গোপন প্রেম-বিয়েতে নায়িকাদের ভরাডুবি

0

image_67630_0সেলিব্রেটিদের গোপন প্রেম-বিয়ের খবর নতুন কিছু নয়। হলিউড, বলিউড, টালিউড এবং ঢালিউডেও বার বার এ ঘটনা ঘটছে। এতে তারকাদের লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। গোপন প্রেম-বিয়েতে ক্যারিয়ারের ভরাডুবি ঘটেছে এমন ক’জন তারকাকে নিয়ে লিখে 
শাবনাজ : ১৯৯১ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার এহতেশামের হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসেন শাবনাজ। এ নায়িকার প্রথম চলচ্চিত্র ‘চাঁদনী’। এটি ব্যাপকভাবে ব্যবসা সফল হয় এবং প্রথম অভিনয়ে রাতারাতি তারকা বনে যান শাবনাজ। এরপর জনপ্রিয়তার পথে হেঁটে প্রায় ২০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং প্রশংসা পান। কিন্তু প্রথম চলচ্চিত্র ‘চাঁদনী’তে অভিনয় করতে গিয়ে সহশিল্পী নাঈমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে থাকা অবস্থায় ১৯৯৬ সালে নাঈমকে বিয়ে করেন শাবনাজ। এই বিয়ে তার অভিনয় জীবনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ছিটকে পড়েন চলচ্চিত্র থেকে। এতে দর্শক-নির্মাতার পছন্দের নায়িকা হিসেবে শাবনাজের অপমৃত্যু ঘটে বলে অভিযোগ করেন চলচ্চিত্রকাররা।

পূর্ণিমা : নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে চলচ্চিত্রে আসেন মিষ্টি মেয়ে পূর্ণিমা। শুরু থেকেই অপ্রতিরোধ্য জনপ্রিয়তায় এগিয়ে চলেন তিনি। সব শ্রেণীর দর্শকের পছন্দের এই নায়িকার জনপ্রিয়তা যখন তুঙ্গে তখনই ২০১০ সালে চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। এরপর থেকে তার অভিনয় জীবনে ভাটা পড়ে। নির্মাতারা পূর্ণিমার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। সংসারকে সময় দিতে গিয়ে অভিনয় থেকে প্রায় বিদায় নিতে হলো তাকে। চলচ্চিত্রকাররা বলেন, শিল্পী সংকটকালে এ ধরনের আত্দঘাতী সিদ্ধান্ত নেওয়া মোটেও উচিত হয়নি পূর্ণিমার।

শাবনূর : ১৯৯৩ সালে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার এহতেশাম চলচ্চিত্রে আনেন শাবনূরকে। তার প্রথম চলচ্চিত্র ‘চাঁদনী রাতে’ ব্যবসা সফল না হলেও পরবর্তী প্রতিটি চলচ্চিত্র তাকে সাফল্যের আসনে বসিয়ে দেয়। শহর ও গ্রাম্য নারী চরিত্রগুলো দক্ষতার সঙ্গে নিজের মধ্যে ধারণ করে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন তিনি। চলচ্চিত্রকারদের মতে, শাবানা ও কবরীর স্থান দখল করে নিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। কিন্তু ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই বিভিন্ন নায়কের সঙ্গে গোপন প্রেমের খবর তার অভিনয় জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই ক্ষতি চূড়ান্ত রূপ লাভ করে ২০১০ সালে চীনা নাগরিক মাইকেল চ্যাংয়ের সঙ্গে তার গোপন প্রেম-বিয়ের খবর ফাঁস হলে। এই ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। চলচ্চিত্র থেকে এখন প্রায় নির্বাসিত শাবনূর।

পপি: ৯০ দশকের মাঝামাঝি সময় মনতাজুর রহমানের আকবরের ‘কুলি’ চলচ্চিত্রে সুশ্রী নায়িকা হিসেবে পাওয়া গেল পপিকে। পরবর্তীতে শাকিল খানের সঙ্গে পপি অভিনয় করেন ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ চলচ্চিত্রে। একসঙ্গে জুটি হয়ে বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন দুজন। কিন্তু এ জুটি প্রথম চলচ্চিত্র থেকেই প্রেমের গুঞ্জনের জন্ম দেন। এক পর্যায়ে পপিকে স্ত্রী হিসেবেও দাবি করেন শাকিল খান। কিন্তু পপির অস্বীকৃতিতে ঘটনা আদালতে গড়ায়। শেষ পর্যন্ত দুজন দুই মেরুতে চলে যান।

রেসি : নবীন নির্মাতা বুলবুল জিলানীর হাত ধরে মিডিয়ায় আসেন রেসি। জিলানীর প্রথম চলচ্চিত্র ‘নীল অাঁচল’-এ অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি। কিন্তু প্রথমে জিলানী, পরে এক মডেল এবং সর্বশেষে ডিপজলের সঙ্গে তার রোমান্সের খবর ছড়িয়ে পড়লে ধীরে ধীরে রেসির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। এক সময় ডিপজলের নির্মাণেই বন্দী হয়ে পড়েন তিনি। ডিপজলের সঙ্গে তার সম্পর্ক যখন তুঙ্গে তখনই তিনি তার এক ফেসবুক বন্ধু চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এতে ডিপজল ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে তার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেন। দীর্ঘদিন নিরুদ্দেশ থাকার পর ২০১১ সালে ওই ফেসবুক বন্ধুকে গোপনে বিয়ে করেন রেসি। এতে তার অভিনয় জীবনের ইতি ঘটে।

সাহারা : নব্বই দশকের শেষ ভাগে সাহারার চলচ্চিত্রে আগমন। প্রথম দিকে ছোট ব্যানারের চলচ্চিত্রে কাজ করলেও ২০০৮ সালে শাকিব খানের সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়ে অভিনয় করেন ‘প্রিয়া আমার প্রিয়া’তে। এটিই ছিল তার অভিনয় জীবনের শুভ সূচনা। চলচ্চিত্রটি বড় মাপের হিট হলে শাকিব-সাহারা জুটি গড়ে ওঠে। চলচ্চিত্রে সাহারার চাহিদা যখন তুঙ্গে তখনই গত বছর ‘ঢাকা টু বোম্বে’ চলচ্চিত্রের প্রযোজক মনিরকে গোপনে বিয়ে করে অভিনয় জীবনে ধস নামান সাহারা। বর্তমানে এই নায়িকা কর্মশূন্য বেকার জীবনযাপন করছেন।

আঁচল : ২০০৮ সালে ‘বেইলী রোড’ চলচ্চিত্রে নায়িকা হয়ে আসেন আঁচল। চলচ্চিত্রে শিল্পী সংকট যখন চরমে তখনই প্রচুর সম্ভাবনা নিয়ে নায়িকা আঁচলের আগমন। ২০১১ সালে ‘ভুল’ চলচ্চিত্রটি সেই সম্ভাবনা আরও এক ধাপ এগিয়ে দেয়। প্রচুর কাজ আসতে থাকে তার হাতে। কিন্তু শুভযাত্রাতেই জুয়েল নামে এক চলচ্চিত্র প্রযোজকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর গোপনে বিয়ে করেন এবং চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে যান অাঁচল। কিন্তু এ বিয়ে বেশি দিন টেকেনি। চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল স্বামী জুয়েলকে তালাক দেন তিনি। কিন্তু ততক্ষণে অভিনয় জীবনের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে তার। নির্মাতাদের আস্থা হারান আঁচল। এখন তার হাতে বেশ কটি চলচ্চিত্র থাকলেও নির্মাতাদের আশঙ্কা আবার হয়তো প্রেম-বিয়েতে জড়িয়ে সবার ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে আঁচল। – See more at: http://eurobdnews.com/entertainment/2014/08/23/67630#sthash.hcyzNDL6.dpuf 

Leave A Reply

Your email address will not be published.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More