ঢাকা: শেখ রাব্বি উরফে গুদা রাব্বি। বাড়ি গোপালগঞ্জ। মায়ের সঙ্গে ঢাকায় থাকে। পেশায় ‘টোকাই’। .বিজয় দিবসে ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবরে কথা হয় তার সঙ্গে। জানা যায় তার স্বপ্নের কথা, বিজয় দিবসে তার ভাবনা। পাঠকদের জন্য তার উল্লেখযোগ্য অংশটুকু তুলে ধরা হলো।
আজকে এখানে এতো মানুষ আসছে কেন?
রাব্বি: আইজকা ১৬ ডিসম্বর তাই।
১৬ ডিসেম্বরে কী হয়েছিল?
রাব্বি: যুদ্ধ হইছিল, এই দিনে দেশ স্বাধীন হইছে।
কার সঙ্গে যুদ্ধ হয়েছিল?
রাব্বি: মিলিটারি, পাকিস্তানের মিলিটারিগো সাথে।
যুদ্ধ হয়েছিল তুমি জান কীভাবে?
রাব্বি: খবরে হুনছি। আমাগো টিভি আছে না!
আজকে সরাদিন কি করবে?
রাব্বি: এহানে অনুষ্ঠান হইবো। সারাদিন দেখমু আর হাওয়াই মিঠাই বেচমু।
কয় টাকার হাওয়াই মিঠাই বিক্রি হবে আজ?
রাব্বি: আইজ মানুষ বেশি, চরম বিক্রি হইবো। ৫০০, ১০০০ তো হইবোই।
কি করবা এই টাকা দিয়ে?
রাব্বি: মারে দিমু আর একটা র্যাকেট কিনমু। আর কিছু ট্যাকা জমায়ে একটা সাইকেল কিনমু। সাইকেলের পিছনে বোনেরে বসাইয়া সারাদিন হওায়াই মিঠাই বেচমু।
তুমি বড় হয়ে কী হবে?
রাব্বি: পাইলট হমু। বিমান নিয়ে দেশ-বিদেশ ঘুরমু।
পড়াশোন করো?
রাব্বি: হু। পুষ্পকলি ইশকুলে পড়ি। প্রত্যেকদিন দুপুরে।
তোমাদের সংসার কীভাবে চলে?
রাব্বি: মায়ে মাইনসের বাসায় কাম করে। আমি হাওয়ায় মিঠাই বেচি। আমাগো কোনো কষ্ট নাই। দেনাডা শোধ হইলেই এইহানে আর থাকতাম না। এইহানে পোলাপানের সাথে মিশ্যা খারাপ হইয়া যামু।
ভালো আর খারাপের পার্থক্য কী?
রাব্বি: ভালাডা অনেক ভালা। আর খারাপডা খুব খারাপ।
কথার মাঝখানে হঠাৎ রাব্বি জিজ্ঞেস করে, ‘ভাই আমাগো বাড়ি গোপালগঞ্জ। পড়াশোনা করছি হুনলে শেখ হাসিনায় একটা চাকরি নিয়া দিবো না? আমরা তো হের এলাকার লোক।’ আর কোনো উত্তরের আশা না করে সে বলে, ‘ঠিক আছে ভাই জাইগা। মামা আইছে…’
এইভাবেই রাব্বি জানায় তার স্বপ্নের কথা। দেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন দেখে বিশ্ব ভ্রমণের। হতে চায় ভালো একজন মানুষ। ভালো খারাপের পার্থক্য তার কাছে পরিষ্কার।
সূত্রঃ বাংলামেইল২৪ডটকম