গাজায় গণহত্যাঃ বিবেকের জিজ্ঞাসা শীর্ষক আলোচনা সভায় ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মাওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী বলেছেন, গাজায় ফিলিস্তিনী জনগণের উপর যায়নবাদী ইসরাইলের গণহত্যার ব্যপারে কোন মুসলমান নির্বিকার থাকতে পারে না। হাদীস শরীফের ভাষা অনুযায়ী বিশ্বের সকল মুসলমান একই দেহের বিভিন্ন অঙ্গের ন্যায়। দেহের একটি অঙ্গ আক্রান্ত হলে বাকি অঙ্গগুলো ব্যথায় কাতরায়। কাজেই ফিলিস্তিনী মুসলমানদের উপর গণহত্যার ব্যাপারে নীরব থাকার সুযোগ কারো নাই।
তিনি বলেন, আরব লীগ, ওআইসিসহ আরবদেশগুলোর নীরব ভূমিকা বড়ই বেদনাদায়ক। পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলো এই সুযোগে তাদের জারজ সন্তান ইসরাইলকে মদদ দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় সাধারণ মুসলিম জনগণই দেশে দেশে ইসলামী গণজাগরণের মাধ্যমে গাজার হত্যাকান্ড বন্ধ করা এবং দীর্ঘদিনের অবরোধ তুলে নিতে বিশ্ববিবেককে জাগ্রত এবং বিশ্বের সরকারসমূহকে বাধ্য করতে পারে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের উদ্যোগে পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে গাজায় গণহত্যা : বিবেকের জিজ্ঞাসা শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আন্দোলনের আমীর ড. মাওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় অংশ নেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি এডভোকেট নূরুল হক মজুমদার, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা এরশাদ উল্লাহ ভূইয়া, দৈনিক ইনকিলাবের সহকারী সম্পাদক জনাব আব্দুল আউয়াল ঠাকুর, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান এডভোকেট আব্দুল মোবিন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগরীর সভাপতি অধ্যাপক এটিম হেমায়েত উদ্দীন, এনডিপির মহাসচিব জনাব আলমগীর মজুমদার ও ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা রুহুল আমীন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের জয়েন্ট সেক্রেটারী অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান।
ড. শাহেদী আরো বলেন, এই জাগরণই একদিন সত্যিকার ইসলামী ঐক্য সৃষ্টি করতে পারে। বাংলাদেশ থেকে প্রবল জনমত গঠন করাই হবে গাজার যুদ্ধরত ভাইদের প্রতি সর্বোত্তম সহযোগিতা। এ উদ্দেশ্যে যে যেখানে আছেন গাজায় গণহত্যার ব্যাপারে ছোট-বড় বিভিন্ন আকারে সভা সমাবেশ ও আলোচনার ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবী। এ ক্ষেত্রে মূল কথা হচ্ছে, সামর্থের সবটুকুন ঢেলে দিয়ে আল্লাহর পথে অবিচল থাকা।
মওলানা আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, দূর্ভাগ্যজনক হচ্ছে ফিলিস্তিনীদের উপর এমন নির্যাতন সত্তেও ওআসি, আরব লীগ বা আরব রাষ্ট্রগুলো কোন ভূমিকা পালন করছে না। আব্দুল আউয়াল ঠাকুর বলেন, শুধু গাজা নয় মুসলমানদের বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় নূন্যতম ভিত্তিতে ঐক্য প্রয়োজন। কারণ কুরআন-সুন্নাহর আদর্শ বাস্তবায়নে সামর্থের সবটুকু কাজে লাগানো উচিত। আলমগীর মজুমদার বলেন, গাজার নির্যাতিতদের জন্য প্রকাশ্য ফান্ড সংগ্রহ এবং গণজাগরণ গড়ে তুলার জন্য এখনই উদ্যোগ নেয়া দরকার। এটিম হেমায়েত উদ্দীন বলেন, আমরা ইসলামের দোহাই দিয়ে ঐক্যের পরিবর্তে ভাগ করে ফেলেছি। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে আমাদের বিবেক মরে গেছে।
মওলানা জাফরুল্লাহ খান বলেন, ঐক্য গড়ে তোলার জন্য সম্মিলিত মিছিল আয়োজন সময়ের দাবী। এডভোকেট আব্দুল মুবিন বলেন, শুধু ঐক্যই যথেষ্ট নয়, ঐক্য হতে হবে আদর্শিক। এডভোকেট নূরুল হক মজুমদার বলেন, মুসলিম বিশ্ব বর্তমানের মত কঠিন সমস্যার সম্মুখীন আর হয়নি। রাজত্ব রাজাবাদশার গদি রক্ষার জন্য গাজার ভাইদের সমর্থন দিবেন না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুসলমানরাই বিজয়ী হবে।
Next Post