বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমান বলেছেন, সরকারী মদদ পুষ্ট আদালতে কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন বিশ্ব বরেণ্য আলেমে দ্বীন আল্লামা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে যে আমৃত্যু কারাদন্ড দেয়া হয়েছে তা ছাত্রজনতা মেনে নেবেনা। এ রায় অবৈধ সরকারের প্রতিহিংসামূলক রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ। আল্লামা সাঈদীকে মুক্ত না করে ছাত্রজনতা ঘরে ফিরে যাবেনা।
তিনি বুধবার ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত থানা দায়িত্বশীল সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি মাইনউদ্দিন মৃধার সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী বাকী বিল্লাহর পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নাভিদ আনোয়ার ও সাহিত্য সম্পাদক ইয়াসীন আরাফাত।
শিবির সেক্রেটারী জেনারেল বলেন, আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক এবং দেশ বিদেশী ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্রকারীদের অপচেষ্টার অংশ। স্কাইপি ক্যালেঙ্কারী, মন্ত্রী এমপিদের অগ্রিম রায় ঘোষনা, আদালতের সামনে থেকে আল্লামা সাঈদীর সাক্ষীকে অপহরণসহ বিভিন্ন কারণে আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল দেশ-বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ ও প্রত্যাখ্যাত হয়ে ছিল। তবুও সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী ট্রাইবুনাল আল্লাম সাঈদীকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে ছিল। জাতি আশা করেছিল আপিল বিভাগে আল্লামা সাঈদী ন্যায় বিচার পাবেন। কিন্তু লজ্জাজনক ভাবে আদালতও একটি বিশেষ গুষ্টির প্ররোচণার উর্দ্ধে উঠতে পারেনি। ধান চোর, কলা চোর, ট্রলার চোর, যৌতুক আইনে দন্ডপ্রাপ্ত ও বিভিন্নভাবে সরকারী সুযোগ সুবিধা গ্রহণকারী বিতর্কিত ব্যক্তিদের সাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে ১৬ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির না করে তাদের জবানবন্দীকে সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণ করা হয়। যা বিচার বিভাগের ইতিহাসে এক নজিরবীহিন ঘটনা। সরকার পক্ষের সাক্ষীদের সেইফ হাউসে রেখে মিথ্যা সাক্ষী দিতে বাধ্য করা হয়। আল্লামা সাঈদীর বক্তব্য না শুনেই তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানী অন্যায়ভাবে সমাপ্ত করা হয়। সরকার ইচ্ছা মাফিক সাক্ষী প্রদান করলেও সাঈদী সাহেবের পক্ষের সাক্ষীর সংখ্যা সীমিত করা হয়। দেলু শিকদার নামক কুখ্যাত রাজাকারের অপকর্মের দায় আল্লামা সাঈদীর উপর চাপানো হয়। তার পক্ষের সাক্ষীকে ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে অপহরণ করে ভারতে পাচার করা হয়। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের সাব সেক্টর কমান্ডারসহ অনেকেই আল্লামা সাঈদীকে নির্দোষ উল্লেখ করে সাক্ষী দিয়েছে। এর পরও তার উপর এ অবিচার আদালতের উপর জনগণের আস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি হুশিয়ার করে বলেন, অবৈধ আওয়ামী সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বাস্তবায়ন করতে আদালত যদি অবিচার অব্যাহত রাখে তাহলে এর বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া ছাত্রজনতার আর কোন পথ খোলা থাকবেনা। অবিচারকারীদের মনে রাখা উচিৎ আল্লামা সাঈদী শুধু কোন দলের নেতা নন বরং তিনি দেশ বিদেশের কোটি কোটি ইসলাম প্রিয় ছাত্রজনতার হৃদয়ের স্পন্দন। তার প্রতি সামান্য অবিচার ছাত্রজনতা মেনে নিবেনা। যদি রিভিও’র রায়ের মাধ্যমে আল্লামা সাঈদীকে মুক্তি দেয়া না হয় তাহলে ছাত্রজনতাকে আর নিবারণ করা যাবেনা। জীবন দিয়ে হলেও ছাত্রজনতা আল্লামা সাঈদীর মুক্তি আন্দোলন অভ্যাহত রাখবে এবং জালিমের হাত থেকে তাঁকে মুক্ত করেই ঘরে ফিরবে ইনশাআল্লাহ ।