১৪ ওষুধ কোম্পানির ভাগ্য নির্ধারণ রোববার

0

medicineঢাকা: ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ইতিমধ্যে এমন প্রতিষ্ঠানের একটি কালোতালিকা প্রস্তুত করেছে সরকার। এমন ১৪টি প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে আগামীকাল রোববার স্বাস্থ্যবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা রয়েছে।

অভিযুক্ত ১৪টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- অয়েস্টার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ব্রিস্টল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ইনোভা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, এজটেক ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ফার্মিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, সনিপুন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, মিল্লাত ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, রেমো কেমিক্যালস লিমিটেড, স্ট্যান্ডার্ড ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, ইউনিভার্সাল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, বেলসেন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, সেইভ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ইউনিক ফার্মাসিউটিক্যালস ও নর্থ বেঙ্গল ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাংলামেইলকে বলেন, ‘যত ক্ষমতাশীল প্রতিষ্ঠান হোক না কেন এই ধরনের কোনো কাজকে বরদাশত করা হবে না। কাল (রোববার) মিটিং আছে এর পরে ব্যবস্থা। তারা ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ বানিয়ে জাতিকে পঙ্গু করে ফেলবে আর আমরা বসে বসে দেখবো এটা হতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের একটি রিট থাকায় অনেক চলমান সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।’

এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘এই ওষুধ শরীরের যে রোগের জন্য খাওয়া হচ্ছে, তার কাজ হচ্ছে না। এতে টাকা গচ্চা যাচ্ছে। একই সঙ্গে লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক ও অস্থিমজ্জা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, নিম্নমানের ওষুধ খেয়ে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রতিকার পাওয়ার সুনির্দষ্ট আইনও নেই বাংলাদেশে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পকে এগিয়ে নিতে হলে সরকারকে কঠোর হতে হবে। মান নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে কার্যকর ব্যবস্থা। আর তাতে মানুষও জীবন রক্ষাকারী ওষুধের ওপর আস্থা পাবে।

উল্লেখ্য, মহাজোট সরকারের আমলে স্বাস্থ্যবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ৩ নম্বর উপকমিটির ওষুধ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা ওই ১৪টি প্রতিষ্ঠানের কারখানা পরিদর্শন করেছিলেন। উপকমিটির নেতৃত্বে ছিলেন নাজমুল আহসান এমপি।

কমিটির সদস্যরা ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৭৩টি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কারখানা দু’দফা পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শন-পরবর্তী সুপারিশে বলা হয়েছিল, এসব প্রতিষ্ঠানের কারখানার পরিবেশ অত্যন্ত নাজুক; তৈরি ওষুধের কার্যকারিতা, মান ও স্থায়িত্ব যথাযথ নয়। সুপারিশ পাঠানোর আগেই ওই ২৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫টির লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়।

তবে উৎপাদন সাময়িক বন্ধ, কারণ দর্শানো নোটিশ, কঠোর নজরদারি এর মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কার্যক্রম। গত প্রায় ৫ বছর ধরেই চলছে এই তালবাহানা। সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওপর সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা গেছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More