‘নন্দিত জাতি নিন্দিত গন্তব্যে’ কারাগারে বসে লেখা বই নয় বলে দাবি করেছেন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মেঝো ছেলে শামীম সাঈদী।
শামীম সাঈদী প্রতিবাদ লিপিতে বলেন প্রকৃত বিষয় হচ্ছে, ‘২০০৯ সালের প্রথমদিকে আমার আব্বা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ‘নন্দিত জাতি নিন্দিত গন্তব্যে’ নামক বইটি লেখার কাজ শেষ করেন। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারনে বইটি তখন প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে আমার আব্বা সরকারের রাজনৈতিক রোষানলে পড়ে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ হাস্যকর এক মামলায় গ্রেফতার হন। সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য আমার আব্বার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগে বানোয়াট মামলা দায়ের করে দীর্ঘদিন কারাগারে আটক করে রেখেছে। ফলে তার পক্ষ্যে বইটি আর প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারীর বই মেলাকে উপলক্ষ্য করে আমরা ‘নন্দিত জাতি নিন্দিত গন্তব্যে’ বইটি প্রকাশের উদ্দ্যোগ নেই এবং বিভিন্ন সুধীজনের আর্থিক সহযোগিতায় বইটি প্রকাশ করি।’
প্রতিবাদ লিপিতে তিনি বলেন, ‘নন্দিত জাতি নিন্দিত গন্তব্যে’ বইটির ৫ পৃষ্টায় ‘অনুলেখকের কথা’ শিরোনামের ৩য় প্যারায় সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে বইটি কখন কিভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। পাঠকের জ্ঞাতার্থে আমি উল্লেখিত বক্তব্যটুকুন এখানে হুবহু তুলে ধরছি।
“….. তাঁর অপ্রকাশিত গ্রন্থসমূহ প্রকাশে আমরা আন্তরিক, কিন্তু অনুকুল পরিবেশের অভাব। আমরা যারা তাঁর একান্ত কাছের, তাঁকে কারাবদ্ধ করার পরে আমরা সকলেই নিরাপত্তাহীন। তাঁর আপনজন হবার অপরাধে (?) কারাগার ও আত্মগোপনই হয়েছে আমাদের নিয়তি। এসব নানাবিধ কারণে আমার প্রতি আব্বা যে দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, তা পালন করতে পারিনি অর্থাৎ আব্বার অপ্রকাশিত গ্রন্থসমূহ প্রকাশ করতে পারিনি। প্রতিটি গ্রন্থ প্রকাশ হবার পূর্বে শেষবারের মতো আব্বা যে শ্রমদান করেন, এ গ্রন্থটির ক্ষেত্রে তিনি সে শ্রম দিতে পারলেন না। কারাগারের সুউচ্চ দেয়াল ও ফাঁসির সেল তাঁকে সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত রাখলো। গ্রন্থটি প্রকাশ হবার পূর্বে শেষবারের মতো তিনি গ্রন্থটি দেখতে পারলে আরো তথ্য সমৃদ্ধ ও সুন্দর হতো- এটি আমার অভিজ্ঞতা লব্ধ বিশ্বাস।”
‘নন্দিত জাতি নিন্দিত গন্তব্যে’ বইয়ের কোথাও উল্লেখ করা হয়নি যে, বইটি কারাগারে বসে লেখা। এরপরও সাংবাদিকরা আমাদের সাথে কোনরূপ যোগাযোগ না করে উপরিউক্ত কল্পিত শিরোনামে ভিত্তিহীন রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন এবং নামোল্লেখ না করে কিছু আইনজ্ঞের উদ্ধৃতি দিয়ে সরকার ও জেল কোডের বিধি বিধান লঙ্গনের মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, যা আমাদের পরিবারের মান-সম্মান ক্ষুন্ন করেছে। বইটি জাতি হিসেবে ও জাতি গঠনে মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কে বিষদ আলোচনা করা হয়েছে, সেখানে সরকার বা রাষ্ট্রবিরোধী কোন কথা না থাকার পরও শুধুমাত্র হিংসা ও ক্ষোভ ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই সংশ্লিষ্ট রিপোর্টার রিপোর্টটি তৈরী করেছেন বলে আমরা মনে করছি।
প্রতিবাদ লিপিতে তিনি বলেন, ‘নন্দিত জাতি নিন্দিত গন্তব্যে’ বইটির বিরুদ্ধে ধর্মীয় উত্তেজনা ও জঙ্গীবাদ উসকে দেয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন, যা সর্বৈব মিথ্যা ও বানোয়াট। বরং আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি, সকল পাঠকের হাতে পৌছাতে পারলে বইটি জাতি গঠনে ও মুসলিম উম্মাহর হারানো ঐতিহ্য ও গৌরব এবং মুসলিম উম্মাহকে নন্দিত পথে ফিরিয়ে আনতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।