যৌনসংগমকালে ব্যবহৃত এক প্রকার জন্মনিরোধক বস্তু। এটি মূলত গর্ভাধান ও গনোরিয়া, সিফিলিজ-এর মতো যৌনরোগের প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আধুনিক যুগে কনডম মূলত তরুক্ষীর থেকে প্রস্তুত করা হয়। তবে কনডম তৈরি ক্ষেত্রে অনেক সময় পলিআরথিন, পলিইসোথ্রিন বা ল্যাম্ব ইনসেসটাইনও ব্যবহৃত হয়।
মহিলাদের কনডমও পাওয়া যায়। জন্ম নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি হিসেবে কনডম অত্যন্ত সুলভ, সহজে ব্যবহার্য, কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ও যৌনব্যাধি প্রতিরোধে সর্বাধিক কার্যকর। কনডম প্রায় ৪০০ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ঊনবিংশ শতাব্দী থেকেই কনডম ব্যবহার সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় জন্মনিরোধ পদ্ধতি। আধুনিক সমাজে কনডমের ব্যবহার ব্যাপক মান্যতা লাভ করেছে।
তবে এর বহুবিধ সুবিধার পাশাপাশি শারিরীক, মানসিক, জৈবিক ও সামাজিক কিছু কুফল জানা থাকা ভালো।
গর্ভধারণ ঝুঁকি:
জন্মনিয়ন্ত্রণে কনডম খুব ফলপ্রসু মাধ্যম। তবে গবেষনায় দেখা গেছে, সঠিকভাবে পুরুষের কনডম ব্যবহার সত্ত্বেও ১০০ নারীর মধ্য অন্তত ২ জন নারী অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ করেছে। আর সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার হয়নি এমন ক্ষেত্রে ১০০ জনে ১৫ জন নারী গর্ভধারণ করেছে। পুরাতন কনডম সহজে ফেটে যেতে পারে। একইভাবে পেট্রোলিয়াম জেলির মত তেল মিশ্রিত কনডম দূর্বল এবং সহজে ভেঙ্গ যায়।
ল্যটেক্স এলার্জি:
রাবার গাছের রস থেকে প্রস্তুত রাবার-ল্যটেক্স দিয়ে অনেক কনডম তৈরি করা হয়। দ্য আমেরিকান একাডেমি অব এলার্জি আজথামা এন্ড ইমিউনিলজির তথ্য মতে, অনেকে রাবারের মধ্যে থাকা প্রোটিনের কারণে এলার্জিতে ভোগেন। তবে এ এলার্জির ধরণ ও মাত্রা সবার ক্ষেত্রে এক নয়।
বিভিন্ন রকম লক্ষণ দেখা দেয়। যেমনঃ
১. হাঁচি
২. রানি নোজ বা রাইনোরিয়া
৩. চুলকানি
৪. খসখসে ফাঁটা দাগের মত কিছু চুলকানি
৫. হাপানির মত শ্বাসকষ্ট
৬. ফোলা বা স্ফীত হওয়া
৭. মাথা ঘোরা
৮. মাথায় অস্বস্থি
৯. কিছু ক্ষেত্রে এই ল্যটেক্স এলার্জি এনাফাইল্যক্সিসের (মস্তিস্কপ্রদাহ) কারণ যা জীবননাশের ঝুকিপূর্ণ
এই তথ্যে আরও বলা হয়, যারা জন্মনিয়ন্ত্রণ করে তাদের ১০০ জনে ১ বা ২ জন ল্যটেক্স এলার্জিতে ভুগছেন।
প্রসঙ্গত, দ্য এএএএআই নামে এক সংগঠন ল্যটেক্স এলার্জির আশংকা থাকলে সিনথেটিক রাবার কন্ডম ব্যবহারের পরামর্শ দেয়।
এসটিডিএসের জন্য ফলদায়ক নয়:
কনডম এইচআইভি, সিফিলিস, ক্লামিডিয়া, গণরিয়া এবং এইচপিভির মত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারে। কিন্তু, স্ক্যবিস,মলাস্কাম,কস্টাজিওসামের মত বাহ্যিক যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে পারে না।
দ্য আমেরিকান হেল্থ এসোসিয়েশনের মতে, কনডম যৌনবাহিত ভাইরাস পোতিরোধ করতে পারে। কিন্তু ত্বক বাহিত ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে পারে না। তারা আরও বলেন, সব কনডম একই পদ্ধতিতে তৈরি হয় না। ন্যচারাল স্কিন কনডম (ল্যম্বস্কিন) জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও এইচআইভি বা এসটিডিকে প্রতিরোধ করতে পারেনা।
যৌনসঙ্গীর অস্বস্তি
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কনডমের ব্যবহারে যৌনসঙ্গী যৌনসুখ পায় না। তারা তৃপ্তির জন্য কনডম ব্যবহারে বাঁধা দেয়। এমনকি পুরুষ নিজেও পরিপূর্ণ পুলোক অনুভব করেনা। এমনকি কনডমের ব্যবহার নারী রোমান্টিকতার দায় দেখিয়ে পুরুষের সঙ্গ ত্যাগ করে।
এছাড়া কনডমের আরও কিছু কুফল আছে। যেমন:
১. জন্মনিয়ন্ত্রণে মেয়েদের স্বাধীনতা থাকে না। পুরুষের ওপর নির্ভর করতে হয়।
২. কনডম ব্যবহারে বিবাহ বহির্ভূত অসামাজিক কর্মকান্ড বেড়ে যায়। পুরুষ পতিতাদের সাথে যৌনসঙ্গম করতে উদ্বুদ্ধ হয়।
৩. কনডম অনেক নারী-পুরুষের উত্তজনা কমিয়ে দেয়।
৪. অনেক পুরুষ কনডম পরলে উতত্তজিত হতে পারেনা
৫. যৌন উত্তেজনা কিছুটা হলেও কমিয়ে দেয়।
৬. রাবারের ঘর্ষণে নারীর উত্তেজনা করিয়ে দেয়।
৭.কনডম পরে অনেক পুরুষ চাপ অনুভব করে।
৮. কিছু নারী অতিরিক্ত ঘর্ষণ অনুভব করে।
সূত্র: অনলাইন