অনৈসলামিক শক্তি মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে ষড় যন্ত্রে লিপ্ত, মুসলমানদের বিশ্বময় ভালবাসা ও মানবিকতা ছড়িয়ে দেয়ার আহবান : খুতবায় সৌদি গ্র্যান্ড মুফতি
মক্কা নগরীর অদূরে আরাফাতের ময়দানে অবস্থানের মধ্য দিয়ে হজের অন্যতম প্রধান কাজটি সম্পাদন করছেন হজযাত্রীরা। ময়দানটি বিশ্ব মুসলমানদের সর্ববৃহৎ সম্মিলন স্থলে পরিণত হয়েছে। হাজিদের আবেগ মেশানো ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধবনিতে প্রকম্পিত পুরো ময়দান। হজের খুতবা শুনে ইমামের পিছনে পরপর জোহর ও আসরের নামাজ জোহরের ওয়াক্তে আদায়ের পর সৌদি আরবে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন হাজিরা। বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবের সময় ব্যবধান তিনঘণ্টা। সুর্যাস্তের পর আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করে মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন হাজিরা। মুলত: ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানের দিনকেই হজের দিন বলা হয়।
তিনি বলেন, ইসলামের মূল ধারা থেকে বিচ্যুত ‘খাওয়ারিজরা’ এখনো ইসলামের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করছে।
গ্র্যান্ড মুফতি বলেন, ইসলাম হচ্ছে সবচেয়ে সহজ ধর্ম। ইসলাম মানবিকতার ধর্ম। এর ভিত্তি সত্য ও ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এটি মানুষের পুরো জীবনের নীতিকে ধারণ করে।
তিনি বলেন, পবিত্র কুরআন মুসলমানদের শ্রেষ্ঠ উম্মাহ হিসেবে ঘোষণা করেছে। কারণ তারা সৎকাজের আদেশ করে এবং অসৎ কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখে। তিনি ইসলামের সঠিক শিক্ষা তুলে ধরা এবং মানুষকে কুরাআন-সুন্নাহর আলোকে পরিচালিত পথ দেখানোর জন্য ইসলামী স্কলারদের প্রতি আহবান জানান। তিনি মুসলমানদের বিশ্বময় ভালবাসা ও মানবিকতা ছড়িয়ে দেয়ারও আহবান জানান।
আব্দুল আজিজ আল আশ শেখ ৩৪ বছর ধরে হজের খুতবা দিয়ে আসছেন। এই ইসলামী স্কলার তার ১৭ বছর বয়সে চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান। সমবেত মুসল্লিরা খুতবা শুনেন এবং জোহরের ওয়াক্তে জোহর ও আসরের নামাজ পর পর আদায় করেন একই ইমামের পিছনে। এরপর হাজিরা সেখানে অবস্থান করে চোখের পানিতে বুক ভিজিয়ে আল্লাহর দরবারে গুনাহ মাফের প্রার্থনা করছেন আল্লাহর সন্তুষ্টি ও করুনা কামনা করছেন কায়মনো বাক্যে। সূর্যাস্তের সাথে সাথেই আরাফাত ময়দান ত্যাগ করবেন হাজিরা।
এদিকে আজ ফজরের নামাজের সময় মক্কায় কাবা ঘরের পুরনো গিলাফ খুলে নতুন গিলাফ লাগানো হয়। প্রতিবছর এই দিন কাবাঘরের গিলাফ পরিবর্তন করা হয়।
আজ থেকে প্রায় ১৪শ’ বছর আগে এই দিনে রাসূল স. আরাফাতের ময়দানে লক্ষাধিক সাহাবিকে সামনে রেখে ভাষণ প্রদান করেন। যা ঐতিহাসিক বিদায় হজের ভাষণ নামে পরিচিত। এই ভাষণে তিনি ইসলামের পরিপূর্ণতা ঘোষণা করাসহ জীবন পরিচালনার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সৌদি আরবের গ্র্যান্ড ইমাম হাজিদের উদ্দেশে খুতবা প্রদান করেন সেই রীতি অনুযায়ীই।
উল্লেখ্য, হজ ইসলামের ফরজ বিধান। সামর্থবান মুসলমানের ওপর জীবনে একবার হজ পালন করা ফরজ। পবিত্র কাবাঘরকে কেন্দ্র করেই মুলত: হজের কার্যক্রম। আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে হযরত ইব্রাহিম আ. ও তার পুত্র ইসমাঈল আ. কাবাঘর পুন:নির্মাণ করেন। হজের অধিকাংশ কাজই হযরত ইব্রাহিম, তাঁর স্ত্রী হাজেরা ও পুত্র ইসমাঈল আ. এর সাথে সম্পর্কিত।