ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আমি বিরোধীদলীয় নেতা নই। আমি দেশের জনগণের নেতা। তাই আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে আমার সঙ্গেই কথা বলতে হবে।’
সংবাদপত্রের ‘কালো দিবস’ উপলক্ষে সোমবার রাতে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপিপন্থি সাংবাদিকদের একাংশ দেখা করতে এলে তিনি এ কথা বলেন।
‘এখন সে (খালেদা জিয়া) লিডার অফ দি অপজিশন নয়। তার কোনো অফিসিয়াল স্ট্যাটাস নাই।’ চীন সফর শেষে সংবাদ সম্মেলনে সংলাপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন বক্তব্যের জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আপনি কীসের প্রধানমন্ত্রী? আপনি তো নির্বাচিত নন, আপনার স্পিকার নির্বাচিত নয়। আপনি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী।’
বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি বিরোধী দলের নেতা নই। আমি জনগণের নেতা। দেশের ৯৫ শতাংশ জনগণ আমার পক্ষে। যদি গত ৫ জানুয়ারি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতো তাহলে আমি বিরোধীদলীয় নেতা নই, সংসদ গঠন করতাম। কাজেই আলোচনা যদি করতে হয় আমার সঙ্গেই করতে হবে। কারণ আমি জনগণের নেতা।’
বেগম জিয়া বলেন, ‘হায়েনা ও খুনিদের হাত থেকে দেশকে রক্ষ করতে হবে। কারণ সরকার র্যাবকে দিয়ে দেশের সব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করাচ্ছে। র্যাব বর্তমানে টাকার বিনিময়ে মানুষ হত্যা করছে। সুতরাং র্যাবকে বিলুপ্তি করতে হবে।’
শেখ হাসিনা সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘হাসিনা গডফাদারদের মাদার হয়ে থাকতে চান। এই কারণে তিনি সব সময় খুনিদের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। জনগণের পক্ষে তিনি কথা বলেন না।’
বিহারী ক্যাম্পের হত্যার প্রসঙ্গে বিএনপির নেত্রী বলেন, ‘স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু তাকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘আজ হত্যাকাণ্ডের বিচার হোক আর না হোক, একদিন এসব মানবতাবিরোধী হত্যার বিচার করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারকে বিদায় করতে কে বড় আর কে ছোট তা ভাবার এখন সময় নেই। এখন দেশে ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করে দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।’
বেগম জিয়া বলেন, ‘গণতন্ত্র ছাড়া সংবাদপত্রের স্বাধীনতা অর্থহীন। যেখানে গণতন্ত্র নাই সেখানে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘আজ সাংবাদিকদের একটা অংশ সংবাদপত্রের কালো দিবস পালন করছে। অথচ এই দিবসটি সব সাংবাদিকদের দল মতের ঊর্ধ্বে উঠে পালন করা উচিৎ।’
বৈঠকে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আরএ গনি, তরিকুল ইসলাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল হাই সিকদার, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সাংবাদিক নেতা খুরশীদ আলম, দিদারুল আলম, আব্দুস শহীদ, রফিক মোহম্মদ প্রমুখ।