ঢাকা: মিরপুরের কালশীতে বিহারী ক্যাম্পে হামলা, সংঘর্ষ ও শিশুসহ ১০ খুনের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলাসহ দু’টি ও এলাকাবাসী বিহারীদের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা দায়ের করেছে। রোববার রাতে মামলা ৬টির তদন্তভার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
পল্লবী থানার এসআই মনিরা আক্তার বাংলামেইলকে জানান, পল্লবী থানায় হত্যা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের অভিযোগে ছয়টি মামলা হয়েছে।
শনিবার রাত সোয়া ১২টায় পুলিশের দায়ের করা হত্যা মামলায় (যার নম্বর ৩২) অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। পল্লবী থানার এসআই মমিনুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় বলা হয়, অজ্ঞাতনামা আসামিরা কুর্মিটোলা বিহারী ক্যাম্পে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না করায় পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেছে। মামলায় আগুনে পুড়ে একই পরিবারের ৯ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত আজাদকে ‘ত্রিমুখি সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ… চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে শনিবার রাত ৯টায় পল্লবী থানার এসআই জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারায় একটি মামলা (যার নম্বর ৩১) দায়ের করেন। মামলায় ৯ বিহারীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১২শ’ থেকে ১৩শ’ নারী-পুরুষকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় নাম উল্লেখ করা আসামিরা হলেন- বিহারী আজাদ, আরিফ, জুয়েল, সাব্বির, বদুরউদ্দিন, নাসিম, সীমা, ফরিদ ও নবীর হোসেন।
মামলায় বলা হয়, বিহারীদের দুই ক্যাম্পের মধ্যে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ দেয়াকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলছিল। পরে শনিবার রাতে বিহারী ক্যাম্পের প্রায় দেড় হাজার নারী-পুরুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে পথচারীদের ওপর হামলা, রাস্তায় গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ মারামারি ও হানাহানি করেছে।
পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৫১০ রাউন্ড গুলি, ১৩৪টি টিয়ারশেল ও ৬০টি সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য পুলিশ বাদী হয়ে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ নম্বর ধারায় (অন্তর্ঘাতমূলক কার্য সম্পাদন ও সম্পত্তির বিনাশ সাধন) মামলা দায়ের করেছে।
এদিকে শনিবার রাতে আতশবাজিকে কেন্দ্র করে বিতণ্ডার জেরে ক্যাম্পের পাশে ১০ নম্বর লাইনের ৫ নম্বর বাসায় ৮/১০ জন বিহারী সশস্ত্র হামলা চালায়। এ ঘটনায় রাতেই বাসার গৃহকর্তা জয়নাল আবেদিন অপু বাদী হয়ে ৬ বিহারী যুবকের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।
মামলায় আসামিরা হলেন- বিহারী যুবক মুরাদ, রনি, আরজু, ইলু, নীলা ও রুবেল। বাদী অভিযোগে বলেন, আসামিরা বাসায় প্রবেশ করে তার স্ত্রী ইশরাত পারভীন মুন্নী, ভাগ্নে সিয়াম, বোন সালমা ও তার স্বামী সাত্তারকে মারধর করে। এ সময় তারা একটি স্বর্ণের চেনও নিয়ে যায়।