ঢাকাঃ এবার একজন বিদেশি তৈরি পোশাক ক্রেতাকে (বায়ার) লাঞ্ছিত করেছে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-শিবির কর্মীরা। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় এ ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জামায়াত-শিবিরের আক্রমণের মধ্যে পড়ে ওই বিদেশি ক্রেতার লাঞ্ছিত হয়েছেন। পক্ষান্তরে এ ঘটনায় দেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে বলে মনে করছে পোষাক শিল্প মালিকরা। বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান এবিনিউজকে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, স্পেনের এ ক্রেতা প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৪ কোটি ডলারের নিট পোশাক আমদানি করেন। এদিকে আজ এক বিবৃতিতে বিকেএমইএ বলেছে, রাজনৈতিক পরিচয়ধারী উচ্ছৃঙ্খল একদল ব্যাক্তি বিদেশি ক্রেতার গাড়ি ভাংচুর করে এবং তাকে লাঞ্ছিতও করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর মেরুল বাড্ডা কাচাঁবাজারের সামনে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা হঠাৎ ঝটিকা মিছিল বের করে সড়কে কয়েকটি গাড়িতে ভাংচুর চালায়। তখন পুলিশ গিয়ে ফাঁকা গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার নুরুল আলম জানিয়েছেন।
সেলিম ওসমান জানান, ওই পোষাক ক্রেতা অর্ডার দিতে ফতুল্লায় তারই কারখানায় যাচ্ছিলেন। পথে মেরুল বাড্ডায় তিনি সংঘাতের মধ্যে পড়েন। থকন ওই এলাকায় মহাড়কে গাড়িতে ভাংচুর চালাচ্ছিল জামায়াত-শিবিরকর্মীরা। স্থানীয় পুলিশ জানায়, বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগের মধ্যেই আজ এ সংঘাতের মধ্যে পরে লাঞ্ছিত হলেন এ বিদেশি ক্রেতা।
সেলিম ওসমান বলেন, বড় অঙ্কের অর্ডার দিতে তিনি গত সাতদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছিলেন। নিরাপত্তার স্বার্থে ওই বিদেশির নাম প্রকাশ করেননি তিনি। তিনি বলেন, ভয় পেয়ে আজ সন্ধ্যায় তিনি ঢাকা ছেড়েছেন। এ ঘটনা দুঃখজনক। একজন বিদেশি ক্রেতাকে নিরাপত্তা দিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। এতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। অর্ডার না দিয়ে ফিরে যাওয়ার এ সিদ্ধান্তের কারণে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানটি যেমন অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তেমনি দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে সবাইকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়েছে বিকেএমইএ।
বিকেএমইএ সভাপতি বলেন, পোশাক খাত নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগের মধ্যে এ ঘটনা দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাতের ওপর এবং সামগ্রিকভাবে দেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অন্যদিকে বিকেএমইএর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই ক্রেতা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে ঘটনাস্থল থেকেই গুলশানে হোটেলে ফিরে যান। তিনি দেশে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
বিদেশি কারো গাড়ি ভাংচুর হয়েছে কি না- জানতে চাইলে গুলশান জোনের এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, জামায়াত-শিবিরের উশৃঙ্খল কর্মীরা আজ অনেকগুলো গাড়ি ভাংচুর করেছে। এর মধ্যে ওই ক্রেতার গাড়িটিও রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে এখনো থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
Next Post