ঢাকা: সম্প্রতি মিয়ানমার সীমান্তে নিহত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান হত্যার বিচার চাইবে বাংলাদেশ।
আগামী ১০ জুন মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোতে অনুষ্ঠেয় দেশটির সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) প্রধান মেজর জেনারেল জ উইনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে এ দাবি জানানো হবে। হত্যার বিচার চাওয়ার বিষয়টি রোববার সন্ধ্যায় বাংলামেইলকে নিশ্চিত করেছেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।
বিজিবি সদর দপ্তরের একটি সূত্র আরো জানিয়েছে, বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে সীমান্ত সম্মেলন আগামী ১০-১৩ জুন পর্যন্ত চলবে।
এ লক্ষ্যে আগামীকাল সোমবার বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আব্দুল আজিজের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল ঢাকা ছাড়বে। বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও রয়েছেন বলে জানিয়েছে বিজিবি সূত্র।
অপরদিকে, সীমান্ত সম্মেলনে চিফ অব মিয়ানমার পুলিশ ফোর্স, পুলিশ মেজর জেনারেল জ উইনের নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশ নেবে। তাদের প্রতিনিধিদলে বিজিপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, মাদক ও কাস্টমস বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থাকবেন।
সম্মেলনে বিজিবির পক্ষ থেকে মিজান হত্যার বিচার ছাড়াও ৬টি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে-
সীমান্তের অপর প্রান্ত থেকে নেশাজাতীয় দ্রব্য বিশেষ করে ইয়াবা ও মদ পাচার প্রতিরোধ, উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বিভিন্ন স্তরের কমান্ডারদের মধ্যে সরাসরি টেলিফোন/মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন, সীমান্ত এলাকায় গুলি বিনিময়ের ঘটনা, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা চালুকরণ, নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি জেলেদের সমস্যাদি নিরসন এবং পারস্পরিক আস্থা বৃদ্ধির পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।
আগামী ১২ জুন সীমান্ত সম্মেলনে আলোচনার যৌথ দলিল জেআরডি (জয়েন্ট রেকর্ড অব ডিসকাশন্স) স্বাক্ষরিত হবে। সীমান্ত সম্মেলন উপলক্ষে মিয়ানমার সফরকালে বিজিবি মহাপরিচালক দেশিটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অথবা উপ-মন্ত্রী এবং ইমিগ্রেশন ও ন্যাশনাল রেজিস্ট্রেশন বিভাগের মহাপরিচালকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মে সকালে বিজিবির সদস্যরা বাংলাদেশ সীমান্তের (নাইক্ষ্যংছড়ি-মিয়ানমার সীমান্তে) ৫২ নম্বর পিলারের কাছে পাইনছড়ি এলাকায় টহল দেয়ার সময় মিয়ানমারের ১ নম্বর সেক্টরের ভেন্ডুলা বিজিপি (বর্ডার গার্ড পুলিশ) ফাঁড়ির সীমান্তরক্ষীরা গুলিবর্ষণ করে। এতে বিজিবি সদস্য নায়েক সুবেদার মিজানুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী তার মরদেহ নিয়ে যায়। চারদিন বোঝাপড়া শেষে নিহতের মরদেহ হস্তান্তর করে বিজিপি। এরপর পতাকা বৈঠকে নিহত মিজানের অস্ত্র ফেরত দেয় বিজিপি।