উদ্দেশ্য ‘ভালো’ থাকলে কোনো তরুণীর গোসল করা দেখলে দোষ নেই। এতে কোনো পাপ হবে না। এমনই এক আজব ফতোয়া দিয়েছেন মিশরের এক আলেম। উসামা আল-কোয়াইসি নামের ওই আলেম বলেছেন, “আপনার উদ্দেশ্য যদি ভাল বা সৎ হয়, তা হলে গোপনে মেয়েদের গোসল করা দেখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে মেয়েদের নগ্ন শরীর দেখা অন্যায় নয়। এতে কোনো পাপ নেই।”
অবশ্য আজব এ ফতোয়ার সঙ্গে অদ্ভূত কিছু শর্তও দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, গোসল করার দৃশ্য অবশ্যই লুকিয়ে দেখতে হবে। বিয়ের আগে যেন সংশ্লিষ্ট মেয়েটি কোনোভাবেই বিষয়টি জানতে না পারে।বিয়ের আগে জেনে ফেললে আপনার উদ্দেশ্য আর ‘সৎ’ থাকবে না। তবে বিয়ের পর তাকে বিষয়টি জানানো যাবে।
নিজের এমন আজব ফতোয়ার সমর্থনে তিনি মহানবীকেও টেনে এনেছেন। বলেছেন, “একবার তার (নবীজির) এক সঙ্গী এই কাজ করে ধরা পড়েছিলেন। ধরা পড়ার পর তাকে জিজ্ঞাস করা হয়েছিল, আপনি নবীজির সঙ্গী। এমন কাজ করতে লজ্জা করল না? তখন সেই ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে নবীজি উত্তর দিয়েছিলেন, যদি ওই নারীকে বিবাহ করার বাসনা তোমার থাকে, তা হলে এতে অন্যায় নেই। তুমি এ কাজ করতেই পারো।”
উসামা অল-কোয়াইসির এ ফতোয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। খোদ সরকার এতে বিব্রত, বিরক্ত। দেশটির ধর্মমন্ত্রী মহম্মদ জুমা কাছে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছেন। কিসের ভিত্তিতে তিনি এ ফতোয়া দিয়েছেন, জানতে চেয়েছেন তা।
শুধু তাই নয়, ক্ষুব্ধ মন্ত্রী ফতোয়াদাতা কোয়াইসির কাছে প্রশ্ন রেখেছেন, তিনি তার মেয়ের গোসল করার দৃশ্য অন্যরা দেখলে মেনে নেবেন কি-না। মন্ত্রী বলেন, মুসলিম হোক, খ্রিস্টান হোক, সব মিশরীয় ধর্মপ্রাণ, সভ্য এবং বিশ্বস্ত। কোয়াইসির ফতোয়া এসবের পরিপন্থী।
এই অদ্ভূত ফতোয়া নিয়ে বিতর্ক শুরুর পর থেকে অবশ্য সুর পাল্টেছেন উসামা আল-কোয়াইসি। তিনি বলেন, এই ফতোয়া দশ বছর আগে দিয়েছিলাম। তার দাবি, অনলাইনে সক্রিয় চরমপন্থীদের একটি দল এ ফতোয়া এবং এ ধরনের আরও অনেকগুলোকে তার সম্মানহানির উদ্দেশ্যে প্রচার করছে।
মিশরীয় সংবাদমাধ্যম অনটিভিকে তিনি বলেন, আমি যখন চরমপন্থাকে শ্রেয় মনে করতাম তখন এটি এবং এ ধরনের আরও ফতোয়া দিয়েছিলাম। বর্তমানে আমি এসব ফতোয়া পরিত্যক্ত ঘোষণা করছি।