সিলেট: শুধু সাংবাদিকদের গালিগালাজই নয়, সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী এমপি ছোট ছোট স্কুল শিশুদের অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে ধুমপান, সরকারি অনুষ্ঠানে গিয়ে জম্পেশ ঘুমিয়ে পড়ার নজিরও সৃষ্টি করেছেন।
এছাড়া তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাইতেও যথেষ্ট পটু!
গত ১৬ এপ্রিল একটি বিয়ে অনুষ্ঠানে গিয়ে কনের মঞ্চে উঠে কনেকে নিয়েই গান গেয়েছেন সৈয়দ মহসিন আলী। শুধু বিয়ের অনুষ্ঠানেই তিনি গান গাননি। মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে তিনি ঢাকা-সিলেট, তার জন্মস্থান মৌলভীবাজারে প্রায় অনুষ্ঠানেই দর্শকদের গান শুনিয়ে মাতিয়ে তোলেন। তবে বেশিরভাগ সময়ই তিনি আঞ্চলিক ভাষায় গান গান।
এ বছরের ১৬ এপ্রিল একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে কনের মঞ্চে উঠে কনেকে নিয়েই মন্ত্রীর গান গাওয়ার একটি ভিডিও ফুটেজ ইউটিউবে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়- তিনি আঞ্চলিক ভাষায় গান গাইছেন। কনের পাশে কনেকে নিয়ে গান গাওয়ার সময় উপস্থিত সবাই মন্ত্রীর সঙ্গে সুর মেলানোর চেষ্টা করছেন- এমনটাই দেখা যায় ওই ভিডিওতে। আর ‘গায়ক’ মন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে কনেকে হাসতে দেখা যায়।
ভিডিওতে দেখা যায়- মন্ত্রী ‘ডেকেরও ভিতরে ডাইলে-চাইলে উতলাইলো গো সই/সেই উতলানি মোরে উতাইলি রে/শ্যাম-পিরিতি মোর অন্তরে’ এই আঞ্চলিক গানটি গাইছেন।
তবে সমাজকল্যাণমন্ত্রী মহসিন শুধু বিয়ের অনুষ্ঠানেই গান পরিবেশন করেননি। মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর বিয়ের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একাধিকবার গান গেয়েছেন তিনি। এমনকি অনেক অনুষ্ঠানে গান গেয়ে তিনি আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণতও হয়েছেন।
মন্ত্রীত্ব পাওয়ার পরপরই, গত ২২ জানুয়ারি আবেগাপ্লুত মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসিন আলী তার সম্মানে শ্রীমঙ্গল চৌমুহনা চত্বরে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গান গান ।
গত ২ জুন, সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি মিলনায়তনে এক সম্মাননা অনুষ্ঠানে তিনি গান পরিবেশন করেন। পর পর দুটি গান পরিবেশন করেন সৈয়দ মহসিন আলী। তখন মন্ত্রীর সঙ্গে সুর মেলান উপস্থিত সবাই।
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ তিনি গত শনিবার সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে আদিবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষে এক আলোচনায় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রতি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে মন্ত্রী বলেন, ‘এরা সবকটা খবিশ, চরিত্রহীন! স্বাধীন কমিশন হলে পরে দেখে নেবো তোমরা (সাংবাদিকেরা) কতটুকু যেতে পারো!’
মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পর কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসছে!
জানা যাচ্ছে, মহসিন আলীর অনেক অজানা তথ্য। যেমন, তিনি কলকাতায় সারেং বাবার জাহাজঘাটের কাছে একটি খ্রিস্টান মিশনারিজে ইংলিশ মিডিয়ামে ৭ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ালেখা করে ১৯৬৭ সালে মৌলভীবাজারে সরকারি স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং ১৯৬৮ সালে বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। কিন্তু বিগত ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে তার নির্বাচনী হলফ নামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা লিখেছিলেন এসএসসি। তবে কোন বোর্ডের অধীনে কোন স্কুল থেকে এসএসসি দিয়েছেন তা উল্লেখ নেই। আবার জাতীয় সংসদের গেজেটে লিখেছেন এমবিএ!