আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গরু-মন্ত্রী। মোটেও ভালো শব্দ নয়, অন্তত যারা বাংলা বোঝেন, তাদের কাছে। তাই প্রথমেই বলে রাখা ভালো, গজমুর্খ, কুপম-ুক বোঝাতে এখানে এই শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে না।
ভারতের রাজস্থান রাজ্যের মন্ত্রিসভায় ‘গরু-মন্ত্রী’ নামে একটি পদ সৃষ্টি করা হয়। একটু শুদ্ধ করে বললে দাঁড়ায় ‘গোপালন-মন্ত্রী’। ‘ভারতের প্রথম গরু-মন্ত্রীকে চিনে নিন’ শিরোনামে টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার সর্বাধিক পঠিত খবরের তালিকায় শুক্রবার প্রতিবেদনটি সবচেয়ে ওপরে ছিল।
কে এই গরু-মন্ত্রী? হ্যাঁ, আয়তনে ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য রাজস্থানের মন্ত্রিসভার সদস্য ওটারাম দেবাসি হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি দেশটির প্রথম গরুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান। গরুর লালনপালন এবং এই গবাদিপশুর সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় ওটারাম দেবাসিকে। তিনি নিজেও আনন্দের সঙ্গে এই দায়িত্ব নেন। নিজেকে তিনি ‘গোপালন মন্ত্রী’ বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন।
সদাহাস্য, সাদাসিদে মানুষ ওটারাম দেবাসি। গরু তার কাছে ঈশ্বর তুল্য। মরুময় রাজস্থানের জনপদে তার গরুভক্তির প্রসংশা রয়েছে। নিজের বাড়িতে ২০-২৫টি গরু পালন করেন তিনি। সংখ্যালঘু রাবারি সম্প্রদায়ের মানুষ ওটারাম দেবাসি। এই সম্প্রদায়ের মধ্যে গরুর প্রতি দারুণ ভক্তি রয়েছে।
২০১৩ সালে রাজস্থানের রাজ্যসভার নির্বাচনের সময় বিজেপি এবং দলটির নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তারা সরকার গঠন করতে পারলে এই রাজ্যে একটি গরুবিষয়ক মন্ত্রণালয় সৃষ্টি করা হবে। হয়ও তাই। ওই সালের ডিসেম্বরে সরকার গঠন করে বিজেপি গরু-মন্ত্রীর পদ সৃষ্টি করে এবং এর দায়িত্ব পান ওটারাম দেবাসি। সম্ভব বিশ্বে তিনিই প্রথম গরু-মন্ত্রী হন। অবশ্য সাংবিধানিক জটিলতায় বেশি টেকেনি গরু মন্ত্রণালয়। পরে তা রূপান্তরিত হয় ‘গোপালন বিভাগে’।
এবার ২০১৪ সালের অক্টোবরে দুগ্ধখামারবিষয়ক মন্ত্রী হন ওটারাম দেবাসি। এই তিন মাসে তিনি গরুর সুরক্ষায় এবং সংরক্ষণে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়ে সাড়া ফেলেছেন সারা ভারতে।
টাইমস অব ইন্ডিয়াকে ওটারাম দেবাসি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে তিনি কেন্দ্রীয় গরু-মন্ত্রীর পদ সৃষ্টির জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া প্রতিটি রাজ্যে গরু-মন্ত্রী থাকা উচিত বলে তিনি মনে করেন।