রিয়জন ফিরে আসবে আশায় বুক বেধে আছেন, আবার কেউ কেউ ধরেই নিয়েছেন তারা বেঁচে নেই। আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। যদিও নিখোঁজ হওয়ার পর বছর পেরিয়ে গেলেও তদন্ত করে কিছুই উদঘাটন করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায় ডাক্তার দেখিয়ে রিকশায় করে দক্ষিণ বনশ্রীর বাসায় ফিরছিলেন লক্ষীপুর জেলা যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক শামসুল ইসলাম সোলায়মান (৪০)। তার কোলে ছিল সাড়ে তিন বছরের শিশু সন্তান দিহান। আর পাশে বন্ধু শিপন। পেছনের রিকশায় ছিলেন তার স্ত্রী মায়া ও তার জা। উত্তরা জয়নাল মার্কেটের সামনে আসতেই বাধে বিপত্তি। একটি মাইক্রোবাস রিকশার সামনে এসেই ব্রেক কসে। থেমে যায় রিকশা। মুহূর্তেই এক দল অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে কোলের শিশুকে ছুড়ে ফেলে সোলায়মানকে মাইক্রোতে তুলে নিয়ে চলে যায়। ঘটনার সময় তার স্ত্রীসহ অন্যরা এ দৃশ্য দেখেছেন। কিন্তু অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তদের প্রতিহত করতে কেউ এগিয়ে যাওয়ার সাহস পাননি।
এরপর পরিবারের লোকজন ডিবি পুলিশ, র্যাব কার্যালয় এবং স্থানীয় থানাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু সব সংস্থা থেকেই বলা হয়েছে তারা ওই নামে কাউকে আটক করেনি। শনিবার সকালে লক্ষীপুর সদর উপজেলার বাসুরহাট এলাকা থেকে তার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।
সোলায়মানের স্ত্রী সালমা ইসলাম মায়া জানান, তারা উত্তরায় ডাক্তার দেখিয়ে দক্ষিণ বনশ্রীর ই ব্লকের ৮ নম্বর রোডের ৩৪ নম্বর বাড়িতে ফিরছিলেন। ওই মাইক্রোটি তাদেরকে আগে থেকেই অনুসরণ করে আসছিলো। যারা তার স্বামীকে নিয়ে গেছেন তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়েছেন। কিন্তু বিভিন্নস্থানে খোঁজা খুঁজি করেও গত দুই দিনেও তার সন্ধান মেলেনি। উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশও। অবশেষে লাশ পাওয়া যায় বাসুরহাটের রাস্তার উপর।
গত ২১ এপ্রিল রাতে কাফরুল এলাকা থেকে লোকজনের সামনে থেকে দুর্বৃত্তরা মাত্র ত্রিশ সেকেন্ডের মধ্যে কমান্ডো স্টাইলে ওয়ালিউল্লাহ (৪০) নামের এক যুবলীগ নেতাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান মেলাতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। থানা পুলিশ জানিয়েছে, তারা ওয়ালিউল্লাহকে উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন।
জানা গেছে, রাত ১০টার দিকে ওয়ালিউল্লাহ মিরপুর ১৩ নম্বর সেকশনের বি ব্লকের ৯ নম্বর লাইনের অপূর্ব ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে গল্প করছিলেন। ওর পাশেই ৪৫ নম্বর বাড়িতে ওয়ালিউল্লাহর বসবাস। এসময় একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস সেখানে এসে থামে। গাড়িটি পার্কিংয়ের মতো করে ওয়ালিউল্লাহর পাশে এসে থামে। একটু পরে গাড়ি থেকে নেমে আসে দুই যুবক। যুবকরা ওয়ালিউল্লাহর সামনে আসার সাথে সাথে গাড়ির দরজা খুলে যায়। আর তখনই ওয়ালিউল্লাহকে ধাক্কা মেরে গাড়ির মধ্যে ঢুকিয়ে নিজেরাও গাড়িতে উঠে যায়। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরে ওয়ালিউল্লাহর পরিবারের সদস্যরাও ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গেছে। অন্ধকারে গাড়িটির নম্বরও দেখতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ ঘটনার পরপরই ওয়ালিউল্লাহর বাবা শফি উল্লাহ কাফরুল থানায় একটি জিডি করেন। যার নম্বর ১৩৪১।
জিডির তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার এসআই মুকুল মিয়া জানান, ওয়ালিউল্লাহকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। কিন্তু কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
সোলায়মান ও ওয়ালিউল্লাহর মতো প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে অপহরণ-গুম ও নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা। গত চার বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। কখনো মুক্তিপণ আদায়, কখনো প্রতিশোধ নেয়া, আবার কখনো কখনো শায়েস্তা করতে ঘটছে এসব ঘটনা। অপহৃত ব্যক্তিদের তালিকায় রাজনৈতিক শীর্ষ নেতা, ছাত্র নেতা, ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষও রয়েছেন। এদের কেউ কেউ উদ্ধার হলেও অনেক ঘটনারই কোনো কুলকিনারা উদ্ধার করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দিনের পর দিন হদিস মিলছে না এসব মানুষের।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানা যায়, ২০১০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত অপহরণের মামলা হয়েছে তিন হাজার ৩৯১ টি। এর মধ্যে ২০১০ সালে ৮৭০ টি, ২০১১ সালে ৭৯২ টি, ২০১২ সালে ৮৫০ টি এবং ২০১৩ সালে ৮৭৯ টি অপহরণের ঘটনা ঘটে। চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে অপহরণের ঘটনা ঘটে ১৯৬ টি। জানুয়ারি মাসে ৬২ টি, ফেব্রুয়ানি মাসে ৫৫ টি এবং মার্চ মাসে ৭৯ টি অপহরণের ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রায় দুই মাস ধরে খোঁজ মেলেনি র্যাব পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত পানামা পোর্ট লিঙ্ক লিমিটেডের সিকিউরিটি সুপারভাইজার মফিজউদ্দিনের।
জানা গেছে, গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে হানিফ পরিবহনের একটি গাড়িতে কুষ্টিয়া যাওয়ার পথে ইসলামী ছাত্র শিবিরের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দুই নেতা অপহৃত হন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তাদেরকে অপহরণ করা হয়। সেই থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন তারা।
এছাড়া, ১৪ মার্চ হবিগঞ্জের মাধবপুরের বহরা ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সভাপতি বকুল খান নিখোঁজ হন। পরিবারের অভিযোগ, গোয়েন্দা পুলিশ তাকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় মামলা হলেও কোনো খোঁজ মেলেনি আজও।
গত বছর ২৭ নভেম্বর কুমিল্লা থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হন সাবেক এমপি এবং লাকসাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম হিরু ও পৌর বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন কবির পারভেজ। ঘটনার প্রায় ছয় মাস হতে চললেও তাদের কোনো হদিস মেলেনি এখনও।
গত বছর ২ অক্টেরবর রাজধানীর দক্ষিণখান থেকে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম। ২৬ অক্টোবর ফকিরাপুলের হোটেল অবসরের সামনে থেকে ফেনীর সারোয়ার জাহান বাবুল, ৮ নভেম্বর রাজধানীর সূত্রাপুর থেকে ব্যবসায়ী মমিন হোসেন, ২৪ অক্টোবর রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর ভাটাপা জামে মসজিদের ইমাম ও গোদাগাড়ী পালপুর ধরমপুর মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক আমিনুল ইসলাম অপহরণের শিকার হন।
এছাড়া গত বছরের ২ ডিসেম্বর পুরান ঢাকার সূত্রাপুর ও বংশাল থেকে সাদা পোশাকের পুলিশ ছাত্রদল কোতোয়ালি থানার সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রায়হান সেন্টু, বংশাল থানার সহ-সভাপতি সোহেল, ৭১ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি জহির ও সাধারণ সম্পাদক পারভেজ, ৭২নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ও কতোয়ালি থানা ছাত্রদলের সদস্য সাব্বির, বংশাল থানা ছাত্রদলের সদস্য চঞ্চল, ৭১ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সদস্য কালু, ৭০ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সদস্য ও কতোয়ালি থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক জাফরান হোসেন উজ্জল এবং ৭১ নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি ও বংশাল থানা ছাত্রদলের সদস্য সোহেলকে ধরে নেয়া হয়।
এদের মধ্যে ৭০ নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সদস্য ও কতোয়ালি থানা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক জাফরান হোসেন উজ্জল এবং ৭১ নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি ও বংশাল থানা ছাত্রদলের সদস্য মো. সোহেলকে শাহবাগে গাড়িতে আগুনের মামলায় শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। জহিরসহ বাকীদের খোঁজ নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
রাজধানীর পান্থপথ থেকে গত বছর ৪ ডিসেম্বর একই সময়ে ছয়জনকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নেয়া হয়। তাদেরও খোঁজ মেলেনি আজও। গত বছরের ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর দক্ষিণখানের প্রেম বাগান এলাকা থেকে অপহৃত হন ছাত্রদল নেতা নিজাম উদ্দিন মুন্না (২৪)। একদল অস্ত্রধারী নিজেদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে মুন্নাকে অপহরণ করে। মুন্নার সঙ্গে ঝিন্টু নামের আরো এক যুবককেও এসময় অপহরণ করা হয়। রাজধানীর বংশালের হাজী আব্দুল্লাহ সরকার লেনের বাসিন্দা জহির নিখোঁজ হয়েছেন। জহির স্থানীয় ছাত্রদলের একজন নেতা ছিলেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল অপহৃত হন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী এবং তার ব্যক্তিগত গাড়িচালক আনসার আলী। বহুল আলোচিত এ ঘটনারও দুই বছর পার হয়েছে, কিন্তু তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি। আজও পথ চেয়ে প্রতীক্ষার প্রহর কাটছে ইলিয়াসের বৃদ্ধ মা, অবুঝ সন্তান এবং প্রিয়তমা স্ত্রীর। এছাড়াও ওই দিন ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত থেকে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী রেজাউল করিম রিজভি। ৮ এপ্রিল রাজধানীর সূত্রাপুর এলাকা থেকে নিখোঁজ হন ব্যবসায়ী তারিব উদ্দিন আহম্মেদ। ১৫ ফেব্রুয়ারি শাহজাহানপুর থেকে দোকান কর্মচারী রফিকুল ইসলাম। ২৪ মে জিন্দাবাহার লেন এলাকা থেকে ব্যবসায়ী আয়নাল মোল্লা।
২০১২ সালের ২৬ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জের বোড়াশী পশ্চিমপাড়ার মান্দারতলা এলাকা থেকে অপহৃত হন উবায়দুর নামের এক যুবক। কালো পোশাকধারী লোকজন তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। একই দিন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানি উপজেলার দক্ষিণ ফুকরার মিল্টন বাজার এলাকা থেকে অপহৃত হন মাহবুব নামের অপর এক যুবক। এই ঘটনায়ও থানায় মামলা হয়েছে। কিন্তু উদ্ধার হয়নি মাহবুব।
২০১১ সালের ২১ অক্টোবর রাতে সাভারের নিজ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানী ঢাকার ৪১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী নূর মোহাম্মদকে। র্যাংবের পোশাকে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন। দীর্ঘ দিনেও তার সন্ধান মেলেনি। একই বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থেকে নিখোঁজ হন ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেতা একেএম শামীম আক্তার। ঘটনার প্রায় তিন বছর হলেও খোঁজ মেলেনি তার। ওই বছরের ৮ ডিসেম্বর রাজধানীর মিরপুর থেকে নিখোঁজ হন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কালাম শেখ, তার মামাতো ভাই আবুল বাশার শেখ, আব্দুল করিম ও আতাউর রহমান ওরফে ইস্রাফিল।
২০১১ সালের ১৭ নভেম্বর মালিবাগ থেকে অপহরণ করা হয় ভোলার আরিফ, জসিম, জুয়েল, শেখ সাদী, দিদার, আকাশ ও মিরাজকে। ২৮ নভেম্বর আশুলিয়া থেকে জসিমের লাশ উদ্ধার হয়। ২৮ নভেম্বর হাতিরপুল এলাকা থেকে নিখোঁজ হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সূর্যসেন হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও গবেষণা সম্পাদক শামীম হাসান সোহেল, ৫০ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি ইসমাইল হোসেন ওরফে আল আমিন ও সদস্য মাসুম হোসেন। ১০ দিন পর মুন্সিগঞ্জ থেকে উদ্ধার হয় ইসমাইলের গলিত লাশ। ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর সাভারের কাতলাপুর এলাকা থেকে নিখোঁজ হন ঢাকা মহানগর ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি নুর মোহাম্মদ। এরপর ৩ ডিসেম্বর থেকে নিখোঁজ হন নূর হাজির মেয়ের জামাই আব্দুল মান্নান ও তার বন্ধু ইকবাল হোসেন। ২০১১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গেন্ডারিয়া এলাকা থেকে নিখোঁজ হন তপন দাস।
সূত্র জানায়, ২০১০ সালের ২৫ জুন রাতে রাজধানীর ফার্মগেটের ইন্দিরারোড থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্য পরিচয়ে কে বা কারা ধরে নিয়ে যায় চৌধুরী আলমকে।
চৌধুরী আলমের স্ত্রী নাসিমা বলেন, “ঘটনার পর তারা বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু আজও সন্ধান মেলেনি চৌধুরী আলমের।”
ওই বছরের ১৭ এপ্রিল রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে অপহৃত হন ঝালকাঠীর রাজাপুর থানা যুবদল নেতা মিজানুর রহমান জমাদ্দার এবং তার দুই সহযোগী মুরাদ ও ফোরকান। কয়েকমাস পর ফোরকান বেরিয়ে এসে তাদের নিখোঁজ হওয়ার কাহিনী মিডিয়ার সামনে তুলে ধরেন। এর কয়েকদিন পরে আবারো নিখোঁজ হন ফোরকান। মিজানের কোন হদিস মেলেনি আজও। এরপর মিজানের শ্যালক মিজান শিকদার এবং তার ভাতিজা সুমনকেও একইভাবে গাজীপুর থেকে অপহরণ করা হয়। সে থেকে তারাও নিখোঁজ।
মিজানের স্ত্রী নাসিমা বলেছেন, “এখন ধরেই নিয়েছেন তারা আর বেঁচে নেই।”
এ প্রসঙ্গে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার সাংবাদিকদের জানান, কেউ অপহৃত বা নিখোঁজ হলে পুলিশের দায়িত্বই হচ্ছে তাদের উদ্ধার করা। এক্ষেত্রে অনেক সাফল্যও আছে। আবার যাদের এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, তাদের ব্যাপারে সব সময়ই পুলিশ তৎপর রয়েছে। তবে এ ধরনের সব ঘটনা সমান গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হয়।